দৌড়ের সময় খেলোয়াড়দের ফিটনেস দেখছেন বাংলাদেশের ফিটনেস কোচ নাথান কেলি
দৌড়ের সময় খেলোয়াড়দের ফিটনেস দেখছেন বাংলাদেশের ফিটনেস কোচ নাথান কেলি

‘ঘড়ি মিথ্যা বলে না’, তাই ১৬০০ মিটার দৌড়ানোর পরীক্ষা ক্রিকেটারদের

বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এত দিন পরিচিত ছিলেন বিপ টেস্ট ও ইয়ো ইয়ো টেস্টের সঙ্গে। ফিটনেসের এসব পরীক্ষায় পাস করতে হয়েছে। একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে বিরতি দিয়ে দৌড়—তাঁদের জন্য পরীক্ষাটা ছিল এমন।

বছর দেড়েক আগে বাংলাদেশের ফিটনেস কোচের দায়িত্ব নিয়ে আসেন নাথান কেলি। তাঁর অধীন বদলে যায় ফিটনেস পরীক্ষার ধরন। এখন ক্রিকেটাররা দেন ‘টাইম ট্রায়াল’ পরীক্ষা। অ্যাথলেটিক টার্ফে বিরতি ছাড়াই ১৬০০ মিটার দৌড়াতে হয়। এশিয়া কাপের প্রাথমিক স্কোয়াডের ক্রিকেটারদের নিয়ে গত পরশু এই ‘পরীক্ষা’য় ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ড সময় নিয়ে প্রথম হয়েছেন পেসার নাহিদ রানা।

জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষায় তিনটি মানদণ্ড ঠিক করা আছে— ‘এলিট’, ‘কম্পিটেন্ট’ বা ‘সন্তোষজনক’ ও ‘লিমিটেড’। এই মানদণ্ডে সেদিন একমাত্র এলিট ছিলেন নাহিদ, অন্যদের বেশির ভাগ ছিলেন সন্তোজনক পর্যায়ে।

কেলির পরীক্ষার ধরন কেন আলাদা? আজ মিরপুরে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার পর করা হয়েছিল এ প্রশ্ন। কেলির উত্তর, ‘মাঝেমধ্যেই তর্ক হয়, কোনটি সেরা টেস্ট। আমি টাইম ট্রায়াল ব্যবহার করি, কারণ এই পরীক্ষা নেওয়া সহজ। আপনার কোনো যন্ত্রপাতি লাগবে না অ্যাথলেটিক টার্ফে দৌড়ানোর জন্য। ক্রিকেট মাঠের সবুজ ঘাসেও এটা করতে পারবেন।’

মিরপুরে আজ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় দলের ফিটনেস কোচ নাথান কেলি

এর বাইরে আরও একটি কারণ আছে—ঘরোয়া ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা নেওয়াও সহজ। কয় দিন পর শুরু হতে যাওয়া ঘরোয়া মৌসুমের আগে ফিটনেস ক্যাম্পের পর ক্রিকেটারদের পরীক্ষাও হবে এমনই।

‘টাইম ট্রায়াল’কে কেলির বেছে নেওয়ার কারণ আছে আরও। শুনুন তাঁর মুখেই, ‘এটার ফল নিয়ে কম বিতর্ক হয়। যখন আপনি ইয়ো-ইয়ো বা বিপ টেস্ট করান, কখনো কখনো খেলোয়াড়েরা খুব অল্পের জন্য পিছিয়ে যায়, কিন্তু তখন তাদের থামিয়ে দিয়ে বলাটা কঠিন হয়ে যায় যে তোমার টেস্ট শেষ। টাইম ট্রায়ালে ভালো জিনিস হচ্ছে, ঘড়ি মিথ্যা কথা বলে না। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে, যারা ইয়ো ইয়ো বা বিপ টেস্টে পাস করে, তারা টাইম ট্রায়ালেও জেতে। যারা ওখানে (বিপ বা ইয়ো ইয়ো) ভালো না, তারা এখানেও (টাইম ট্রায়াল) না।’

১৬০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হন নাহিদ রানা

তবে ফিটনেসের এই পরীক্ষা যে চূড়ান্ত কিছু নয়, তা–ও মনে করিয়ে দিয়েছেন কেলি। মূলত আলাদা করে নির্দিষ্ট খেলোয়াড়দের ফিটনেসের ক্ষেত্রে শক্তি ও দুর্বলতা বোঝাটাই লক্ষ্য তাঁদের। সে অনুযায়ী ঠিক হয় পরের সময়টাতে কী নিয়ে কাজ করবেন ওই ক্রিকেটার।

কেলি যেমন বলছিলেন, ‘উদাহারণ হিসেবে ধরুন, অনেক খেলোয়াড় হয়তো টাইম ট্রায়ালে ভালো করতে পারেনি। কিন্তু আপনারা দেখছেন না, তারা হয়তো স্ট্রেন্থ ওয়ার্কের ক্ষেত্রে জিমে সেরা। আমরা এটাতেই নজর দিচ্ছি। মূল বিষয় হচ্ছে, এটা বুঝতে পারা কোথায় তারা ভালো করছে, কোন জায়গায় আরও কাজ করতে হবে।’