Thank you for trying Sticky AMP!!

মুক্তি পেতে খালেদাকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর

মে দিবস উপলক্ষে ফরিদপুর শ্রমিক লীগের সমাবেশে বক্তব্য দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আলীপুর জনতা ব্যাংক মোড়, ফরিদপুর, ৫ মে। ছবি: আলীমুজ্জামান রনী

নির্বাচনের আগে মুক্তি পেতে হলে দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে ক্ষমা চাইতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আগামী অক্টোবরে সংসদ নির্বাচনের তফসিল এবং ডিসেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও জানান তিনি।

ফরিদপুরে এক শ্রমিক সমাবেশে এসব কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ। শনিবার বিকেলে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মে দিবস পালনের অংশ হিসেবে সমাবেশের আয়োজন করে জেলা শ্রমিক লীগ।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার দুর্নীতির অভিযোগে যে মামলা হয়েছে, সে মামলা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেননি। এ মামলা করা হয়েছে ১০ বছর আগে (২০০৮ সালে) তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে।

বিএনপিকে নালিশ পার্টি হিসেবে আখ্যা দিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, মামলা চলাকালে বিএনপি ২০০ বার হাইকোর্টে নালিশ করেছে, ৫০ বার আপিল করেছে মামলাটি খারিজ করার জন্য। কিন্তু হাইকোর্ট সে কথা শোনেননি।

‘তিনি (খালেদা) যে অপরাধ করেছেন, এ মামলায় তাঁর ১০ বছর সাজা হওয়ার কথা ছিল’ মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ওনার সামাজিক বিবেচনায়, বয়সের কারণে এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, এ বিবেচনা করে কোর্ট সাজা কমিয়ে পাঁচ বছর করেছে। নির্বাচনে আগে খালেদা জিয়ার মুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই দাবি করে তিনি বলেন, বিএনপি দাবি করেছে, তারা খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না—এ যেন মামা বাড়ির আবদার।’

খালেদা জিয়াকে নির্বাচনের আগে মুক্ত করার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, হাইকোর্টে আপিল করতে হবে। হাইকোর্ট বিবেচনা করলে তিনি মুক্তি পাবেন। ‘বিএনপি নেত্রীর সামনে মুক্তির আরেকটি পথ খোলা আছে এবং সেটা ভালো পথ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটা হলো তাঁকে (খালেদা) দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে মাফ চাইতে হবে। বলতে হবে, আমি এতিমের টাকা মাইরা খাইছি, আমারে মাপ কইরা দ্যান। কেননা ক্ষমা করার সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রপতির আছে।’


অক্টোবরে তফসিল, ডিসেম্বরে নির্বাচন
আগামী অক্টোবরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে জানিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হবে আগামী ডিসেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে। সে নির্বাচনে তিনিসহ ফরিদপুরের চারটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়ে শেখ হাসিনাকে উপহার দেওয়া হবে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি বলে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের চর্চা করে না। ভাবতে অবাক লাগে যে দলের জন্ম হয়েছে বন্দুকের মুখে, যাদের জন্ম ক্যান্টনমেন্টে, আর্মি হেডকোয়ার্টারে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোনা আর ভূতের মুখে রাম নাম শোনা একই কথা। মন্ত্রী বলেন, ‘এক নেত্রী চায় ভিক্ষুক হতে, আরেক নেত্রী চায় ভিক্ষা দিতে—এর মধ্যে থেকে আমাদের বেছে নিতে হবে আমরা কী চাই। আমরা কাকে ভোট দেব।’ তিনি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আগামী তিন দফা শেখ হাসিনার সরকারকে নির্বাচিত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

ওই সমাবেশকে ‘নির্বাচনী শ্রমিক জনসভা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আজ থেকে আমি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে দিলাম। আপনারা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে শুরু করে দেন।’

জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি আক্কাস হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার মোহতেসাম হোসেন বাবর, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজ্জাক মোল্লা, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম ফোয়াদ, কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন, জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ মোল্লা, জেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমান আলী প্রমুখ।