সংবাদ সম্মেলন শেষ করে ড্রেসিংরুমের দিকে রওনা হয়েছেন ড্যারেন স্যামি। পথে দেখা সংবাদ সম্মেলনে আসতে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে। বাংলাদেশ অধিনায়ককে অভিনন্দন জানান ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ, ভবিষ্যতের জন্য জানালেন শুভকামনা। তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে মিরাজ এসে বসেন সংবাদ সম্মেলনের চেয়ারে।
বিতর্ক আর সমালোচনার সিরিজে শেষটা তাঁর জন্য হয়েছে সিরিজ জয়ের আনন্দে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে অধিনায়ক হিসেবে এটি তাঁর প্রথম সিরিজ জয়। তবে এমন রাতেও তাঁকে কথা বলতে হয়েছে এই মিরপুরের কালো মাটির উইকেট আর অধিনায়কত্ব নিয়ে সৃষ্ট বিতর্ক নিয়ে।
প্রথম ওয়ানডের আগে মিরপুরের কালো মাটির উইকেটে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। দ্বিতীয় ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার স্পিন দিয়ে করিয়ে রেকর্ডই গড়ে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যে জন্য স্পিন উইকেট বানিয়ে এত বিতর্ক—সেই র্যাঙ্কিংয়েও ওপরে ওঠা যায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করা যায়নি বলে।
মিরাজ অবশ্য বলেছেন, ঘরের মাঠেও সব সিরিজে দেখা যাবে না এমন উইকেট, ‘আমাদের তো ঘরের মাঠে আরও অনেক সিরিজ আছে। আমরা যে সব ম্যাচই এখানে (মিরপুরে) খেলব, এ রকম কিছু নয়।’
২০২৭ সালে পরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ হবে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়াতে। র্যাঙ্কিংয়ে অন্তত সেরা নয়ে না থাকলে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলা হবে না বাংলাদেশের। দ্বিপক্ষীয় হোম সিরিজগুলোতে তাই ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগানোকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন মিরাজ। তবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে এ রকম উইকেটে খেলে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পরে মূল মঞ্চে বাংলাদেশ ভুগবে কি না, তাঁর কাছে ছিল এমন প্রশ্নও।
উত্তরে অধিনায়ক বলেন, ‘বিশ্বকাপের পরিকল্পনা হওয়া উচিত দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে। বিশ্বকাপের আগে আমরা কীভাবে খেলব, কীভাবে আমরা স্কিল ক্যাম্প করব, কীভাবে আমাদের প্রস্তুতি থাকবে, কোথায় আমরা অনুশীলন করব, সেগুলো তখন ভাবতে হবে। তবে দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে আমার মনে হয়, ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
আজ শেষ ওয়ানডেতে ১৭৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জয়ের ভিতটা গড়ে দেন দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও সাইফ হাসান। তাঁদের কৃতিত্ব দিয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমরা কিন্তু ওপরের দিকে এ রকম জুটি দাঁড় করাতে পারিনি অনেক দিন। যখন ওপর থেকে এ রকম একটা জুটি হয়, তখন দলের মানসিকতাই বদলে যায়। দুজনই যেভাবে ব্যাটিং করেছে, অবশ্যই তাদের কৃতিত্ব দিতে হবে।’
স্পিন উইকেটে সিরিজটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্যও ছিল অনেক চ্যালেঞ্জের। দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে জেতাটাই তাদের জন্য হয়ে থাকছে বড় প্রাপ্তি। কাল ম্যাচ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ স্যামিও জানিয়ে গেছেন তাঁর হতাশার কথাই, ‘আমি অনেক হতাশ এই সিরিজ নিয়ে। বাংলাদেশ খুব ভালো খেলেছে, তাদের অভিনন্দন। আমরা ব্যাটিং–বোলিং–ফিল্ডিংয়ে তাদের মতো ভালো করতে পারিনি। কৃতিত্বটা তাদেরই দিতে হবে।’