
আজ ডন ব্র্যাডম্যানের ১১৭তম জন্মদিন। ১৯০৮ সালের ২৭ আগস্ট তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন।
মার্ক টোয়েনের ওই কথাটা এখন প্রায় প্রবাদের মতো হয়ে গেছে। পরিসংখ্যান তিন প্রকার—মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা ও পরিসংখ্যান।
যে খেলাতে পরিসংখ্যান নিয়ে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি চর্চা, সেই ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও কথাটা কখনো কখনো সত্যি। যেখানে পরিসংখ্যান যেমন অনেক কিছু বলে, আবার ধোঁকাও দেয়। টেস্টে ৮ সেঞ্চুরি ও ৩৯.০৪ ব্যাটিং গড় দিয়ে ভিক্টর ট্রাম্পারকে বিচার করতে চাইলেই যেমন আপনি ক্রিকেট–মূর্খ বলে বিবেচিত হবেন।
ডন ব্র্যাডম্যানের ক্ষেত্রে এ সমস্যা নেই। ব্র্যাডম্যান কী ছিলেন, তা বুঝতে পরিসংখ্যানই যথেষ্ট। ব্যাটিংয়ের মতো ভাগ্যনির্ভর অনিশ্চিত একটা কাজকে এমনই দুই আর দুইয়ে চারের মতো বানিয়ে ফেলেছিলেন যে ভাবলে স্তম্ভিত হয়ে যেতে হয়। ৩৩৮টি প্রথম শ্রেণির ইনিংসের ২২১টিতে সেঞ্চুরি পাননি। সেই ইনিংসগুলোর গড় ৫৮.২০! যা জ্যাক হবস, ওয়ালি হ্যামন্ড, রণজিৎ সিংজি, সিবি ফ্রাই, গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডস ও জিওফ বয়কটের মতো গ্রেটদের সেঞ্চুরিসহ ব্যাটিং গড়ের চেয়েও বেশি!
১১৭টি ইনিংসে সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি করেই যদি আউট হয়ে যেতেন, গড় হতো ৬১.১৪। যেহেতু এর অনেকগুলো ডাবল ও ট্রিপল হয়েছে, একটি কোয়াড্রপলও, গড় দাঁড়িয়েছে ৯৫.১৪।
ব্র্যাডম্যান-মাহাত্ম্য বোঝাতে এমন সংখ্যা আরও অনেকই আছে। এত সব সংখ্যার ভিড়েও শেষ পর্যন্ত ব্র্যাডম্যানের আসল পরিচয় অবশ্যই ৯৯.৯৪। আশ্চর্যই বলতে হবে, দশমিক-টশমিকসংবলিত জটিল এই সংখ্যাটাই মুখে মুখে ফিরতে ফিরতে পরিণত ক্রিকেটের সবচেয়ে মুখস্থ অঙ্কে। যেটি বলামাত্র বোঝা হয়ে যায় কার কথা হচ্ছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ডন ব্র্যাডম্যানের আর খেলারই কথা ছিল না। তারপরও তিনি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একটা কারণেই। যুদ্ধের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন ক্রিকেট-বিশ্বকে একটু আলোকিত করার দায় বোধ করেছিলেন বলে।
টেস্টে ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড় এমনই এক বিস্ময় যে দুঃসাহসী কল্পনাও যেটিকে ছোঁয়ার সাহস পায় না। অস্পর্শনীয় সুউচ্চ এক বেদিতে এটিকে বসিয়ে রেখে এর কতটা কাছাকাছি যাওয়া যায়, যুগে যুগে ব্যাটসম্যানরা সে চেষ্টাই শুধু করে গেছেন।
একটা কাষ্ঠদণ্ড হাতে পারফেকশনের এ এক এমন উদাহরণ, যা ছাড়িয়ে গেছে ক্রিকেটের সীমানা। বিখ্যাত অঙ্কবিদ টমাস হার্ডি ‘ব্র্যাডম্যান ক্লাস’ বলে একটা টার্ম বের করেছিলেন। যেটি ছিল মানবীয় অন্য সব কীর্তির মানদণ্ড। গ্যালিলিও, নিউটন, আইনস্টাইনরা যেমন স্বীকৃতি পেয়েছিলেন ‘ব্র্যাডম্যান ক্লাস’ বলে!
৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়ের মতো ইংল্যান্ডে প্রথম সফরে ব্র্যাডম্যানের দুটি রেকর্ডও একই রকম অমরত্ব পেয়ে গেছে। এক সিরিজে সর্বোচ্চ রানের (৫ টেস্টে ৯৭৪) রেকর্ডের চেয়েও হয়তো বেশি বিস্ময়কর লিডসে এক দিনে ৩০৯। লাঞ্চের সময় ১০৫ রানে অপরাজিত, চা–বিরতির সময় ২২০—টেস্টের প্রথম দিনের দুই সেশনেই সেঞ্চুরি। দিন শেষে ৩০৯ রানে অপরাজিত ব্র্যাডম্যান নাকি বলেছিলেন, ‘নাইস ওয়ার্ক আউট ফর টুমরো।’
পরের দিন অবশ্য ৩৩৪ করে আউট হয়ে যান। অ্যান্ডি স্যান্ডহামের ৩২৫-কে অতীত করে দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ স্কোরের নতুন বিশ্ব রেকর্ড। ইংল্যান্ড যাওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ায় শেফিল্ড শিল্ডে ৪৫২ করে গেছেন। টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের দুটি রেকর্ডই তখন ব্র্যাডম্যানের। একসঙ্গে এই দুটি রেকর্ডের মালিক আর একজনই হতে পেরেছেন। তাঁর নাম ব্রায়ান লারা।
১৯৩০ ইংল্যান্ড সফরে ওই ধ্বংসযজ্ঞ দেখার পর শুধু ব্র্যাডম্যানকে ঠেকাতেই বডিলাইন বোলিংয়ের জন্ম। লেগের দিকটা ফিল্ডারে জনাকীর্ণ করে ব্যাটসম্যানদের শরীর তাক করে ক্রমাগত আক্রমণ। হ্যারল্ড লারউড নামে আগুনে গোলা হাতে থাকায় ডগলাস জার্ডিন সেই কৌশলে সফলও হন। ওই একটা সিরিজেই ব্র্যাডম্যান ‘ব্যর্থ’। ব্যর্থ; কারণ, তাঁর গড় নেমে এসেছিল ৫৬.৫৭-তে। যে গড় অন্য সব ব্যাটসম্যানকে গ্রেটনেসের স্বীকৃতি দেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ের আটটি বছর ঝরে গেছে। যুদ্ধের পর আর খেলারই কথা ছিল না। শরীর অনেক দিনই বেগড়বাই করছিল, ডাক্তাররাও নিষেধ করেছিলেন। তারপরও ব্র্যাডম্যান খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একটা কারণেই। যুদ্ধের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন ক্রিকেট-বিশ্বকে একটু আলোকিত করার দায় বোধ করেছিলেন বলে।
আট বছর বিরতির পর ৩৮ বছর বয়সে ফিরে জীবনের শেষ তিনটি সিরিজে তাঁর ব্যাটিং গড় ৯৭.১৪, ১৭৮.৭৫ ও ৭২.৫৭! যুদ্ধের পর ১৫ টেস্টে ৮টি সেঞ্চুরি! যত ভাবা যায়, বিস্ময় ততই ছেয়ে ফেলে। এ কীভাবে সম্ভব! হাজারো ব্র্যাডম্যান-বন্দনার মধ্যে ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেনিস কম্পটনই বোধ হয় বলেছেন আসল কথাটা, ‘ব্র্যাডম্যান ওয়াজ আ প্লেয়ার হু অ্যাপিয়ারস নট জাস্ট ওয়ানস ইন আ লাইফটাইম, ওয়ানস ইন দ্য লাইফ অব আ গেম।’
শুধু ব্যাটসম্যান ব্র্যাডম্যানই নন, মানুষ ব্র্যাডম্যানও যেন বিরল এক প্রজাতি। আত্মজীবনীতে জীবনের খুঁটিনাটি এত গুছিয়ে লিখেছেন যে অবাক হতে হয়। সেটি তো ইন্টারনেটের যুগ নয় যে কি-বোর্ডে চাপ দিলেই সব বেরিয়ে আসবে।
সেই বইয়ে ‘ক্রিটিকস’ নামে একটি অধ্যায় আছে। কবে কোন পত্রিকায় কী লেখা হয়েছিল, কিছুদিনের ব্যবধানে একই পরিস্থিতিতে একই সাংবাদিকের লেখায় কেমন পরস্পর বিরোধিতার ছাপ সব মনে রেখেছেন। ধরে ধরে জবাব দিয়েছেন ‘অন্যায়’ সমালোচনার।
রোনাল্ড পেরির পাণ্ডুলিপিতে ব্র্যাডম্যানের মাত্র ২২ বলে করা বিখ্যাত সেই সেঞ্চুরির বল বাই বল বর্ণনায় চার-ছয়ের ক্রমপর্যায়ে একটা ভুল ছিল। ব্র্যাডম্যান সেটিও ঠিক করে দিলেন। কী বলে ব্যাখ্যা করবেন এই লোকটাকে!
