
ওভারের প্রথম বল, দ্রুত রান তোলার তাড়া ছিল না। তবে সালমান আগা ভাবলেন জয় যেহেতু নাগালে, সময়ক্ষেপণের কী দরকার! বাঁহাতি স্পিনার বিওর্ন ফর্টুইনের প্রথম বলেই তাই সালমান উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এলেন। কাভার দিয়ে বল পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারিতে।
এই বাউন্ডারিতেই ছোঁয়া হয়ে গেল লক্ষ্য। দক্ষিণ আফ্রিকার করা ১৪৩ রান পাকিস্তান পেরিয়ে গেল ৭ উইকেট আর ১৪৯ বল হাতে রেখেই। আবরার আহমেদ ও সাইম আইয়ুবের নৈপুণ্যে পাওয়া যে জয় পাকিস্তানকে এনে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজজয়ও। পাকিস্তানের ওয়ানডে ইতিহাসে ঘরের মাঠে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জয় এই প্রথম।
ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়ামে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিততে পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল কমই। রান তাড়ার দ্বিতীয় বলে ফখর জামান শূন্য রানে ফিরলেও সাইম আর বাবর আজমের জুটি পাকিস্তানকে রেখেছে জয়ের পথেই।
দ্বিতীয় উইকেটে দুজন ৬৫ রানের জুটি ভাঙে বাবরের রানআউটে। সাবেক অধিনায়ক ৩২ বলে করে যান ২৭ রান।
এরপর আরেক সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়েও সাইম গড়েন ৬৫ রানের জুটি। এই জুটি ভাঙে ফর্টুইনের বলে সাইমের লং অনে ক্যাচ হওয়ার মাধ্যমে। আউট হওয়ার আগে সাইম ১১ চার ও ১ ছক্কায় করে যান ৭০ বলে ৭৭ রান। জয়ের আনুষ্ঠানিকতার বাকি কাজ সারেন রিজওয়ান-সালমান।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকা উদ্বোধনী জুটিতেই পেয়েছিল ৭২ রান। কুইন্টন ডি কক ও লুহান-ড্রে প্রিটোরিয়াসের জুটিটি ভাঙেন সালমান। একই বোলার দুই ওভার পরে নেন টনি ডি জর্জির উইকেটে।
তবে প্রোটিয়া ইনিংসে বড় ভাঙন লাগে ২ উইকেটে ১০৬ রান তোলার পর। মাত্র ৩৭ রানের মধ্যে শেষ ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। এর মধ্যে ৪ উইকেটই নেন লেগ স্পিনার আবরার। ১০ ওভারে ২৭ রানে ৪ উইকেট ওয়ানডেতে তাঁর সেরা বোলিং। ২টি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি আর মোহাম্মদ নেওয়াজ।
বোলিংয়ের এই নৈপূণ্যেই ব্যাটসম্যানদের পথ করে দেয় সহজ জয়ের। যে জয়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে প্রথম সিরিজও জিতল পাকিস্তান। এবারের আগে ২০০৩-০৪ ও ২০০৭-০৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা দল পাকিস্তানে খেলে সিরিজ জিতেছিল। দুটি সিরিজই ছিল ৫ ম্যাচের।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩৭.৫ ওভারে ১৪৩ (ডি কক ৫৩, প্রিটোরিয়াস ৩৯, ব্রিটজকে ১৬; আবরার ৪/২৭, শাহিন ২/১৮, সালমান ২/১৮)।
পাকিস্তান: ২৫.১ ওভারে ১৪৪/৩ (সাইম ৭৭, রিজওয়ান ৩২*, বাবর ২৭; বার্গার ১/২৯)।
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আবরার আহমেদ।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ২-১ ব্যবধানে জয়ী। ম্যান অব দ্য সিরিজ: কুইন্টন ডি কক।