সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস।

পাকিস্তান শক্তি–দুর্বলতা জানলে আমরাও জানি, বললেন লিটন

ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সিরিজ খেলছে ৪ বছর পর। এই সময়ে অনেক কিছুই বদলে গেছে। এখন দুই দলের অধিনায়ক লিটন দাস ও সালমান আগা তখন একাদশেও ছিলেন না। অথচ দুই দলের ক্রিকেটারদের কাছেই মিরপুরে বেশ চেনা—     বিপিএলে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা নিয়মিতই খেলেন এখানে।  

১৬ সদস্যের পাকিস্তানের স্কোয়াডেই ৯ জনেরই বিপিএল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। বাংলাদেশের কয়েকজনও এবার খেলেছেন পাকিস্তান সুপার লিগে। আগামীকাল শুরু সিরিজ সামনে রেখে আজ দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান জানিয়েছেন, বিপিএল খেলা ক্রিকেটারদের অভিজ্ঞতা শুনেই পরিকল্পনা সাজিয়েছেন তাঁরা।

বিকেলে লিটন দাসের সংবাদ সম্মেলনেও এল একই প্রসঙ্গ। বাংলাদেশ অধিনায়ক শুরুতেই বললেন, ‘এটা তো খুব ভালো জিনিস।’

পরে এর সঙ্গে যোগ করেছেন ব্যাখ্যাও, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের মজাই এটা যে, বিশ্বের সব ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলার সুযোগ থাকে, বন্ধুত্ব করার সুযোগ থাকে। আপনি যদি শুধু জাতীয় দলে আটকে থাকেন, তাহলে কিন্তু বাইরের ক্রিকেটার সম্পর্কেও জানবেন না, ড্রেসিং রুম শেয়ার করতে পারবেন না।’

শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভার সঙ্গে উইকেট নিয়ে কথা বলছেন লিটন দাস।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা দুই দলের জন্যই কাজে আসবে বলে মনে করেন লিটন, ‘এটা দুই দিক থেকেই কাজে দেবে। তারা যেমন আমাদের শক্তি-দুর্বলতার জায়গা জানবে, আমরাও তাদের সঙ্গে খেলে, তাদের শক্তি-দুর্বলতা জানি। তাই আমার মনে হয় না, খুব একটা সমস্যা হবে। তবে ইকুয়েলি এটা খুব ভালো দিক।’

পাকিস্তানের বিপক্ষে সবগুলো ম্যাচই বাংলাদেশ খেলবে মিরপুরে। আজ লিটনের সংবাদ সম্মেলনে ঘুরেফিরে এল এখানকার পিচের প্রসঙ্গ। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ব্যাটসম্যানদের জন্য রীতিমতো হয়ে মরণ ফাঁদ উঠেছিল।

স্পিন ফাঁদে ফেল অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ হারিয়েছিল বাংলাদেশ, সিরিজ জিতেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে ওই দুই সিরিজ খেলে অনেক ব্যাটসম্যানেরই ক্যারিয়ারের অর্জন নিচে নেমে গেছে, এমন প্রশ্নে লিটন বলেন, ‘আমিও একমত। (২০২১ সালের নিউ জিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেলে) অনেক ক্রিকেটারেরই ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ার নিচু হয়ে গেছে। আমি যদি বোলার হতাম, হয়তো আমার ক্যারিয়ারও সমৃদ্ধ (বিল্ড-আপ) হতো ওই উইকেটে খেললে (হাসি)।’

পরে যদিও লিটন পরিষ্কার করেছেন, নির্দিষ্ট করে ওই দুটি সিরিজের কথাই বলেছেন তিনি। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান লিটন দাসের। ১৮ ম্যাচ খেলে ১৩০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৫১০ রান। তাঁর ওপরে থাকা মাহমুদউল্লাহ ৩৯ ম্যাচ খেলে ৮০৪ রান করেছেন ১১৯.১১ স্ট্রাইক রেটে। আর সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টিতে ১২০ এর বেশি স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করলেও মিরপুরে ৩৪ ম্যাচে ৫৪৭ রান করেছেন ১০১ স্ট্রাইক রেটে।

বাংলাদেশ টি–টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন দাস।

লিটনও বলছেন, সব সময় ব্যাটসম্যানদের জন্য সমস্যা হয় জিনিসটা এমনও নয়, ‘ব্যাটসম্যানের যে সব সময় সমস্যা হয় তা না। পরিষ্কার করে দিই, নির্দিষ্ট দুইটা সিরিজ ব্যাটসম্যানদের একটু সমস্যা হয়েছে। চ্যালেঞ্জিং থাকে, স্পিনারদের বল স্পিন করে। ব্যাটসম্যানরা রান করে না তা নয়, রানও হয়। পেস বোলাররা সাহায্য পায়। স্পোর্টিং উইকেট এটা।’

মিরপুরে মানিয়ে নিতে কি বাড়তি কিছু করেন? এমন প্রশ্নে লিটনের উত্তর, ‘১০ বছর ধরে তো এভাবেই খেলছি। আর কত সেট করব? পারফর্ম করতে পারছি না, এটা একটা জায়গা আছে, যে ধারাবাহিক পারফর্ম করি না। এটা আমি সব সময় চেষ্টা করছি। কিন্তু অনুশীলনে কখনো কমতি ছিল না, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে না।’