‘সারা দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতা বন্ধের দাবিতে’ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় যুবশক্তি। শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে
‘সারা দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতা বন্ধের দাবিতে’ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয় যুবশক্তি। শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে

যুবশক্তির হুঁশিয়ারি

চাঁদাবাজি-সহিংসতা বন্ধ না করলে বিএনপির পরিণতি আ.লীগের মতোই হবে

জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি যদি চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়, তাহলে তাদের ৯০ শতাংশ নেতা-কর্মী আর দল করবেন না। বিএনপি সারা দেশে চাঁদাবাজি ও সহিংসতা বন্ধ না করলে, তাদেরও আওয়ামী লীগের পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেয় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠনটি।

রাজধানীর পুরান ঢাকায় এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ‘সারা দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও সহিংসতা বন্ধের দাবিতে’ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে যুবশক্তি।

সংবাদ সম্মেলনে যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, বিএনপি যদি চাঁদাবাজি বন্ধ করে দেয়, তাহলে দলটির ৯০ শতাংশ নেতা-কর্মী আর বিএনপি করবে না, যুবদল করবে না, ছাত্রদল করবে না, স্বেচ্ছাসেবক দলও করবে না। চাঁদাবাজি বর্তমানে বিএনপির একমাত্র আয়ের উৎস।

তারিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ভয়ে কাতর হয়ে আছে। বিএনপি বর্তমানে সারা দেশে যে ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডে লিপ্ত আছে, এই পরিস্থিতিতে কখনোই আমরা নির্বাচন প্রত্যাশা করতে পারি না।’

যুবশক্তির আহ্বায়ক বলেন, বিএনপিকে সারা দেশে তাদের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে আওয়ামী লীগের পরিণতির মতোই বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনকে পরিণতি ভোগ করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য আপনাদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে? আপনারা লন্ডনে গিয়ে বিএনপির কাছে সারেন্ডার (আত্মসমর্পণ) করে এসেছেন। আপনারা যেভাবে বিএনপির সঙ্গে আপস করেছেন, সেটি জুলাইয়ের রক্তের সঙ্গে বেইমানি।’

জনগণের মাঝে সরকারের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মন্তব্য করে তারিকুল বলেন, ‘আপনারা কি আদৌ বিএনপির সহিংসতার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে সক্ষম? সহিংস কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমরা সরকারের কঠোর পদক্ষেপ চাই। সরকার যেন কোনোভাবেই আপস না করে।’

চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার আহ্বান

সংবাদ সম্মেলনে তারিকুল ইসলাম একটি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। সেখানে বলা হয়, পুরান ঢাকার ঘটনা বিএনপি এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর পরিকল্পিত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির ধারাবাহিকতার অংশ।

এখনই এ ধরনের সহিংসতার লাগাম না টানা গেলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যুবশক্তির আহ্বায়ক। তিনি বলেন, এই বেদনাদায়ক সন্ত্রাস গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার জন্যও ভয়াবহ অশনিসংকেত।

তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, বিএনপির সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজির নেটওয়ার্ক ভেঙে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করুন। নির্বাচনপূর্ব সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি ও জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিন।’

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় যুবশক্তির সদস্যসচিব জাহেদুল ইসলাম জানান, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও সহিংসতার বিরুদ্ধে তাঁরা আজ শনিবার ও আগামীকাল রোববার দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছেন। প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেওয়ার কথাও ভাবছেন। এ ছাড়া আজ রাজধানীর বাড্ডায় যুবশক্তির উদ্যোগে জুলাই যুব সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি রয়েছে।