এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে দলটি
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে দলটি

আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর ‘হামলা’ ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ: মজিবুর রহমান মঞ্জু

বরিশালের মীরগঞ্জে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর বিএনপির নেতা–কর্মীরা হামলা চালিয়েছেন অভিযোগ করে এ ঘটনাকে ফ্যাসিবাদী চরিত্রের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল–পরবর্তী এক সমাবেশে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ দাবি জানান। এর আগে বিক্ষোভ মিছিলটি সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে থেকে শুরু হয়ে প্রেসক্লাব ঘুরে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মীরগঞ্জ সেতুর নির্মাণকাজ পাওয়া ঠিকাদারের কাছে ‘স্থানীয়রা চাঁদা দাবি করেছে’—গণমাধ্যমে এমন বক্তব্য দেওয়ায় এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর চড়াও হন বিএনপির নেতা–কর্মীরা। আজ দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর মীরগঞ্জ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় এবি পার্টি ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কিও হয়।

বিএনপির সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা শুধু বর্বরতাই নয়, মুক্ত রাজনৈতিক চর্চাকে নির্মূল করার অপচেষ্টা। বিএনপির সন্ত্রাসী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে ফুয়াদের ওপর এই হামলা ও হেনস্তার অপচেষ্টা করেছে। এটি দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও অস্থির করে তুলতে পারে।

হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা গণতন্ত্রের ভাষা নয়, এটি ফ্যাসিবাদী মানসিকতার প্রকাশ। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। যে সকল বিএনপি নামধারী সন্ত্রাসীরা হামলার সঙ্গে জড়িত, ইতিমধ্যে তারা চিহ্নিত। তাদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।’

বিএনপিকে ফ্যাসিবাদী রাজনীতি থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এবি পার্টি কোনো ধরনের ভয়ভীতি বা দমনপীড়নে পিছিয়ে যাবে না। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আন্দোলন আরও শক্তিশালী হবে। গণ–অভ্যুত্থানের পর দেশবাসী হানাহানি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের পুরোনো রাজনীতি আর মেনে নেবে না।’

বিক্ষোভ মিছিলে এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব মিনার, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম ও লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যোবায়ের আহমেদ ভূইয়া, আবদুল্লাহ আল মামুন রানা, সানী আবদুল হক, আমিনুল ইসলাম, নাসরীন সুলতানা মিলিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।

এর আগে হামলার নিন্দা জানিয়ে এবি পার্টির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর হামলায় অংশ নেওয়া বিএনপির নেতা–কর্মীদের পরিচয় তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্যসচিব রাজন সিকদার, বাবুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি আতিক আল আমীন, রহমতপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ফেরদৌস এবং কেদারপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাসানুজ্জামান খোকনের প্রত্যক্ষ নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে।

ফুয়াদকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের উদ্বেগ

এদিকে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ এক বিবৃতিতে দলটির মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ফুয়াদ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে তাঁর বিদ্রোহী ভূমিকা জাতিকে পথ দেখিয়েছে। জুলাইয়ের পরও সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনে তাঁর ভূমিকা ঈর্ষণীয়। তাঁকে লাঞ্ছিত করার ঘটনা উদ্বেগজনক।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই হামলা আগামী নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট আশঙ্কাকে আরও ঘনীভূত করেছে। নির্বাচনের সময়ে রাজনৈতিক সমালোচনা গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য। সেই সমালোচনাকে কেন্দ্র করে যদি জাতীয় নেতাদের ওপরে হামলা করা হয়, তাহলে আগামী নির্বাচন উৎসবমুখর হওয়ার আশা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। এ হামলার সঙ্গে স্থানীয় বিএনপির সম্পৃক্ততা স্পষ্ট হয়েছে। জুলাইয়ের পর এ ধরনের নোংরা ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।