জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার দুপুরে

ট্রানজিশনাল প্রসেসকে বাধাগ্রস্ত করতে ভয়ংকরভাবে চক্রান্ত চলছে: মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ ‘ট্রানজিশনাল প্রসেস’ পার হচ্ছে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এর মধ্যেই দেখা যাচ্ছে, কিছুসংখ্যক ব্যক্তি-মহল এই ট্রানজিশনাল প্রসেসকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ভয়ংকরভাবে চক্রান্ত করছে।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথাগুলো বলেন। এর আগে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি।

জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামকে চারটি আসন ছেড়ে দেওয়ার কথা জানান মির্জা ফখরুল। এসব আসনে জমিয়তের প্রার্থীদের নামও ঘোষণা করেন তিনি। তাঁরা হলেন সিলেট-৫ আসনে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, নীলফামারী-১ আসনে মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বি–বাড়িয়া-২ আসনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী।

ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে দেশ বেরিয়ে গেলেও এখনো কিছু ব্যক্তি ও মহল এই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে ভয়ংকর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমি আজকে আবারও এই চক্রান্তের মাধ্যমে শহীদ হয়ে যাওয়া ওসমান হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট শাসন, যে শাসন আমাদের সমস্ত মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিল, সেই ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে বেরিয়ে এসে আমরা এখন একটা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। নির্বাচনের পরে একটি নির্বাচিত সরকার ও নির্বাচিত পার্লামেন্ট দেশকে সঠিক পথে এগিয়ে নেবে—এ প্রত্যাশা আমরা সবাই করছি।’

বর্তমান সরকারের ব্যর্থতার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন যে এই পিরিয়ডে সরকারের ব্যর্থতার কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অন্তত এই কয়টা মাস যোগ্যতার পরিচয় দেবে এবং এফিশিয়েন্সির সঙ্গে দেশকে পরিচালনা করবে।’

আসন্ন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য বিএনপির এই নেতা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাই যে তাঁরা তাঁদের কথা রেখেছেন। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের যে পরিবেশ তৈরি করা, সেই পরিবেশ তৈরি করতে তাঁদের আরও সচেতন ও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা দরকার, আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করা দরকার। এই বিষয়গুলোয় ফোকাস আরও বেশি দেবেন এবং নির্বাচন যেন অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, আমরা সেটা আশা করি।’

এর আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, দেশের কল্যাণ, স্থিতিশীলতা ও জন–আস্থার জায়গা থেকে তারা বিএনপির সঙ্গে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী দলই অন্য দলের চেয়ে বেশি আস্থাভাজন।

মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, ‘আমরা বিশ্লেষণ করে, নিজেরা চিন্তাভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা নির্বাচন জাতীয়তাবাদী দলের সঙ্গে করব।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া ও মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লোকমান মাজহারী উপস্থিত ছিলেন।