
দুটো পথ বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল সাইফ আলী খানের সামনে। মা শর্মিলা ঠাকুরের মতো অভিনয় কিংবা বাবা মনসুর আলী খান পতৌদিকে অনুসরণ করে ক্রিকেটার হওয়া। অভিনয়কেই সহজ মনে হয়েছিল সাইফের কাছে। ক্রিকেটার হননি বলেই ক্রিকেটার বাবার কীর্তি নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে ক্ষেপে ওঠেন এই অভিনেতা।
স্পোর্টসক্রীড়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সাইফ জানালেন তাঁর মুগ্ধতার কথা। আর জানলেন জিওফ্রে বয়কটের ওপর কেন ক্ষেপে গিয়েছিলেন একবার, 'বয়কটকে আমি খুবই পছন্দ করি। কিন্তু একদিন আমাকে খুবই রাগিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বয়কট বলল, “আমি তোমার বাবার ব্যাপারে শুনেছি, কারও পক্ষে এক চোখ দিয়ে টেস্ট খেলা সম্ভব নয়।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, তাঁর কি ধারণা আমার বাবা মিথ্যা বলছেন! জবাবে বয়কট বলল, “হ্যাঁ, আমার ধারণা তোমার বাবা এটা বানিয়ে বলেছে।”'
পতৌদির নবাবের টেস্ট ক্রিকেট খেলা বিস্ময়কর ঘটনা। ১৯৬১ সালে ইংল্যান্ডে এক গাড়ি দূর্ঘটনায় ডান চোখ হারানোর পরও ৪৬টি টেস্ট খেলেছেন। এর মধ্যে ৪০টিতেই দলের অধিনায়কত্ব করেছেন। নবাবের অধীনেই প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথম সিরিজ জিতেছিল ভারত। সবকিছুই করেছেন এক চোখের দৃষ্টিতে। ২০১১ সালে ইহলোক ত্যাগ করলেও এই ক্রিকেটার ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য হয়ে থাকবেন।
প্রিয় বাবাকে নিয়ে বয়কটের এমন কটাক্ষ মানতে পারেননি সাইফ। তাই সরাসরি নবাবের কাছে গিয়েছিলেন, 'আমি আমার বাবাকে এটা বলেছিলাম এবং তিনি খুবই বিরক্ত হয়েছিলেন। বলেছিলেন, “দুই চোখ নিয়ে আমি ছিলাম অবিশ্বাস্য ভালো। এক চোখ নিয়ে আমি শুধু ভালো ছিলাম।'' জীবনে ওই একবারই তাঁর মুখে ঔদ্ধত্য শুনেছি।'
স্পোর্টসক্রীড়ার সঙ্গে কথোপকথনে সাইফ পতৌদির দর্শন নিয়েও কথা বলেছেন। কেন খেলা থামিয়ে দিয়েছিলেন নবাব সেটাও জানিয়েছেন সাইফ, 'তাঁর যদি সফরে যেতে ইচ্ছে না করত, বলে দিতেন ব্যস্ত আছেন। বলতেন এটা শুধুই একটা খেলা এবং ষাটের দশকে এই খেলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলেন কারণ অতিরিক্ত ক্রিকেট খেলা হচ্ছিল।'
ভাগ্যিস, এ সময়টায় জন্মাননি পতৌদি। তা না হলে অতিরিক্ত ক্রিকেটের চাপে ১৪ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা অনেক ছোট হয়ে যেত হয়তো তাঁর।