লর্ডস টেস্টের সেই পরিবর্তিত বল আলোচনায় এল আবারও। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট অভিযোগ তুলেছে, বল পরিবর্তনের সময় ইংল্যান্ডকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এই ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে আইসিসি ম্যাচ রেফারির কাছে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট।
সেই টেস্টের দ্বিতীয় দিন সকালে দারুণ বোলিং করছিলেন যশপ্রীত বুমরা। প্রথম ১৪ ডেলিভারিতে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। কিন্তু মাত্র ১০ ওভারেই বল বিকৃত হয়ে পড়ে।
নিয়ম অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে সমমানের (১০ ওভার পুরোনো) বল দিয়ে পরিবর্তন করা উচিত। তবে ভারত দাবি করছে, পরিবর্তিত বলটি ছিল ৩০-৩৫ ওভার পুরোনো। বল বদলের পর পুরো সেশনেই ইংল্যান্ডের ৭ ও ৯ নম্বর ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে আর কোনো উইকেট নিতে পারেনি ভারত।
ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফোর প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুরোনো বলটি গড়পড়তা ১.৮৬৯ ডিগ্রি সুইং ও ০.৫৭৯ ডিগ্রি সিম মুভমেন্ট করছিল। বদলি বলের সুইং ছিল মাত্র ০.৮৫৫ ডিগ্রি, যদিও সিম কিছুটা বেশি ছিল—০.৫৯৪ ডিগ্রি। ইংল্যান্ড সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২৭১ রানে ৭ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত করে ৩৮৭ রান। ভারত শেষ পর্যন্ত টেস্ট হারে ২২ রানে।
এ নিয়ে ভারতীয় দলের এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘১০ ওভারের মাথায় বল বিকৃত হয়ে যায়, যেটা এই সিরিজে অনেকবার ঘটেছে। আম্পায়াররা মাঠে যে রিং দিয়ে বলের পরীক্ষা করেন,সেখানেও বলটি উতরে যেতে পারেনি। কিন্তু আম্পায়ারদের কাছে ১০ ওভার পুরোনো বল ছিল না। ফলে ম্যাচের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ভারতীয় দল একটি ৩০-৩৫ ওভার পুরোনো বল পায়। স্কোরকার্ড চেক করুন, দেখুন কীভাবে খেলা সেখান থেকে পরিবর্তন হয়ে গেছে। বোলাররা সুইং পাচ্ছিল না, ইংল্যান্ড সহজে রান করেছে।’
বলটি পুরোনো হওয়ায় ভারতীয় দল ম্যাচ রেফারির কাছে অনুরোধ করে যেন তারা আগের, আকার হারানো বলেই খেলা চালিয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘যখন আপনি বল পরিবর্তনের অনুরোধ করেন, তখন আপনাকে বলা হয় না আপনি কত ওভার পুরোনো বল পাচ্ছেন। লর্ডসে, আমাদের বলা হয়নি যে আমরা যে বলটা পাচ্ছি সেটা ৩০ থেকে ৩৫ ওভার পুরোনো। যদি বলা হতো, তাহলে আমরা ১০ ওভার ব্যবহৃত সেই বিকৃত বলেই খেলা চালিয়ে যেতাম। আইসিসির হস্তক্ষেপ করা উচিত। এই নিয়মটা বদলানো দরকার।’
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অভিযোগের কথা আরও বলা হয়েছে। চলমান সিরিজে ব্যবহৃত বলগুলোর মধ্যে গাঢ় লাল রঙের বল বেশি সুইং করেছে। ভারতীয় দলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, কখনো কখনো চতুর্থ আম্পায়ার ভারতীয় ড্রেসিংরুমে একটি বাক্স নিয়ে এসেছেন, যেখানে শুধু একটি গাঢ় লাল রঙের বল থাকত। ভারত যখন সেই বলটি বেছে নিতে চায়, তখন তাদের বলা হয় এটি ইংল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় নতুন বল হিসেবে নির্বাচন করেছে।
ভারতীয় দলের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি কোনো অভিযোগ করছি না, কিন্তু যখন আমরা গাঢ় রঙের বলটি চাই, তখন বলা হয়, এটি ইংল্যান্ড তাদের দ্বিতীয় নতুন বল হিসেবে নির্বাচন করেছে। সঠিক নিয়ম হলো, এই বল নির্বাচনের কাজটি ম্যাচ রেফারির রুমে হওয়া উচিত, ড্রেসিংরুমে নয়, যেখানে শুধু একজন স্থানীয় আম্পায়ার উপস্থিত থাকেন অফিশিয়াল হিসেবে।’