পরিবেশ বিষয়ে বৈশ্বিক ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়ছে
>
তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দেশের পোশাক খাতের শীর্ষস্থানীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি ডিবিএল গ্রুপ। পোশাক খাতের বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ডিবিএল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ জব্বার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শুভংকর কর্মকার
প্রথম আলো: সাড়ে তিন দশকের ব্যবসায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে একটি শক্ত ভিত্তিতে দাঁড় করিয়েছে তৈরি পোশাকশিল্প। এই সাফল্যের পেছনের কারণ কী কী?
এম এ জব্বার: ১৯৮৩–৮৪ অর্থবছরে দেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ৩ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছর সেটি বেড়ে হয়েছে ৩ হাজার ৬১ কোটি ডলার। তার মানে, গত ৩৫ বছরে পোশাক রপ্তানি ৯৭১ গুণ বেড়েছে। আবার ১৯৮৪–৮৫ অর্থবছরে ৩৮৪ পোশাক কারখানা ছিল। বর্তমানে তা বেড়ে সাড়ে চার হাজারে দাঁড়িয়েছে। রপ্তানি ও কারখানা বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্মসংস্থান বেড়েছে। পোশাকশিল্পে এখন ৪০ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। পোশাক খাতের এই সাফল্যের পেছনের মূল কারিগর শ্রমিক ও উদ্যোক্তারা। তাঁদের শ্রম ও ঘামেই পোশাক খাতে আমরা এত দূর আসতে পেরেছি।
প্রথম আলো: রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নের ব্যাপক চাপ তৈরি হয়েছে। কোটি কোটি ডলার খরচ করে সংস্কারকাজ করতে হচ্ছে কারখানাগুলোকে। এই বিনিয়োগকে আপনি কতটা ইতিবাচকভাবে দেখছেন?
এম এ জব্বার: রানা প্লাজা ধসের পর উদ্যোক্তারা পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। তাঁরা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছেন। এখনো সেটি চলমান। বিশ্ববাজারে আমাদের পোশাকশিল্পে ভবিষ্যৎ সুসংহত করতে হলে যেকোনো মূল্যে অগ্রগতিকে ধরে রাখতে হবে, যেটি আমরা রানা প্লাজা ধসের পর অর্জন করেছি। সে জন্য সরকারের তদারকি সংস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।
প্রথম আলো: বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে চাইলে কোন কাজগুলো আমাদের করতে হবে?
এম এ জব্বার: পরিবেশ বিষয়ে বৈশ্বিক ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়ছে। ভোক্তারা চাচ্ছেন, তাঁরা যে পোশাক পরিধান করবেন, সেটি পরিবেশবান্ধব কারখানায় উৎপাদন হোক। তাই বিশ্ববাজারে আমাদের অবস্থান দৃঢ করতে হলে পরিবেশবান্ধব উৎপাদনব্যবস্থায় যেতে হবে। ইতিমধ্যে আমাদের অনেক উদ্যোক্তাই পরিবেশবান্ধব কারখানা করেছেন। বিশ্বের সেরা ১০টি পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার মধ্যে আমাদের দেশেই আছে সাতটি।
প্রথম আলো: বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য সামনের দিনগুলোতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ আসছে? সেগুলো মোকাবিলা করার উপায় কী?
এম এ জব্বার: পোশাকের দামের ব্যাপারে অন্য দেশের চেয়ে প্রতিযোগিতায় সক্ষম থাকাই হচ্ছে মূল চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ পোশাক উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শ্রমিকের দক্ষতার বিষয়েও নজর দিতে হবে। আমরা যদি পোশাকশ্রমিকদের পেছনে বিনিয়োগ করি, তাহলে কেবল বিপুল পরিমাণ পোশাকের ব্যবসা করতে পারব তা নয়, সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। কমপ্লায়েন্সের বিষয়টি এখনো বড় ইস্যু হয়ে আছে। কারণ, একেক ক্রেতা কমপ্লায়েন্সের মান একেক রকম। আমি মনে করি, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের (ডিজিটাল রূপান্তর) জন্য আমাদের উদ্যোক্তাদের প্রস্তুতি শুরু করার এখনই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। তাহলেই ভবিষ্যতে যা কিছুই ঘটুক না কেন, আমরা সেটি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকব।
আরও পড়ুন
-
হেলিকপ্টার বিধ্বস্তের স্থানে পৌঁছেছে ইরানি রেড ক্রিসেন্ট
-
ইরানের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি
-
বাংলাদেশ দলে খেলতে হলে জানতে হবে ‘টাইগার্স কোড’
-
ইরানে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার স্থানে তাপের উৎস খুঁজে পেয়েছে তুরস্কের ড্রোন
-
ভারতে রাহুল, রাজনাথ সিং, ওমর আবদুল্লাহর ভাগ্য নির্ধারণ আজ