হারের হতাশায় মুষড়ে পড়েন সুমাইয়া ও নাহিদা
হারের হতাশায় মুষড়ে পড়েন সুমাইয়া ও নাহিদা

নারী বিশ্বকাপ

ড্রেসিংরুমে মেয়েরা কাঁদলেও গর্বিত নিগার

মাঠ ছাড়ার সময়ই চোখ টলমল করছিল অনেকের। বদলি ফিল্ডার হিসেবে নামা সুমাইয়া আক্তার চোখের পানি আটকে রাখতে পারছিলেন না। ডাগআউটেও দেখা গেল দুই হাতে মুখ ঢেকে ফেলেছেন দু-একজন খেলোয়াড়। শেষ ওভারে বোলিং করা নাহিদা আক্তারও বসে পড়েছিলেন বোলিং ক্রিজের পাশেই। দুই হাতে মুখ ঢেকে কি কান্নার দমক ঠেকানোর চেষ্টা করছিলেন?

নিগার সুলতানা অধিনায়ক, তাঁর কান্না মানায় না, কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়কের শূন্য দৃষ্টিই বলে দিচ্ছিল, খুব চেষ্টা করে কাঙ্ক্ষিত কোনো কিছুর খুব কাছে গিয়ে নিজেদের ভুলে তা অর্জন করতে না পারলে কেমন লাগে। নারী বিশ্বকাপে গতকাল বিশাখাপট্টনমে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বাংলাদেশের ৩ উইকেটে হারের পর নিগারদের ভক্তদেরও এমন লাগার কথা—জয়টা ফসকে গেল!

আগে ব্যাট করে ২৩২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়া করার পথে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিনটি ক্যাচ ছেড়েছে বাংলাদেশ। বেশ কিছু ফুল টস বলও করেছে, যেখান থেকে বাউন্ডারি বের করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।

ক্যাচ ছাড়েন সুমাইয়া

দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে পঞ্চম ওভারে লরা ভলভার্ট ১১ রানে থাকতে তাঁর ক্যাচ ছাড়েন বোলার রাবেয়া খাতুন। ৩১ রানে আউট হন ভলভার্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার যখন ৩৬ বলে ৩৭ রান দরকার, তখন ফিফটি তুলে নিয়ে ক্রিজে সেট চোলে ট্রায়নের ক্যাচ লং অনে ছাড়েন বদলি ফিল্ডার সুমাইয়া। এরপর ৮ বলে যখন ৯ রান দরকার দক্ষিণ আফ্রিকার, তখন লং অনে চোলের আরেকটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন স্বর্ণা আক্তার। এরপর আর ম্যাচের কী থাকে! শেষ ওভারে ৮ রান তুলতে অসুবিধা হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। যদিও শেষ ওভারে বাঁহাতি স্পিনার নাহিদার ফুল টসে ছক্কা হজম নিয়ে সমালোচনা হতে পারে।

হারলেও পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে সতীর্থদের নিয়ে গর্বিত বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার, ‘শেষ বল পর্যন্ত মেয়েরা যেভাবে লড়াই করেছে, তাতে আমি সত্যিই গর্বিত। খারাপও লাগছে কারণ ড্রেসিংরুমে তারা কাঁদছে। সবারই অল্প বয়স। আজ (কাল) তারা যেভাবে নিজেদের ১১০ শতাংশ নিবেদন করেছে, তাতে ভালো লাগছে। এখন তারা খুব আবেগের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, কারণ সবারই বিশ্বাস ছিল ম্যাচটা আমরা জিততে পারব। তাই আমার মনে হয়, এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা।’

চাপ কাটিয়ে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা

৪ ম্যাচে তিন হার ও এক জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে বাংলাদেশ। লিগ পর্বে বাংলাদেশ আরও তিনটি ম্যাচ খেলবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০০ রানে হারলেও ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তুমুল লড়াই করেছে নিগারের দল। অধিনায়ক মনে করেন গর্বের জায়গাও আছে, ‘এটাই আমাদের শেষ ম্যাচ না। আরও তিনটি ম্যাচ আছে। আমাদের গর্বিত হওয়া উচিত। যেভাবে খেলেছি, তাতে মাথা উঁচু রাখা উচিত।’

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভালো বোলিং করতে না পারার জন্য শিশিরকে দুষেছেন নিগার, ‘শিশিরের কারণে বল গ্রিপ করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। বল ভেজা ছিল। নিজেদের সেরা বোলারদের ডেথ ওভারে ব্যবহারের চেষ্টা করেছি। কখনো কখনো (প্রতিপক্ষের মোমেন্টাম) আটকে রাখা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের বোলাররা ভালো করেছে।’