বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে মিরাজের সময়টা খুব একটা ভালো কাটছে বলা যাবে না
বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে মিরাজের সময়টা খুব একটা ভালো কাটছে বলা যাবে না

সিরিজ জয়ের পর মিরাজ বললেন ‘মাশরাফি ভাই ও তামিম ভাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করছেন’

গত জুনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের আগে এক বছরের জন্য ওয়ানডে সংস্করণের নেতৃত্ব পান মেহেদী হাসান মিরাজ। অধিনায়ক হওয়ার পর তাঁর জন্য সময়টা সুখকর যায়নি একদমই। ১৩ ম্যাচে পেয়েছেন মাত্র ৩ জয়। ভারপ্রাপ্ত আর পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে প্রথম সিরিজ তো জিতলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েই। এর আগে ভারপ্রাপ্ত ও মূল অধিনায়ক হিসেবে টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ হেরেছেন মিরাজ।
অধিনায়ক হিসেবে কঠিন সময় পার করা মিরাজের অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সেসব আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর মিরপুরে তাঁর সংবাদ সম্মেলনেও এসেছিল। খুব বেশি দিন হয়নি অধিনায়কত্ব নিয়েছেন, শুরুতে সেটিই মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
মিরাজ এরপর সময়ের সঙ্গে উন্নতির প্রতিশ্রুতিই দিলেন, ‘প্রথম দিকে আমি যখন অধিনায়কত্ব করেছি, তখন অনেক কঠিন ছিল। যত আমি নেতৃত্ব দেব, তত আস্তে আস্তে অনেক কিছুর উন্নতি হবে। আমাদের বাংলাদেশের যাঁরা কিংবদন্তি খেলোয়াড় ছিলেন, যাঁরা অনেক দিন অধিনায়কত্ব করেছেন, তাঁরা আমাকে অনেক সাহায্য করছেন। সত্যি কথা বলতে তাঁরা পেছন থেকে আমাকে অনেক সাপোর্ট করছেন, বিশেষ করে যাঁরা বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক।’

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে ট্রফি নিচ্ছেন মিরাজ

বাংলাদেশের সাবেক দুই অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজার নাম আলাদা করেই বললেন মিরাজ, ‘মাশরাফি ভাই আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছেন, আমাকে অনেক কিছু বলেছেন। তামিম ভাই আমাকে ফোন দিয়ে বলেছেন যে এভাবে এভাবে করলে ভালো হবে, কারণ আপনি যদি দেখেন তাঁরা কিন্তু দুজনই বাংলাদেশের সবচেয়ে সফলতম অধিনায়ক। সত্যি কথা বলতে তাঁরা আমাকে অনেক সাপোর্ট করছেন। এই যে দুটি সিরিজে অনেক কিছু হয়েছে, তাঁরা হয়তো কাছ থেকে দেখেছেন। অনেক কথা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে। এই জিনিসটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।’
২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও নামিবিয়ায় হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এই টুর্নামেন্টে সরাসরি খেলতে হলে র‍্যাঙ্কিংয়ের সেরা নয়ে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। বিশ্বকাপ ঘিরেও প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার। তত দিন পর্যন্ত কি নেতৃত্ব টিকে থাকবেন মিরাজ?  
উত্তরে মিরাজ বলেছেন, ‘আমি এত দূর পর্যন্ত এখন চিন্তা করছি না। যেহেতু আমাকে এক বছরের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এক বছরের ভেতর যতগুলো ম্যাচ আছে এবং বাংলাদেশকে একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য (চেষ্টা করব)। কারণ, আমাকে যখন অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছিল, তখন আমাদের দলের পজিশন ছিল কত—১০ নম্বর। এখন কোথায়—১০-ই আছে। হ্যাঁ, মাঝখানে আমি অনেক ম্যাচ হেরেছি।’

সমালোচনা ঘিরে একটু অভিমানও ছিল তাঁর কণ্ঠে, ‘দিন শেষে দল যদি ফল না করে, দায় অধিনায়কের ওপরেই আসে। কিন্তু দল যখন ভালো খেলে, তখন কিন্তু সবাই বলে একটা দল হয়ে খেলেছে। আমাকে যে অধিনায়কত্ব অনেক দিন করতে হবে, অনেক বেশি করতে হবে, এ রকম কোনো কিছু না। হয়তো আজকে আমি আছি, আমার জায়গা থেকে আরেকজন আসবে। কিন্তু দিন শেষে আমরা বাংলাদেশের হয়ে খেলছি এবং বাংলাদেশকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, এটাই হলো আমাদের লক্ষ্য।’
ওয়ানডেতে মিরাজ আর টি-টোয়েন্টিতে লিটন দাস থাকলেও টেস্টে এখন বাংলাদেশ খুঁজছে নতুন অধিনায়ক। গত জুনে বোর্ডের তিন সংস্করণে তিন অধিনায়কের ভাবনার সঙ্গে একমত না হওয়ায় টেস্টের নেতৃত্ব ছাড়েন নাজমুল। এখন আবার তাঁকে ফেরানোর গুঞ্জন রয়েছে। এই সংস্করণে অধিনায়ক হওয়ার আলোচনায় আছেন মিরাজ ও লিটনও।
টেস্টের নেতৃত্বের প্রস্তাব পেলে তা গ্রহণ করবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মিরাজ বলেছেন, ‘যদি দেয় (টেস্ট নেতৃত্ব), অবশ্যই করব। তবে সেটার একটা পরিকল্পনা থাকতে হবে। তারা কীভাবে চায়, আমি কীভাবে জিনিসটা চাই, দুই পক্ষ একসঙ্গে কথা বলে এবং মানসিকভাবে যদি ঠিক থাকে, তাহলে অবশ্যই সেটা ভালো হবে।’