সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুর প্রেক্ষাপটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট মিটিং শেষে পৌঁনে ৯টায় উপাচার্য প্রশাসনিক ভবনে অবরুদ্ধ হন। তিন ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তফসিল অনুযায়ী, আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখ নির্ধারিত ছিল।
প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের দাবি, নির্বাচন কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না। এ সময় তাঁরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে, প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা দেন নিরাপত্তাকর্মীরা। তালা ভেঙে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় তলায় ওঠার ফটকে আবার তালা দেন। এতে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করা উপাচার্যসহ কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সব প্যানেলের প্রার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করছেন। ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের পরিবহন সম্পাদক পদপ্রার্থী মুশফিকুর রহিম আন্দোলনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা—‘প্রশাসনের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘উই ওয়ান্ট জকসু’, ‘আই ওয়ান্ট জকসু’, ‘জ্বালো জ্বালো আগুন জ্বালো’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘জবিয়ানদের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘মানি না মানব না, অবৈধ সিদ্ধান্ত মানব না’, ‘এক দুই তিন চার, ভিসি তুই গদি ছাড়’, ‘এক দফা এক দাবি, ভিসি তুই কবে যাবি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেটে সভা অনুষ্ঠিত হয়। মিটিং শেষ হয় পৌঁনে ৯টায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিন্ডিকেট সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজকের জকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ স্থগিত থাকবে। নির্বাচন কমিশন থেকে সংবাদ সম্মেলন করে ভোটের অগ্রগতি নিয়ে জানানো হবে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে ভোট গ্রহণের নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে, পুনরায় সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
বাম জোট–সমর্থিত ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ইভান তাহসিব বলেন, ‘কোনোভাবেই নির্বাচন স্থগিত করা যাবে না। আমরা আমাদের নির্বাচন আদায় করে নিব। এই স্থগিতাদেশ আমরা মানছি না, একজন শিক্ষার্থীও ভোট না দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে যাবে না।’
‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, জকসু একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হলেও জকসু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া উচিত।
স্বতন্ত্র প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী শাহ্ আহমাদ রেজা বলেন, ‘ভিসি স্যারের দপ্তরে আমাদের সকল প্রতিনিধিদের চূড়ান্ত দাবি—নির্বাচন আজকেই শুরু করতে হবে। কমপক্ষে ৭০ শতাংশ ভোট কাস্ট নিশ্চিত করতে হবে। এতে দুই দিন লাগুক, তিন দিন লাগুক, যত দিনই প্রয়োজন হোক, নির্বাচন চলবে।’