ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের মিশন স্থাপনের অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি বলেছে, এই কার্যালয় স্থাপনের কোনো ইতিবাচক দিক নেই। কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া দেশের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে।
আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। ১০ জুলাই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ঢাকায় তিন বছরের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের একটি মিশন স্থাপনের বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১১ জুলাই বিক্ষোভ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আজ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় খোলার উদ্দেশ্য, কর্মপরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সহায়ক উপাদান সম্পর্কে দেশবাসীকে বিস্তারিত অবহিত না করে উপদেষ্টা পরিষদের এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া আমাদের বিস্মিত করেছে।’ দলটির মতে, বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় মানবাধিকার পশ্চিমাদের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের মতো একটা সংস্থা, যাদের একচোখা নীতি বিশ্বব্যাপী নিন্দনীয়, যাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের দৃষ্টান্ত রয়েছে, তাদের কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া দেশের জন্য দীর্ঘ মেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে।
বিবৃতিতে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞার মধ্যে সমকামিতার বৈধতা দেওয়া, ট্রান্সজেন্ডারকে স্বীকৃতি দেওয়া, গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে একই বর্গে অন্তর্ভুক্ত করা, যৌনশিক্ষাকে উন্মুক্ত করা এবং মৃত্যুদণ্ডকে রহিত করার মতো বিষয় অন্তর্ভুক্ত। এই বিষয়গুলো বাংলাদেশের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এখন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় এ বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অতি খারাপ বলে প্রতিবেদন করবে, যা বিশ্বে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান, ভ্রমণকে বাধাগ্রস্ত করবে এবং বাংলাদেশে বৈদেশিক পর্যটনকে নিরুৎসাহিত করবে।
ইসলামী আন্দোলনের বিবৃতিতে বলা হয়, সামগ্রিকভাবে এই কার্যালয় স্থাপনের কোনো ইতিবাচক দিক নেই। বরং এর সব মাত্রাতে দেশের ক্ষতি ও বিপদের সম্ভাবনা পরতে পরতে বিরাজমান। তাই কার্যালয় স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।