স্থানীয় খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৫০ লাখ টাকা, নিলামের প্রতি ডাকে মূল্য বাড়ানো যাবে ৫ লাখ টাকা করে। বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ‘এ’ ক্যাটাগরির ভিত্তিমূল্য ৩৫ হাজার ডলার। এই ক্যাটাগরিতে প্রতি ডাকে মূল্য বাড়ানো যাবে ৫ হাজার ডলার করে। নিলামে স্থানীয় ক্রিকেটারদের ক্যাটাগরি থাকবে ৬টি ও বিদেশি ক্রিকেটারদের ক্যাটাগরি ৫টি।
২০২৬ বিপিএলে খেলোয়াড় বেচাকেনায় আবারও ফিরছে নিলামপদ্ধতি। বিভিন্ন শ্রেণিতে খেলোয়াড়দের ভিত্তিমূল্যসহ নিলামের নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। বিপিএলের পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে এই নীতিমালা পাঠানো হয়েছে, যেটি এসেছে প্রথম আলোর হাতেও। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর পর্যবেক্ষণ ও অনুমোদনের পর নিলামের নীতিমালা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। তার আগে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের কোনো মতামত থাকলে তা আগামী ২১ নভেম্বরের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি দল নিলামের আগে সরাসরি সর্বোচ্চ দুজন বাংলাদেশি (এ ও বি ক্যাটাগরি) খেলোয়াড় এবং কমপক্ষে এক থেকে দুজন বিদেশি খেলোয়াড় দলে নিতে পারবে। এসব সাইনিং অবশ্যই বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমোদনসাপেক্ষ হবে।
বিপিএলের খেলোয়াড় নিলাম হবে দুই ধাপে। প্রথম ধাপে স্থানীয় ক্রিকেটারদের নিলাম ও দ্বিতীয় ধাপে বিদেশি ক্রিকেটারদের নিলাম। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নিলাম থেকে অন্তত ১৩ জন স্থানীয় খেলোয়াড় নিতে হবে। নিলামের বাইরে সরাসরি সই করানো যাবে সর্বাধিক দুজন খেলোয়াড়কে। প্রতিটি দল সর্বোচ্চ ১৬ জন স্থানীয় খেলোয়াড় নিবন্ধন করতে পারবে। স্থানীয় খেলোয়াড়ের জন্য একটি দলের সর্বোচ্চ বাজেট ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তবে সরাসরি সাইনিং করা দুজন ক্রিকেটারের পারিশ্রমিক এর বাইরে থাকবে।
প্রতিটি দল যত ইচ্ছা বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধন করাতে পারবে। তবে এক ম্যাচে বিদেশি খেলানো যাবে কমপক্ষে দুজন ও সর্বোচ্চ চারজন। নিলাম থেকে কিনতে হবে অন্তত দুজন বিদেশি খেলোয়াড়।
বিদেশি খেলোয়াড়দের জন্য দল প্রতি সর্বোচ্চ দলীয় বাজেট নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। নিলামের আগে সর্বাধিক দুজন খেলোয়াড়কে সরাসরি দলে নেওয়া যাবে। নিলামে কোনো দল নির্ধারিত বাজেট/ধাপের বাইরে মূল্য হাঁকাতে পারবে না।
খেলোয়াড়, কোচ ও কর্মকর্তা মিলিয়ে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বোচ্চ ২২ সদস্যের দল (রিজার্ভসহ) রাখতে পারবে। ম্যানেজার, কোচ, বিশ্লেষকসহ দলীয় কর্মকর্তা নিবন্ধন করা যাবে সর্বাধিক ১২ জন।
ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে নিলামে বিক্রি হওয়া খেলোয়াড়দের অর্থ দিতে হবে তিনটি ধাপে—
প্রথম কিস্তি: চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ২৫ শতাংশ
দ্বিতীয় কিস্তি: দলের শেষ লিগ ম্যাচের আগে ৫০ শতাংশ
তৃতীয় কিস্তি: টুর্নামেন্ট শেষে ৩০ দিনের মধ্যে বাকি ২৫ শতাংশ
সব অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দিতে হবে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নিয়ম অনুযায়ী কর কাটা হবে।
চূড়ান্ত দলের তালিকা নিলাম শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের কাছে জমা দিতে হবে।
সব খেলোয়াড়ের চুক্তি হবে বিসিবির নির্ধারিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিপত্রে।
নিলামসংক্রান্ত কোনো নিয়ম লঙ্ঘন, প্রভাব খাটানো বা অনিয়ম করলে বিড বাতিল, অর্থদণ্ড ও ফ্র্যাঞ্চাইজি স্থগিত বা বাতিলের মতো শাস্তি হতে পারে। সব ধরনের অভিযোগ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল তদন্ত করবে এবং তাদের সিদ্ধান্তই হবে চূড়ান্ত।
সব খেলোয়াড়কে দলে যোগ দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফিটনেস টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। স্থানীয় ও বিদেশি ক্রিকেটারদের ভিন্ন ভিন্ন ফর্মে নিবন্ধন করতে হবে অনলাইনে।
প্রতিটি ম্যাচের অন্তত ৪ ঘণ্টা আগে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড বিসিবির ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের নির্ধারিত ই–মেইলে পাঠাতে হবে।
২০২৬ সালে বিপিএলের দ্বাদশ আসর হবে নতুন মালিকানা চক্রের প্রথম মৌসুম। ১৩তম আসর থেকে প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজি সর্বাধিক ২ জন স্থানীয় ও ২ জন বিদেশি খেলোয়াড় ধরে রাখতে পারবে।
নতুন দলগুলোও একই নিয়মে নিলামের আগে খেলোয়াড় সই করাতে পারবে।
বিপিএলের সব ধরনের আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী।