
জাতীয় পার্টি (একাংশ) ও জেপির নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করা নির্বাচনী জোট জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২২ আসনে ১৩২ জন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু আসনে একাধিক প্রার্থী ঘোষণা করে জোটটি।
প্রার্থী ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয় জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের পক্ষ থেকে। আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম পড়ে শোনান জাতীয় পার্টির (একাংশ) নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু।
৯ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি (একাংশ) ও জাতীয় পার্টির (জেপি) নেতৃত্বে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) জোট হয়। জাতীয় পার্টির (একাংশ) আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন অংশ দুটিসহ মোট ১৮টি দল রয়েছে এই জোটে।
এনডিএফের শরিক দলগুলো হলো জাতীয় পার্টির (জাপা) আনিসুল ইসলাম নেতৃত্বাধীন অংশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জেপি), জনতা পার্টি বাংলাদেশ, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (মহসিন রশিদ), জাতীয় ইসলামিক মহাজোট, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টি, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পার্টি, অ্যালায়েন্স ডেমোক্রেটিক পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন, ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় সাংস্কৃতিক জোট, জাসদ (শাহজাহান সিরাজ), ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক পার্টি ও গণ আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান ও জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানান।
প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা উল্লেখ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। একই সঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে তাঁর বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছিল। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, এসব ঘটনা হঠাৎ মব দিয়ে হয়নি। পরিকল্পনা করেই হয়েছে।
নির্বাচনী পরিবেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার’ জন্য নির্বাচনে গেছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। সে জন্যই আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি।...আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনে যেতে হবে। নির্বাচনই একমাত্র পথ, যার মাধ্যমে সরকার পরিবর্তিত হয়।’
গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বলেই ‘নির্লজ্জের মতো’ নির্বাচনে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটের প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় যেতে চাই, নির্বাচন করতে চাই। আপনারা (সরকার) মব বন্ধ করেন।’
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির (একাংশ) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। এ সময় তিনি দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তাঁরা আগামী কয়েক দিন পরিবেশ দেখবেন। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশ এখন অনিরাপদ ও অগ্নিগর্ভ। সঙ্গে চলছে ভয়াবহ মব সন্ত্রাস। এ অবস্থায় সরকার কীভাবে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেবে, তা তাঁদের জানা নেই।
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সারা দেশে মব সন্ত্রাস চলছে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতা ও দেশবরেণ্য সাংবাদিক—কেউ মবের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। কয়েক দিন আগে প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে অগ্নিসংযোগ, নূরুল কবীরের মতো বরেণ্য সাংবাদিককে নাজেহালসহ সব কটি ঘটনা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভয়াবহ রকম নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাতীয় পার্টির (একাংশ) সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, জোটের প্রধান সমন্বয়ক গোলাম সারোয়ার মিলন। তাঁরা দেশের বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
১২২ আসনে ১৩২ প্রার্থী
চট্টগ্রাম-৫: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ
পিরোজপুর-২: আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
পটুয়াখালী-১: এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার
ঢাকা-১০: কাজী ফিরোজ রশিদ
কিশোরগঞ্জ-৩: মুজিবুল হক চুন্নু
মাদারীপুর-৩: শেখ শহিদুল ইসলাম
মানিকগঞ্জ-২: গোলাম সারোয়ার মিলন
ফরিদপুর-২: শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর
বরিশাল-৬: নাসরিন জাহান রতনা, শেখ শাহীন রহমান
ঢাকা-১৩: শফিকুল ইসলাম সেন্টু
নারায়ণগঞ্জ-৩: লিয়াকত হোসেন খোকা
টাঙ্গাইল-৭: জহিরুল ইসলাম জহির
জামালপুর-২: মোস্তফা আল মাহমুদ
সাতক্ষীরা-১: সৈয়দ দিদার বখত
ময়মনসিংহ-৮: ফকরুল ইমাম
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২: জিয়াউল হক মৃধা
নোয়াখালী-১: আবু নাসের অহেদ ফারুক
ঢাকা-১৭: মেজর (অব.) শেখ হাবিবুর রহমান, তপু রায়হান
শেরপুর-১: আবু লায়েস মুন্না, মো. ইলিয়াস উদ্দিন
কুমিল্লা-৮: নুরুল ইসলাম মিলন
বগুড়া-৬: নুরুল ইসলাম ওমর
সিলেট-২: ইয়াহ ইয়া চৌধুরী
নীলফামারী-৩: মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল
কুড়িগ্রাম-২: পনির উদ্দিন আহম্মেদ
ফেনী-১: নাজমা আক্তার
চট্টগ্রাম-১২: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
চট্টগ্রাম-৭: মো. নজরুল ইসলাম, এম এ মঞ্জুর মাস্টার
টাঙ্গাইল-৫: আব্দুস সালাম চাকলাদার
জামালপুর-৪: মামুন অর রশীদ, মো. ইলিয়াস উদ্দিন
চট্টগ্রাম-৯: সোলায়মান আলম শেঠ
নেত্রকোনা-৩: মো. জসিম উদ্দিন ভুইয়া
পাবনা-১: সরদার শাহজাহান
নোয়াখালী-৪: মোবাবর হোসেন আজাদ
বরিশাল-৩: ফকরুল আহসান শাহজাদা
লক্ষ্মীপুর-১: মো. বেলাল হোসেন
ঢাকা-১৬: আমানত হোসেন আমানত
ঢাকা-১৪: জাহাঙ্গীর আলম পাঠান
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩: শাহ জামাল রানা
সাতক্ষীরা-২: মাতলুব হোসেন লিয়ন
পঞ্চগড়-১: মো. আবু সালেক
বরিশাল-১: সেরনিয়াবাদ সেকান্দার আলী
ঠাকুরগাঁও-১: মো. রেজাউর রাজী স্বপন চৌধুরী
নীলফামারী-৪: রাশেদুল ইসলাম
লালমনিরহাট-২: নিগার সুলতানা রানী