পারফেকশনিস্টের চূড়ান্ত। কোথাও কিছু বলতে হলে বাড়িতে গ্রামোফোনে রেকর্ড করে রিহার্সাল দিয়ে নিতেন। ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডে শেষ সফরের জাহাজ-যাত্রায় লাঞ্চের আগে কেউ তাঁর দেখা পায়নি। নৈশভোজ-উত্তর বক্তব্য দেওয়াটা তখন অধিনায়কের কার্যবিবরণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল। দুপুর পর্যন্ত ব্র্যাডম্যান ব্যস্ত থেকেছেন সেসবের খসড়া তৈরির কাজে। প্রতিদিন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা ভালোবাসা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন, সঙ্গে হয়তো অটোগ্রাফের আবদার। জীবনের শেষ প্রান্তে অসুস্থতা কাবু করে ফেলার আগপর্যন্ত নিজ হাতে লিখে প্রতিটি চিঠির উত্তর দিয়েছেন।
প্রখর স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশীল মনের কাছে বার্ধক্যকে পর্যন্ত পরাজয় মানতে হয়েছে। উদাহরণ অনেকই আছে। এর একটি দিই। রোনাল্ড পেরি নামটা হয়তো শুনে থাকবেন। ব্র্যাডম্যানের মৃত্যুর পর ‘ব্র্যাডম্যানস ইলেভেন’ নামে বহুল আলোচিত বইয়ের লেখক। ব্র্যাডম্যানের সবচেয়ে বিখ্যাত জীবনীটাও তাঁরই লেখা। এই বইয়ের জন্যই ১৯৯৫ সালে ব্র্যাডম্যানের বেশ কয়েকটি ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন পেরি।
প্রথম ইন্টারভিউটি নিতে গিয়েছিলেন ভয়ে ভয়ে। সাত ঘণ্টা স্থায়ী ওই ইন্টারভিউর শেষ দিকে ৮৭ বছর বয়সী বৃদ্ধের ওপর অত্যাচার হয়ে যাচ্ছে কি না, ভেবে একটু অস্বস্তি বোধ করছিলেন। বেরিয়ে আসেন বিস্মিত হয়ে এবং পরে বলেন, সাত ঘণ্টায় ব্র্যাডম্যান একটিও অপ্রাসঙ্গিক শব্দ বলেননি। মনঃসংযোগের এমন ক্ষমতা তিনি আর কারও মধ্যে দেখেননি।
আসল গল্প এটা নয়। আগেই বলা ছিল, এটা হবে আনঅথরাইজড জীবনী। মানে জীবনীকারের যা ঠিক মনে হয়, তা-ই লিখবেন। সাবজেক্টের সেখানে কোনো ওজর-আপত্তির জায়গা নেই। ব্র্যাডম্যান একদিন ফোন করে পাণ্ডুলিপিটা দেখতে চাইলে রোনাল্ড পেরি তাই একটু বিব্রতই হলেন। বুঝতে পেরে ব্র্যাডম্যান তাঁকে আশ্বস্ত করেন, ‘আমি শুধু তথ্যগত কোনো ভুল আছে কি না, সেটি দেখব।’
তো রোনাল্ড পেরি এয়ার এক্সপ্রেসে পাণ্ডুলিপি পাঠিয়ে দিলেন। ব্র্যাডম্যান তা হাতে পেলেন মঙ্গলবার দুপুরে। বুধবার, মানে পরদিনই ফোন করে ব্র্যাডম্যান জানালেন, তাঁর পড়া হয়ে গেছে। চার পৃষ্ঠা নোট নিয়েছেন, ৮০টা পয়েন্ট নিয়ে পেরির সঙ্গে কথা বলতে চান। পেরি কি আর একবার তাঁর বাড়িতে যেতে পারবেন?
ওই পাণ্ডুলিপিতে আড়াই লাখ শব্দ! পড়তে ডনকে নিশ্চয়ই সারা রাত জাগতে হয়েছে! এই বিস্ময় নিয়ে পরদিন মেলবোর্ন থেকে অ্যাডিলেডে পৌছালেন পেরি। ব্র্যাডম্যান স্টাডি রুমে ৮০টা পয়েন্ট নিয়ে বসলেন। বেশির ভাগই বানান বা পরিসংখ্যানগত ভুল। তবে একটা ব্যাপার নিয়ে আলোচনা একটু দীর্ঘ হলো। পেরি লিখেছিলেন, ১৯৩০ সালে লর্ডসে ব্র্যাডম্যানের প্রথম রানটা ছিল মিড অনে খেলে।
ব্র্যাডম্যানের দাবি, মিড অন নয়, মিড অফ হবে। পেরি মিড অনেই অনড় থাকায় ব্র্যাডম্যান তথ্যসূত্র জানতে চাইলেন। তিনজনের নাম বলা হলো। ব্র্যাডম্যান তাতেও নিরস্ত নন। চোখ বন্ধ করে মনে মনে শটটা যেন আবার খেললেন। চোখ খুলে ‘না, এটা মিড অফেই ছিল’ বলে ফিল্ডারের নামও বলে দিলেন। অবাক বিস্ময়ে পেরিকে ব্র্যাডম্যানের কথাই মেনে নিতে হলো।
মাত্র ২২ বলে করা বিখ্যাত সেই সেঞ্চুরি নিয়েও তা-ই। সেঞ্চুরিটা একটি প্রীতি ম্যাচে। ১৯৩১ সালে সিডনি থেকে ৬০ মাইল দূরত্বের ব্ল্যাকহিথে কংক্রিট পিচের উদ্বোধন উপলক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ব্র্যাডম্যানকে। প্রতিপক্ষ দলে বিল ব্ল্যাক নামের এক বোলার ছিলেন। ব্র্যাডম্যানের এক সতীর্থ তাঁকে মনে করিয়ে দেন, কিছুদিন আগে একটা প্রদর্শনী ম্যাচে ব্র্যাডম্যানকে বোল্ড করেছিলেন এই বিল ব্ল্যাক, এর পর থেকে জনে জনে তা বলে বেড়াচ্ছেন। যা শুনে ব্র্যাডম্যান শুধু বলেন, ‘আই থিঙ্ক আই উইল হ্যাভ আ গো।’
তখন ৮ বলের ওভার। ৩ ওভারেই ব্র্যাডম্যানের ঠিক ১০০। টেস্ট ক্যারিয়ারে মাত্র ৬টি ছক্কা। কিন্তু সেদিন তো ব্র্যাডম্যানের চোখে খুনের নেশা। সেঞ্চুরিতে তাই চারের চেয়ে ছয় বেশি—৯টি চারের পাশে ১০টি ছক্কা! শেষ পর্যন্ত থেমেছিলেন ২৫৬ রান করে।
বিল ব্ল্যাকের ওপর দিয়ে ঝড় তো গেছেই, বিনা দোষে শাস্তি পেয়েছেন অন্য বোলাররাও। তাঁদেরই একজন, হরি বেকার প্রথম ওভারেই ৪০ রানের বেধড়ক পিটুনি খাওয়ার পর তাঁকে আর বোলিং না করানোর জন্য অধিনায়কের কাছে কাকুতিমিনতি করতে শুরু করেন। রোনাল্ড পেরির পাণ্ডুলিপিতে সেই সেঞ্চুরির বল বাই বল বর্ণনায় চার-ছয়ের ক্রমপর্যায়ে একটা ভুল ছিল। ব্র্যাডম্যান সেটিও ঠিক করে দিলেন। কী বলে ব্যাখ্যা করবেন এই লোকটাকে!
যে ব্যাট দিয়ে ওই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন, বাউরালে ব্র্যাডম্যান মিউজিয়ামে সেটি রাখা আছে। যা দেখে বিস্ময়টা আরও বেড়ে যায়। দীনহীন একটা ব্যাট, একচিলতে কানা। এমন নয় যে এই ব্যাটটা ব্যতিক্রমী। বাউরালের মিউজিয়ামে ব্র্যাডম্যানের অন্য ব্যাটগুলোও তো একই রকম। সেখানে যাওয়ার আগে অ্যাডিলেড ওভালের জাদুঘরে ব্র্যাডম্যানের ব্যবহৃত আরও যত ব্যাট দেখেছি, সেগুলোও। পাড়ার ক্রিকেটেও তো কেউ এখন এমন ব্যাট দিয়ে খেলতে চাইবে না। আর এটি দিয়েই ব্র্যাডম্যান রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন, বোলারদের উপহার দিয়েছেন বিনিদ্র রাত, কখনোবা তাঁদের ঘুমে হানা দিয়েছেন দুঃস্বপ্ন হয়ে।
আবারও ফিরে যেতে হয় ডেনিস কম্পটনের ওই কথায়—কোনো খেলায় এমন কেউ একবারই আসে। পৃথিবীতেও হয়তো তা-ই। ক্রিকেট নামে যে একটা খেলা আছে, জীবনানন্দ দাশ এটা জানতেন বলে কোনো প্রমাণ নেই। তবে তাঁর কবিতার এই লাইনটা ব্র্যাডম্যানকে নিয়ে লেখা বলে অনায়াসেই চালিয়ে দেওয়া যায়—এ পৃথিবী একবার পায় তারে, পায় নাকো আর।
১৯০৮ সালের ২৭ আগস্ট যেমন পেয়েছিল ডন ব্র্যাডম্যানকে।