Thank you for trying Sticky AMP!!

বৃষ্টির আগে আর্চারদের শাস্তি দিলেন বাবর আজম

দারুণ ভঙ্গিতে কাভার ড্রাইভ বাবর আজমের। ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসে চারিদিক থমকে থাকার সময়টাতে আলোচনাটা যেন আরও বেশি হয়েছে। তাঁর সঙ্গে বিরাট কোহলির তুলনা তো সব সময়ই হয়। লকডাউনের সময়ে বাবর আজমকে কেন সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের সারিতে রাখা হবে না, সে নিয়ে আলোচনাটা বেশিই হয়েছে। কখনো সেটি এসেছে পাকিস্তানের কোনো সাবেকের দিক থেকে, কখনো অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের কেউ তা করেছেন।

কেন তাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, করোনা-বিরতির পর ক্রিকেটে ফিরেই সেটি বুঝিয়ে দিলেন বাবর আজম। ম্যানচেস্টারে আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই দারুণ ফিফটি তুলে নিয়েছেন পাকিস্তান ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় ৭১ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত বাবর। বৃষ্টিতে এগিয়ে আনা চা-বিরতিতে পাকিস্তান গেছে ২ উইকেটে ১২১ রান নিয়ে। অন্য প্রান্তে অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওপেনার শান মাসুদ, তাঁর রান ১৩৪ বলে ৪৫। এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে অবশ্য বৃষ্টি থেমেছে। খেলা আর মাঠে গড়াবে কি না সে ব্যাপারে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায় আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল।

বল-রানের হিসেবটাই বোঝায়, কতটা আগ্রাসী ছিলেন বাবর। ইনিংসে এখন পর্যন্ত ৯টি চার মেরেছেন। বলতে গেলে মধ্যাহ্নবিরতির পর ইংলিশ বোলারদের শায়েস্তা করেছেন ২৫ বছর বয়সী পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। আর্চার-অ্যান্ডারসন-ব্রড-বেসদের বোলিং মধ্যাহ্নবিরতির পর হয়েছে কিছুটা এলোমেলো, সেগুলোর পুরো ফায়দা তুলে নিয়েছেন বাবর। তবে শটগুলো হয়েছে দেখার জন্য দুর্দান্ত। কখনো অ্যান্ডারসনের মিডল স্টাম্পের ওপর ফুল লেংথের বলে দারুণ ফ্লিক, তো অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট লেংথ বলে দারুণ পাঞ্চ। কখনো বেস-ব্রডদের চোখধাঁধানো কাভার ড্রাইভ করেছেন তো কখনো ইয়র্কার দেওয়ার চেষ্টায় ব্রডের ফুলটস বল ঠেলে দিয়েছেন বোলারের দিক বরাবর বাউন্ডারিতে।

অথচ মধ্যাহ্নবিরতির আগে এই বাবরই কিছুটা ধুঁকছিলেন। দারুণ এক ডেলিভারিতে বাবরকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছিলেন ক্রিস ওকস, একটু এদিক-ওদিক হলে সেটি হয় বাবরের ব্যাটের কানায় লাগতে পারত, নতুবা লাগতে পারত স্টাম্পেই। কিন্তু বেঁচে গেছেন বাবর।

মধ্যাহ্নবিরতির আগে পাকিস্তানই ধুঁকছিল। কিছুটা গুমোট আকাশের নিচে টস জিতে পাকিস্তান অধিনায়ক আজহার আলী ব্যাটিং নেওয়ার পর দুই ওপেনার শান মাসুদ ও আবিদ আলী মিলে প্রথম ১০ ওভারে ভালোই সামলে নিয়েছেন ইংলিশ দুই উদ্বোধনী পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে। দুজন মিলে ২টি করে চার মেরেছেন এ সময়ে, পাশাপাশি ১-২ করে রান নিয়ে স্ট্রাইক বদলেছেন।

কদিন আগে শেষ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ-ইংল্যান্ড সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে পাকিস্তানের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানের যেটি পার্থক্য করে দেবে বলে মনে হচ্ছিল। মাসুদ-আবিদের ‘স্ট্রাইক রোটেশন’অ্যান্ডারসন-ব্রডদের, বিশেষ করে ব্রডকে, কোনো লেংথে জাঁকিয়ে বসার সুযোগ দিচ্ছিল না। যদিও বেশ কবারই বল ব্যাটের কানায় বাতাস লাগিয়ে গেছে। পাশাপাশি এ দুজন প্রথম ১০ ওভার পার করে দেওয়ায় বাবর আজমকে নতুন বলের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না—এটাও পাকিস্তানের জন্য দারুণ ইঙ্গিত বলেই মনে হচ্ছিল।

কিন্তু ১৪তম আর্চার আসতেই ছন্দপতন। নিজের প্রথম ওভারে বাউন্সার দিয়ে আবিদ আলীকে ধন্দে ফেলে দিয়েছেন ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার। কিন্তু নিজের দ্বিতীয় ওভার—অর্থাৎ ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই স্টাম্প সোজা ফুল লেংথ ডেলিভারিতে উপড়ে গেল আবিদ আলীর (১৬) স্টাম্প। মাঝে বৃষ্টিতে খেলা অল্প কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। ফিরতেই আবার আঘাত। এবার ক্রিস ওকসের বলে এলবিডব্লু আজহার। কোনো রান না করেই ফিরেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।

এরপর বাবর-মাসুদ মিলে দুপুরের খাবারের বিরতি পর্যন্ত আর কিছু হতে দেননি। সেখান থেকে ফিরে বাবর এতই দাপুটে যে, আরেক প্রান্ত আগলে পড়ে থাকা মাসুদ পড়ে গেলেন আড়ালে। অথচ ৭ চারে সাজানো তাঁর ইনিংসটিও কী দারুণ স্থিতি এনে দিয়েছে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে।