আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। পাকিস্তান সিরিজ অনিশ্চয়তায় তাঁদের একটি বাড়তি ম্যাচ খেলার প্রস্তাব দেয় বিসিবি। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচটি হেরে বাংলাদেশ এখন সিরিজটাই হেরে গেছে।
আজ তৃতীয় টি–টোয়েন্টিতে শুরুতে ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হন। ৮৪ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও অবশ্য শেষ পর্যন্ত ১৬২ রান করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তাও যথেষ্ট হয়নি জেতার জন্য।
৭ উইকেট আর ৫ বল হাতে রেখে সিরিজটা নিজেদের করে নিয়েছে আমিরাত। প্রথম ম্যাচটি হারার পর টানা দুই ম্যাচ জিতল তারা। আয়ারল্যান্ডের পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলুড়ে দেশকে সিরিজ হারালো আমিরাত। বাংলাদেশও দ্বিতীয়বার সিরিজ হেরেছে সহযোগী সদস্য দেশের কাছে, প্রথমবার গত বছর মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬২/৯ (জাকের ৪১, তানজিদ ৪০, হাসান ২৬*, শরীফুল ১৬*; হায়দার ৩/৭, সগীর ২/৩৬)। সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১৯.১ ওভারে ১৬৬/৩ (আলিশান ৬৮*, আসিফ ৪১*, জোহাইন ২৯, শরীফুল ১/২৪, রিশাদ ১/৩২)। ফল: সংযুক্ত আরব আমিরাত ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ অব দ্য ম্যাচ: আলিশান শরাফু। সিরিজ: সংযুক্ত আরব আমিরাত ২–১ ব্যবধানে জয়ী। ম্যান অব দ্য সিরিজ: মুহাম্মদ ওয়াসিম।
শারজায় আজ টি–টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতের মুখোমুখি বাংলাদেশ। সিরিজ আপাতত ১–১ সমতায়।
বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ জিতেছে ২৭ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ১ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয়ে ঘুরে দাঁড়ায় আরব আমিরাত।
সিরিজটি শুরুতে দুই ম্যাচের ছিল। বিসিবির অনুরোধে অতিরিক্ত একটি ম্যাচ যোগ করা হয়েছে। তাতে আজকের ম্যাচটি হয়ে দাঁড়িয়েছে সিরিজ নিষ্পত্তির লড়াই।
পাকিস্তান সফরের প্রস্তুতি হিসেবে আরব আমিরাতের বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। আজ পিসিবি জানিয়েছে, তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজের সূচি। জানতে হলে ক্লিক করুন নিচের লিংকে।
আরব আমিরাত টস জিতে আগে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ আগে ব্যাট করবে বাংলাদেশ।
লিটন দাস (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলী (উইকেটকিপার), শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান, শরীফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ ও পারভেজ হোসেন।
দ্বিতীয় ম্যাচ থেকে একাদশে তিনটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ দল। বাদ পড়েছেন নাজমুল হোসেন, তানভীর ইসলাম ও নাহিদ রানা। দলে ফিরেছেন মেহেদী হাসান, হাসান মাহমুদ ও পারভেজ হোসেন।
বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পিঠের চোটে এই সিরিজে খেলতে পারছেন না সৌম্য সরকার।
মুহাম্সদ ওয়াসিম (অধিনায়ক), আকিফ রাজা, আলিশান শারাফু, রাহুল চোপড়া (উইকেটকিপার), আসিফ খান, ধ্রুব পরাশর, মুহাম্মদ জোহাইব, হায়দার আলী, ইথান ডি’সুজা, মতিউল্লাহ খান ও সগীর খান।
দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে আরব আমিরাতের একাদশে। আর্যাংশু শর্মা ও মুহাম্মদ জাওয়াদউল্লাহর জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন আকিফ রাজা ও ইথান ডি’সুজা।
পেসার আকিফ রাজার করা প্রথম ওভারে ১০ রান তোলেন ওপেনার তানজিদ। পরের ওভারে স্পিনার ধ্রুব পরাশরের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে আউট প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ। লং অফে ক্যাচটি নেন শারাফু। নিজের প্রথম বলেই আউট হলেন পারভেজ।
তিনে নেমেছেন অধিনায়ক লিটন।
বাংলাদেশ: ২ ওভারে ১৩/১।
দ্বিতীয় ম্যাচে ঝোড়ো শুরু করেছিলেন তানজিদ। আজও ছন্দটা ধরে রেখেছেন। ২ ছক্কা ও ১ চারে ৮ বলে ১৭ রানে ব্যাট করছেন।
এ কেমন ব্যাটিং!
আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন প্যাডল সুইপ খেলবেন। বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি। আবেদনের প্রেক্ষিতে লিটনকে এলবিডব্লু আউট দেন আম্পায়ার।
১০ বলে ১৪ রানে ফিরলেন লিটন।
চারে নেমেছেন তাওহিদ হৃদয়।
স্পিনার হায়দার আলীর করা চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে আউট হন লিটন। এক বল পর হৃদয়ও আউট। সেই এলবিডব্লুই হয়েছেন। এগিয়ে এসে হায়দারকে খেলার চেষ্টা করে বল ব্যাটে লাগাতে পারেননি। আবেদনের পর আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নেই এই সিরিজে। ২ বলে ০ রানে আউট হলেন হৃদয়।
পাঁচে নেমেছেন মেহেদী হাসান। অন্য প্রান্তে ৮ বলে ১৬ রানে অপরাজিত তানজিদ।
বাংলাদেশ: ৪ ওভারে ৩১/৩।
এক প্রান্তে একাধিক উইকেট পড়লেও তানজিদের টি–টোয়েন্টি ব্যাটিংয়ের মানসিকতায় কোনো পরিবর্তন নেই।
পরাশরের করা পঞ্চম ওভারের শেষ দুই বলে মিড উইকেট ও স্ট্রেট দিয়ে দুটি দারুণ ছক্কা মারেন এই বাঁহাতি ওপেনার। একটি চারও মেরেছেন। মোট ১৬ রান উঠেছে এই ওভারে।
বাংলাদেশ: ৫ ওভারে ৪৭/৩।
মেহেদীও দাঁড়াতে পারলেন না!
দারুণ এক ডেলিভারিতে মেহেদীকে বোল্ড করলেন হায়দার। ম্যাচে তাঁর তৃতীয় উইকেট!
একটু সরে গিয়ে খেলার চেষ্টা করে বোল্ড হলেন ৯ বলে ২ রান করা মেহেদী।
ছয়ে নেমেছেন জাকের আলী।
বাংলাদেশ: ৬ ওভারে ৪৯/৪।
সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে পেসার আকিফ রাজার বলে বোল্ড তানজিদ। এই ওভারে দুটি চার মারার পর ভালো একটি ডেলিভারিতে আউট হলেন তিনি। ৪ ছক্কা ও ৪ চারে ১৮ বলে ৪০ রানে ফিরলেন তানজিদ।
সাতে নেমেছেন শামীম হোসেন।
বাংলাদেশ: ৭ ওভারে ৫৭/৫।
পাওয়ার প্লের ৬ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ৪৯ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। ১০ ওভার শেষে তাদের স্কোর মোটেও আশাব্যঞ্জক নয়। জাকের ও শামীম মিলে এখনো চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেননি। সপ্তম উইকেটে ২০ বলে অবিচ্ছিন্ন ১২ রানের জুটি গড়েছেন দুজন।
এবার শামীম আউট!
১১তম ওভারে পেসার মতিউল্লাহর প্রথম বলটি ছিল স্টাম্পের বেশ বাইরে ও নিচু হয়েছিল। শামীম কাট করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ১২ বলে ৯ রানে আউট হলেন।
আটে নেমেছেন রিশাদ হোসেন। জাকেরকে নিয়ে বাংলাদেশের আশ্চর্যপতন কি তিনি ঠেকাতে পারবেন?
বাংলাদেশ: ১১ ওভারে ৭১/৭।
শামীম আউট হওয়ার পর দুই বল টিকলেন রিশাদ। ১১তম ওভারেই মতিউল্লাহর চতুর্থ বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরলেন ২ বলে শূন্য রান করা রিশাদ। ৪ বলের মধ্যে ২ উইকেট পেলেন মতিউল্লাহ।
নয়ে নেমেছেন তানজিম।
বাংলাদেশ: ১৩ ওভারে ৭৮/৭।
জাকের ৮ ও তানজিম ৩ রানে অপরাজিত।
আকিফের করা ১৩তম ওভারে তৃতীয় বলের পর নিভে গিয়েছিল শারজা স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট। পুরো মাঠ অন্ধকার। কয়েক মুহূর্ত পরই অবশ্য বিদ্যুৎ আসায় মাঠ আলোকিত।
বাংলাদেশ: ১৫ ওভারে ৯৩/৮।
১৪তম ওভারে সগীর খানের শেষ বলটি স্ট্রেট দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দিলেন তানজিম। ১২ বলে ৬ রানে ফিরলেন এই পেসার।
নতুন ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদ।
৩৪ বল আগে সর্বশেষ বাউন্ডারি পেয়েছে বাংলাদেশ।
আইপিএলে আজ দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। উইকেটটি রোহিত শর্মার।
একটা স্বস্তি বাংলাদেশ পেতেও পারে। এমন আশ্চর্য উইকেট পতনে এক শ হবে কি না, তাই পড়ে গিয়েছিল শঙ্কায়। তা শেষ পর্যন্ত এসেছে, জাকের আলীর ছক্কার পর বাংলাদেশ ৯৯ থেকে পৌঁছে গেছে ১০৫ রানে।
১৬.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান এখন ৮ উইকেটে ১০৬।
বাংলাদেশ: ১৮ ওভারে ১২২/৮।
পাল্টা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন জাকের। নবম উইকেটে হাসান মাহমুদের সঙ্গে ২৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৩৮ রানের জুটি গড়েছেন। এ জুটিতে জাকেরের একার অবদান ১৪ বলে ২৬।
৩২ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত জাকের।
বাংলাদেশ: ১৯ ওভারে ১৩৬/৯।
১৯তম ওভারে সগীরের দ্বিতীয় বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন জাকের। ৩ ছক্কা ও এক চারে ৩৪ বলে ৪১ রানে ফিরলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে জাকের ও হাসানের নবম উইকেটে ২৬ বলে ৪৪ রানের জুটিও ভাঙল।
ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান শরীফুল। হাসান অন্য প্রান্তে ১০ বলে ১০ রানে অপরাজিত।
শেষ ওভারটি শুরু করেছিলেন আমিরাতের অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম। শেষ করেছেন আলিশান শারাফু।
শেষ ওভারে এই দুজন মিলে করেছেন ৮টি বল। এর মধ্যে নো বল দুটি। ওভারের প্রথম ডেলিভারিটিই নো করেন ওয়াসিম। ছক্কা মারেন হাসান। ওয়াসিমের দ্বিতীয় বলেও ছক্কা মারেন হাসান। চতুর্থ বলে চার মারেন শরীফুল। ওভারের শেষ বলটি ‘ডাবল নো’ করেন ওয়াসিম। বোলিং ক্রিজে দাগ পেরিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নিজের দ্বিতীয় বিমারও করেন। অর্থাৎ, বোলিং বাতিল হয় ওয়াসিমের। অগত্যা শেষ বলটি করেন শারাফু।
জঘন্য শুরুর পর শেষটা আসলে ভালো করেছে বাংলাদেশ। ৭ বলে ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন শরীফুল। হাসান ১৫ বলে অপরাজিত ২৬ রানের দারুণ এক ইনিংস খেললেন।
শেষ ৫ ওভারে ৬৯ রান তুলেছে বাংলাদেশ। উইকেট পড়েছে ১টি।
ইনিংসের প্রথম ৫ ওভারে ৪৭ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পরের ৫ ওভারে ২২ রান তুলতে হারায় আরও ২ উইকেট। অর্থাৎ ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬৯/৫!
এরপর ১১তম ওভারেই রিশাদ ও শামীমকে হারিয়ে আরও চাপে পড়ে বাংলাদেশ। ১৪তম ওভারে তানজিমও ফেরার পর মনে হয়েছিল ১২০–১৩০ রানের মধ্যেই গুটিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ। কিন্তু জাকের আলীর ৩৪ বলে ৪১ ও হাসান এবং শরীফুলের অপরাজিত দুটি ইনিংসে লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। ওপেনার তানজিদের ১৮ বলে ৪০ রানের ইনিংসটিও গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে তুলতে পেরেছে ৯ উইকেটে ১৬২ রান।
আরব আমিরাতের হয়ে ৪ ওভারে ৭ রানে ৩ উইকেট নেন হায়দার। ৪১ রানে ২ উইকেট নেন মতিউল্লাহ। ২ উইকেট নেওয়া সগীর দেন ৩৬ রান। ১টি করে উইকেট আকিফ ও ধ্রুবর।
আগের ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মুহাম্মদ ওয়াসিম আজও শুরুটা করেছিলেন ভালো। ৬ বলে দুটি বাউন্ডারি এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে। যদিও ৯ রান করার পর শরিফুল ইসলামের বলে তানজিদ হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে গেছেন আরব আমিরাত অধিনায়ক।
২ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ১৬ রান করেছে আমিরাত।
পাওয়ার প্লের শেষ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ হলো আমিরাতের রান। ১৬৩ রান তাড়ায় এখনও ভালোভাবেই পাল্লা দিচ্ছে তারা। বাংলাদেশ নিতে পেরেছে এক উইকেট।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: ৮ ওভারে ৬১/২।
অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলেই উইকেট নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। বোল্ড করেছেন আরব আমিরাত ওপেনার মোহাম্মদ জোহাইবকে (২৩ বলে ২৯ রান)। ১২ ওভারে ১০২ রান দরকার আরব আমিরাতের।
সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১১ ওভারে ৮৬/৩, লক্ষ্য ১৬৩।
দশম ওভার শেষ পানি পানের বিরতি ছিল। আবার খেলা শুরুর পর প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। তানজিমের বলে মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন রাহুল চোপড়া। অবশ্য এই ওভারের শেষ বলে তানজিমকে ছক্কা মেরেছেন আলিশান শরাফু।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ১৩ ওভারে ১০০/৩, লক্ষ্য ১৬৩।
১৩তম ওভারের শেষ বলে ১০০ পূর্ণ করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ম্যাচে বাকি ৪২ বল, আমিরাতের দরকার ৬৩ রান। বাংলাদেশের দরকার এর কমে আটকানো।
ম্যাচটা এখন আরব আমিরাতের নাগালে। ৩ ওভারে দরকার ২৬ রান। হাতে এখনও ৭ উইকেট।
প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়ার পর টানা দুই ম্যাচ জিতে সিরিজটা কি নিজেদের করে নেবে স্বাগতিকরা?