মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ
মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ

কারা হবেন নতুন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ

সদ্য বিদায়ী ওয়ানডে অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ কী বলেছেন, তা নিশ্চয়ই জেনে গেছেন। ওয়ানডে দল পরিচালনায় নাজমুলের সাহায্য চেয়ে মিরাজ বলেছেন, দুজন মিলেই দলটাকে ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে চান।

মিরাজের সেই যাত্রা শুরু হবে কাল থেকে, কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে। তার ঠিক আগে দলের অধিনায়কত্বে যেমন নতুনত্ব এসেছে, পুরোনো দল থেকে খসে পড়েছেন দুজন বড় তারকাও। গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ওয়ানডে ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন মুশফিকু রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। মুশফিক এখনো টেস্ট খেললেও মাহমুদউল্লাহ এখন সব সংস্করণেই সাবেক ক্রিকেটার। ওয়ানডে থেকে তাঁদের অবসরের পর এই প্রথম ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল।

তামিম ইকবাল অবসর নিয়েছেন, সাকিব আল হাসান অবসর না নিয়েও ‘অবসরে’, এখন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহও নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজা তো নেই আরও আগে থেকেই। সব মিলিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে সিনিয়র ক্রিকেটারদের যে ‘যাই যাই’ রব, টি–টোয়েন্টির পর ওয়ানডেতেও এখন সেটির আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটে গেছে।

মুশফিক–মাহমুদউল্লাহর যুগপৎ বিদায়ে একটু অনভিজ্ঞ হয়ে পড়বে বাংলাদেশ দলের মিডল অর্ডার। তাঁরা অবসরে চলে গেলেও মিডল অর্ডারে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহর নির্ভরযোগ্য বিকল্প এখনো তৈরি হয়নি বা হলেও তাঁদের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা এখনো প্রমাণের অপেক্ষায়। অভিজ্ঞতা ও দায়িত্ব নিয়ে খেলার মানসিকতা—দুটো মিলেই আসলে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে থাকবেন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ। তাঁদের বিকল্প রাতারাতি হবেও না। তবে যাঁরা আছেন, ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নতুন করে পথ দেখাতে হলে তাঁদেরই হয়ে উঠতে হবে নতুন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ–সাকিব।

তাওহিদ হৃদয় কি মিডল অর্ডারের হাল ধরতে পারবেন

বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন যেমন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহদের দলে মিস করবেন, আবার তাঁর এটাও বিশ্বাস—তাঁদের শূন্যস্থান পূরণ করে দেবেন অন্যরা, ‘এটা ঠিক যে এত দিনের অভিজ্ঞ দুজন খেলোয়াড়ের অভাব রাতারাতি পূরণ সম্ভব নয়। মিডল অর্ডারে তারা নির্ভরতা দিত। তবে এখন যারা আছে, তারাও অনেক দিন ধরে খেলছে। এমন নয় যে একেবারে নতুন। আমি মনে করি, তাদেরও সামর্থ্য আছে মিডল অর্ডারে হাল ধরার।’

বাংলাদেশ দলে নতুন মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ কারা হবেন, বিপদে কারা হাল ধরবেন দলের—সেটির সংক্ষিপ্ত তালিকা করতে গেলে আসবে তাওহিদ হৃদয়ের নাম। অনেক দিন ধরে চারে খেলা হৃদয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে জানিয়ে দিয়েছেন, এই জায়গায় তিনি অনুপযুক্ত নন। তবে ৪ নম্বর জায়গাটি প্রথমত লিটন দাসের, যিনি ছিলেন না চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে। লিটন দলে ফেরায় চারে তাঁর অধিকারই হয়তো বেশি থাকবে। লিটনের নিজেরও পছন্দের জায়গা এটি। সে ক্ষেত্রে হৃদয়কে হয়তো পাঁচেই খেলতে হবে।

ব্যাটিংয়ে চার নম্বর জায়গাটি পছন্দ লিটনের

জাকের আলী, শামীম হোসেনদের নাম আসবে এরপর। কাল অনুশীলনে তাদের প্রত্যেককেই ভিন্ন ভিন্ন স্পিন বোলিংয়ের সামনে বেশি ব্যাটিং করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের চাহিদা মেনে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট মোটামুটি সব ধরনের স্পিনারের জোগানই রেখেছিল নেটে। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ পরবর্তী সময়ে দলকে স্থিতিশীল একটা মিডল অর্ডার এনে দিতে লিটন, হৃদয়, জাকের বা শামীম—প্রত্যেককেই যাঁর যাঁর জায়গায় ভূমিকা রাখতে হবে।