
ভারত জাতীয় দলে থাকতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে হবে—বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাকে নাকি এমন বার্তা দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই খবর দিয়েছে। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিলেও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখনো খেলছেন কোহলি ও রোহিত।
বিসিসিআইয়ের এই নির্দেশের কারণে কোহলি ও রোহিতকে দেখা যেতে পারে দেশটির ঘরোয়া ওয়ানডে টুর্নামেন্ট বিজয় হাজারে ট্রফিতে। ২৪ নভেম্বর শুরু হবে এই টুর্নামেন্ট। দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের মাঝখানে এটিই একমাত্র একদিনের ঘরোয়া টুর্নামেন্ট।
বোর্ডের সূত্রের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর, রোহিত মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনকে (এমসিএ) জানিয়েছেন, তিনি বিজয় হাজারে ট্রফিতে খেলতে প্রস্তুত। তবে কোহলির অংশগ্রহণ নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা আছে।
৩৭ বছর বয়সী কোহলি ও ৩৮ বছরের রোহিত সর্বশেষ গত মাসে অস্ট্রেলিয়া সফরের ওয়ানডে সিরিজে খেলেন। ৩ ম্যাচের সিরিজে রোহিত প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হলেও সিরিজে একটি ফিফটি ও একটি সেঞ্চুরি করেন। কোহলি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে করেন শূন্য, সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে খেলেন অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস।
বোর্ডের সূত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘বোর্ড এবং টিম ম্যানেজমেন্ট দুজনকেই জানিয়েছে যে যদি তারা ভারতের জন্য খেলতে চায়, তবে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। যেহেতু দুজনই দুটি সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন, তাই ম্যাচ ফিট থাকার জন্য ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতেই হবে।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২৬ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া সৈয়দ মুশতাক আলী টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টেও খেলতে পারেন রোহিত। তিনি এখন মুম্বাইয়ের শারদ পাওয়ার ইনডোর একাডেমিতে অনুশীলন করছেন। বিসিসিআই আশা করছে, লন্ডনে থাকা কোহলিকেও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলতে দেখা যাবে।
গত মাসে নির্বাচক কমিটির চেয়ারম্যান অজিত আগারকারও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা জোর দিয়ে বলেছিলেন। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা বছর দুয়েক আগে থেকেই স্পষ্ট করে বলেছি, যখনই খেলোয়াড়েরা ফ্রি থাকবেন, তাঁদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে হবে। এটাই ফিট ও প্রস্তুত থাকার একমাত্র উপায়।’
গত মৌসুমে রোহিত ও কোহলি দুজনেই রঞ্জিতে একটি করে ম্যাচ খেলেন। ১২ বছর পর কোহলি খেলেন দিল্লির হয়ে, আর ১০ বছর পর রোহিত মুম্বাইয়ের জার্সি গায়ে তোলেন। রোহিত তখন বলেছিলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে আমি নিয়মিত টেস্ট খেলছি। বছরে এত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ভিড়ে ঘরোয়া ম্যাচের সময় মেলে না। একটু বিশ্রাম দরকার হয়।’
আগারকার পরে কোহলি ও রোহিতকে নিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘দুই বছর পর জানি না পরিস্থিতি কেমন হবে। তাঁদের আমরা প্রতি ম্যাচে কোনো পরীক্ষার মুখে ফেলছি না। ২০২৭ এখনো অনেক দূর। তাঁরা এক সংস্করণে খেলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বেশি ম্যাচও পাননি। খেলা শুরু হলে আমরা তাঁদের পারফরম্যান্স দেখব।’ আগারকার যোগ করেন, ‘তাঁরা যা অর্জন করার করেছেন। রান, ট্রফি—সবই আছে। এক সিরিজে রান না পেলে তাঁদের বাদ দেওয়া হবে না, আবার কয়েকটা সেঞ্চুরি করলেই ২০২৭–এ তাঁদের জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাবে, তা–ও নয়। এখন দলের গঠন কীভাবে হচ্ছে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’