কোহলি–গিল–রোহিতদের জন্য চালু হচ্ছে বঙ্কো টেস্ট
কোহলি–গিল–রোহিতদের জন্য চালু হচ্ছে বঙ্কো টেস্ট

ভারতীয় ক্রিকেটে ব্রঙ্কো টেস্ট কেন আলোচনায়, এটা আসলে কী

ভারতের ক্রিকেটে নতুন একটা শব্দ ইদানীং বেশি শোনা যাচ্ছে—ব্রঙ্কো টেস্ট। দলটির স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচ আদ্রিয়ান লে রু ক্রিকেটারদের ফিটনেসের বেঞ্চমার্ক হিসেবে ব্রঙ্কো টেস্ট চালু করতে চান। বর্তমানে ইয়ো ইয়ো টেস্ট ও টু কিলোমিটার টাইম ট্রায়ালের মাধ্যমে ফিটনেস যাচাই করা হয়। তবে ব্রঙ্কো টেস্ট এ দুটির চেয়ে বেশি কার্যকর হবে আশ্বস্ত হয়ে ভারতের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর নাকি এ নিয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।

তবে কেউ কেউ আবার ক্রিকেটে ব্রঙ্কো টেস্টের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান। যেমন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স এটিকে ক্রিকেটারদের জন্য এটিকে সঠিক মনে করছেন না।

প্রশ্ন হচ্ছে, ব্রঙ্কো টেস্টে আসলে কী ঘটে, যা কেউ চান, কেউ চান না।

ব্রঙ্কো টেস্ট কী

এই পরীক্ষা মূলত রাগবি খেলোয়াড়দের জন্য বানানো হয়েছে। লক্ষ্য হচ্ছে, খেলোয়াড়দের অ্যারোবিক (অক্সিজেনের সাহায্যে দীর্ঘ সময় ধরে খেলার ক্ষমতা) এবং হৃদ্‌যন্ত্র ও রক্তপ্রবাহের সক্ষমতা বাড়ানো। ব্রঙ্কো টেস্টে মাঠে চারটি মার্কার রাখা হয়—০ মিটার, ২০ মিটার, ৪০ মিটার ও ৬০ মিটার।

যিনি পরীক্ষাটি দেবেন, তিনি দৌড় শুরু করবেন ০ থেকে ৬০ মিটার পর্যন্ত, তারপর আবার ফিরে আসবেন ০ মিটারে। এরপর ০ থেকে ৪০ মিটার, ফিরে আসবেন ০ মিটারে। তারপর ০ থেকে ২০ মিটার, আবার ০ মিটারে ফিরে আসবেন। এক চক্রে এভাবে মোট ২৪০ মিটার দৌড়ানো হয়। পুরো টেস্ট সম্পূর্ণ করতে হয় ৫ চক্রে। অর্থাৎ কোনো বিরতি ছাড়া মোট ১ হাজার ২০০ মিটার দৌড়াতে হয়।

ফিটনেস যাচাইয়ে নতুন পদ্ধতির পথে হাঁটবে ভারত ক্রিকেট দল

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় খেলোয়াড়দের বলা হয়েছে ছয় মিনিটের মধ্যে ব্রঙ্কো টেস্ট শেষ করতে।

বলে রাখা ভালো, টাইম ট্রায়াল পরীক্ষায় নির্দিষ্ট দূরত্ব নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শেষ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে দ্রুতগতির বোলারদের জন্য মানদণ্ড ২ কিলোমিটারের জন্য ৮ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। আর ব্যাটসম্যান, উইকেটকিপার ও স্পিনারদের জন্য মানদণ্ড দুই কিলোমিটারের জন্য ৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ড।

অন্যদিকে ইয়ো ইয়ো টেস্টে একজন খেলোয়াড়কে ২০ মিটার দূরত্বে বারবার দৌড়াতে হয়, ধাপে ধাপে বাড়াতে হয় গতি। এই টেস্টে ভারতীয় খেলোয়াড়দের মানদণ্ড রাখা হয়েছিল ১৭.১।

কে কী বলছেন

২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের স্ট্রেন্থ অ্যান্ড কন্ডিশনিং কোচের দায়িত্বে থাকা রামজি শ্রীনিবাসন মনে করেন, ব্রঙ্কো টেস্ট চোটপ্রবণ পেসারদের সাহায্য করতে পারে। তিনি বলেন, ‘ফাস্ট বোলারদের দক্ষতার মধ্যে আছে দৌড়ানো, স্প্রিন্ট করা (খুব দ্রুত দৌড়), হঠাৎ থামা, লাফানো। তাঁদের শরীরের ওপর ভেতর ও বাইরের নানা ধরনের চাপ কাজ করে। এ জন্য তাঁদের খুব শক্তিশালী ও ফিট হতে হয়, অনেকটা কমান্ডোর মতো। ব্রঙ্কো টেস্টে যে ডেটা পাওয়া যায়, সেটা খেলোয়াড়ের স্কিল অনুযায়ী কাজে লাগানো যায়।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘দৌড়ানো তাঁদের দক্ষতার অপরিহার্য অংশ। শুধু শক্তি যথেষ্ট নয়।’

ভারত জাতীয় দলে ব্রঙ্কো টেস্ট চালু নিয়ে দ্বিমতও আছে

গত বছরের শেষ দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অবসর নেওয়া অশ্বিন অবশ্য নেতিবাচকতাই বেশি দেখছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, ‘ট্রেনার বদলালে পরীক্ষার পদ্ধতিও বদলায়। এটা একজন খেলোয়াড়ের জন্য বড় সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে এ কারণে চোটেও ভুগতে হয়। আমি নিজেই ২০১৭-২০১৯ দিকে এমন একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছি।’