রংপুর-৪: আব্দুস সালাম
গাইবান্ধা-১: শফিকুল ইসলাম বাদশাহ মিয়া
জয়পুরহাট-১: আওলাদ হোসেন
রাজশাহী-১: বরুন সরকার
রাজশাহী-৩: অধ্যাপক কামরুজ্জামান
রাজশাহী-৫: আসাদুজ্জামান
রাজশাহী-৬: মো. ইকবাল হোসেন
সিরাজগঞ্জ-৩: আব্দুর রাজ্জাক
সিরাজগঞ্জ-৪: এস এম হামেস রাজু
পাবনা-৬: তরিকুল ইসলাম স্বাধীন
কুষ্টিয়া-৪: সাজ্জাদ হোসেন সেনা
যশোর-৩: মো. শফিকুল ইসলাম
যশোর-৬: আব্দুল লতিফ রানা
মাগুরা-১: সুমন ঘোষ
মাগুরা-২: আলমগীর সিকদার
বাগেরহাট-১: এস এম আল যোবায়ের
বরগুনা-১: মাইনুল হাসান রাসেল
পটুয়াখালী-২: মো. মহসিন হাওলাদার
পটুয়াখালী-৪: মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার
বরিশাল-৪: গাজী সোহেব কবির
ঝালকাঠি-২: এম এ কুদ্দুস খান
ঝালকাঠি-১: ডা. সেলিমা খান
পিরোজপুর-৩: সেকান্দার আলী মুকুল বাদশা
টাঙ্গাইল-৩: মো. আব্দুল হালিম
টাঙ্গাইল-৮: মো. রেজাউল করীম
ঢাকা-৯: এস এম আমিনুল হক সেলিম
ঢাকা-১১: হাজী নাসির উদ্দিন সরকার
ঢাকা-১২: মাসুদুর রহমান মাসুদ
শরিয়তপুর-১: ওয়াহিদুর রহমান ওয়াহিদ
শরিয়তপুর-২: ম. ম ওয়াসিম
শরিয়তপুর-৩: মোখলেসুর রহমান বস্তু
শেরপুর-১: জাহাঙ্গির আহমেদ
ময়মনসিংহ-৪: মো. আলমগীর হোসেন
কুমিল্লা-৩: এইচ এম এন শফিকুর রহমান
কুমিল্লা-১১: জাফর আহমেদ রাজু
ফেনী-২: ফজলে এলাহি সোহাগ মিয়া
নোয়াখালী-৩: মো. শামসুল আলম
কক্সবাজার-১: মো. তারেক
কক্সবাজার-৩: মো. সাইফুল ইসলাম স্বপন
নোয়াখালী-৫: নাসির উদ্দিন বায়জিদ
নোয়াখালী-৬: শেখ মোহা. ফায়িজ উল্লাহ স্বপন
লক্ষ্মীপুর-২: জহিরুল ইসলাম রেজা
চট্টগ্রাম-২: এম এ সালাম
চট্টগ্রাম-৩: মো. নজরুল ইসলাম
কক্সবাজার-৪: শেখ মোহাম্মদ আলী
ঢাকা-১৮ আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, শেখ শহিদুল ইসলাম, সালাহ উদ্দিন মাহমুদ, মো. রুহুল আমিন, শাহ জামিল আমিরুল
কুড়িগ্রাম-৪: মাহিন হোসেন
ঝালকাঠী-২: এনামুল ইসলাম রুবেল, এ আর এম জাফর উল্লাহ চৌধুরী
ঝালকাঠী-১: মো. আসাদুজ্জামান
ঠাকুরগাঁও-৩: শওকত মাহমুদ
কুমিল্লা-৫: মো. আবদুল্লাহ
শেরপুর-১: গোলাম মোর্শেদ রনি
নারায়ণগঞ্জ-৪: কে এম জাহাঙ্গীর
ঝিনাইদহ-২: দীপক কুমার পালিত
চট্টগ্রাম-৯: টি এম জহিরুল হক তুহিন
খুলনা-৪: আফরোজা বেগম
মেহেরপুর-২: মির্জা আজম
খুলনা-১: হুমায়ুন কবির
কুমিল্লা-৫: মুনির হোসেন
চাঁদপুর-৩: শরীফ শাকি
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩: এম আর করিম
টাঙ্গাইল-২: মো. সেলিম রেজা
নওগাঁ-৫: এস এম আশিক বিল্লাহ
নড়াইল-১: এস এম খায়রুজ্জামান
ঢাকা-১৫: আতাউর রহমান বিল্লাহ
গাইবান্ধা-৪: (নাম পরে উল্লেখ করা হবে)
ঢাকা-১০: হারুন অর রশীদ
ফেনী-৩: খোকন চন্দ্র মজুমদার
নওগাঁ-৬: সরদার মোহাম্মদ আব্দুস সত্তার
হবিগঞ্জ-৪: মো. সিরাজুল ইসলাম
টাঙ্গাইল-৮: মো. মোস্তফা কামাল বাদল
বরগুনা-১: মো. জামাল হোসাইন
চট্টগ্রাম-১০: বিলকিস সুলতানা
ঝিনাইদহ-২: মো. মিজানুর রহমান মিজু
চট্টগ্রাম-১৩: জয় প্রকাশ নারায়ণ রক্ষিত
মানিকগঞ্জ-৩: মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিস
বরিশাল-৪: আব্দুল জলিল
শরিয়তপুর-১: নূর মো. মনির
যেসব আসনে দুজন প্রার্থী
ঢাকা-১০, বরিশাল-৬, ঢাকা-১৭, চট্টগ্রাম-৯, শেরপুর-১, শরীয়তপুর-১, ঢাকা-১৮, বরগুনা-১, বরিশাল-৪, ঝালকাঠি-২ ও টাঙ্গাইল–৮।