বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস

তারেক রহমানের ফেরার ঘোষণার পরপরই একের পর এক সহিংস ঘটনা ইঙ্গিতবাহী: মির্জা আব্বাস

তারেক রহমান দেশে ফেরার ঘোষণা দেওয়ার পর দেশে নানা ধরনের সহিংস ঘটনা পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি বলেছেন, কতিপয় রাজনৈতিক শক্তি পরিকল্পিতভাবে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে এক কর্মিসভায় এ কথা বলেন মির্জা আব্বাস। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনার প্রস্তুতি হিসেবে এ সভা হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরার ঘোষণা আসার পরপরই একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটছে, যা পরিকল্পিত ছকের ইঙ্গিত দেয়। তিনি কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের নেতা দেশে আসছেন, মানে হলো গণতন্ত্র দেশে ফিরে আসছে। তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন। কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।’

দেড় যুগ ধরে যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক রহমান ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন বলে ১৩ ডিসেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। তার এক দিন আগেই ঢাকায় গুলি করা হয় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার মারা যান।

ওসমান হাদির মৃত্যুর পর দেশে বিক্ষোভের মধ্যে প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও ছায়ানট সংস্কৃতি কেন্দ্রে হামলা হয়। ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে স্বার্থান্বেষী একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এই সন্ত্রাসী আক্রমণ চালায় বলে প্রথম আলোর ভাষ্য।

সেই হামলার ঘটনা তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে কতগুলো পত্রিকা অফিস জ্বালিয়ে দিলেন, কতগুলো প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দিলেন—এরা কারা? ওরা কি দেশকে ভালোবাসে? এরা জাতির শত্রু, এরা দেশের শত্রু। এদেরকে থামাতে হবে।

বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করে কতিপয় রাজনৈতিক দল ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে বলে সবাইকে সতর্ক করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘পানি ঘোলা করে পরে মাছ শিকার করার ষড়যন্ত্র চলছে—এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।’ ঢাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির কোনো পরিকল্পনা সফল হতে দেবেন না বলেও হুঁশিয়ার করেন মির্জা আব্বাস।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ঘোষণা রয়েছে। সেই নির্বাচন বানচালেই ষড়যন্ত্র চলছে দাবি করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্রের জবাব আমরা নির্বাচন দিয়েই দেব। এই দেশে নির্বাচন হবে, নির্বাচন হতেই হবে। আমরা আমাদের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবই।’

গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, ‘এত ঘটনা ঘটছে, কোথায় গ্রেপ্তার? কোথায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা? কাউকে মাঠে দেখা যাচ্ছে না। আমরা সরকারপ্রধানের সঙ্গে দেখা করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিলাম, কিন্তু সেই সহযোগিতা গ্রহণ করা হয়নি।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা–৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নবী উল্লাহ নবী, ঢাকা–৬ আসনের প্রার্থী ইশরাক হোসেন, ঢাকা–৭ আসনের প্রার্থী হামিদুর রহমান, ঢাকা–৯ আসনের প্রার্থী হাবিবুর রশিদ, ঢাকা–১০ আসনের প্রার্থী শেখ রবিউল আলম প্রমুখ।