
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদসহ কয়েকটি দাবিতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ফটকে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
আজ শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আয়োজনে এই কর্মসূচি হয়।
গোপালগঞ্জে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের ওপর হামলা, দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলার অবনতির প্রতিবাদ এবং ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের অফিস খোলার অনুমতি বাতিলের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে।
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, ‘এই ঘটনার মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়েছে, প্রশাসনে এখনো স্বৈরাচারের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে।’
দুর্নীতি ও চাঁদাবাজমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন মাওলানা ইউনুস আহমদ। তিনি বলেন, ‘মোড়ে মোড়ে, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে এখনো চাঁদাবাজি চলছে। আগের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। অনেক জায়গায় দুর্নীতি, বৈষম্য ও চাঁদাবাজির পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। পরিবর্তন আনতে হলে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সংস্কার প্রয়োজন। অন্যথায় আমাদের আগের জায়গায় ফিরে যেতে হবে।’
ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সহকারী সেক্রেটারি ইলিয়াস আহসান, ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের সভাপতি আবুল কাশেম, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুহাম্মদ ইমতিয়াজ প্রমুখ।
জুলাই–আগস্ট গণহত্যার বিচারের দাবিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। জুলাই হত্যাকাণ্ডের জন্য শেখ হাসিনার বিচার এখনো দৃশ্যমান হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ শেখ হাসিনার ফাঁসি চায়। তাই দ্রুত সময়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার রায় জনগণ প্রত্যাশা করে। স্বৈরাচারের দোসররা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। অথচ সরকার তাদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে।’
গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরদের আর দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি তাদের রক্ষা করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের আন্দোলন চলবে।’
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় স্থাপনের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘যেকোনো মূল্যে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন থেকে সরকারকে সরে আসতে বাধ্য করা হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হক মুসা, যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন, ফয়সাল আহমদ। এতে অংশ নেয় খেলাফত যুব মজলিস, শ্রমিক মজলিস ও ছাত্র মজলিস।