
ফিল্ডারদের সব থ্রোতে স্টাম্প ভাঙে না। নিশানা ঠিক রাখা সহজ কাজ নয় বলে কারও থ্রোতে স্টাম্প ভাঙলে ফিল্ডারকে বাহবা-ই দেওয়া হয়।
কিন্তু একই থ্রোতে যদি দুই পাশের স্টাম্পই কেউ ভেঙে ফেলেন! এমন অদ্ভুতুড়ে এক কাণ্ডই ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রিমিয়ার লিগে (এমপিএল)।
প্রতিযোগিতাটির গতকালের একটি ম্যাচে এক উইকেটকিপার এক থ্রোতে দুই পাশের স্টাম্পই ভেঙেছেন। এর মধ্যে এক পাশের ব্যাটার আউটও হয়েছেন।
ভারতের এই ঘটনা ফিরিয়ে এনেছে ২০২২ বিপিএলের ঘটনা। যেখানে মেহেদী হাসানের এক থ্রোতে ভেঙেছিল দুটি স্টাম্প, আউট হয়েছিলেন আন্দ্রে রাসেলও।
মহারাষ্ট্রের ঘটনাটাই আগে জানা যাক। গতকাল রাতে পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় রাইগাড রয়্যালস ও পুনেরি বাপ্পা।
রাইগাড রয়্যালস ইনিংসের পঞ্চম বলে সিদ্দেশ বীর ফ্লিক করে রান নিতে দৌড় শুরু করেন। তবে উইকেটকিপার সুরজ সিন্দে বল হাতে নিয়েই থ্রো করেন। রান হবে না বুঝতে পেরে সিদ্দেশ দ্রুত পেছনে ফেরেন।
এদিকে সুরজের থ্রো স্টাম্পে আঘাত হানে। এরপর সে বলটি সোজাসুজি ক্রিজ হয়ে অপর প্রান্তের উইকেটেও আঘাত করে। রিপ্লেতে দেখা যায়, রান নিতে যিনি আগ্রহী ছিলেন সেই সিদ্দেশ বীর স্টাম্প ভাঙার আগেই পপিং ক্রিজে ঢুকতে পেরেছেন।
কিন্তু নন স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটার হর্শ মোগাবীরা কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর আর ফিরতে পারেননি। অর্থাৎ উইকেটকিপার যাকে আউট করার জন্য স্টাম্পে বল মেরেছেন, তিনি বেঁচে গেছেন। কিন্তু নিরাপদ দূরত্বে থাকা নন স্ট্রাইকারের মোগাবীরাই অপ্রত্যাশিতভাবে রানআউট হয়ে গেছেন।
একজন ফিল্ডার চাইলে এক পাশের স্টাম্প ভাঙতে পারলেও একই থ্রোতে দুই পাশের স্টাম্প ভাঙা প্রায় অসম্ভব। দুই পাশেই ভাঙে ঘটনাচক্রে। এমন অদ্ভুতুড়ে ঘটনা দেখা গিয়েছিল বিপিএলের অষ্টম আসরেও।
২০২২ সালের ২১ জানুয়ারি মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা-খুলনা টাইগার্সের মধ্যকার সেই ম্যাচে ভুক্তভোগী ছিলেন আন্দ্রে রাসেল।
খুলনার থিসারা পেরেরার বল থার্ডম্যানে খেলে সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন ঢাকার রাসেল। খুলনার মেহেদী হাসান বল ধরেই স্ট্রাইক এন্ডের স্টাম্পে থ্রো করেন। বল স্টাম্পে আঘাত হানলেও এর আগে পৌঁছে যান মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু স্ট্রাইক এন্ডের বল বাউন্স করে পৌঁছে যায় নন স্ট্রাইকেও। রাসেল তখন পপিং ক্রিজে। ফলাফল, রাসেল রানআউট।
উইজডেন বলছে, ১৯৭৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাইকেল হোল্ডিংও এক থ্রোতে দুই পাশের স্টাম্প ভেঙেছিলেন। তবে কোন ব্যাটসম্যান আউট হবেন—তা নিয়ে সংশয় থাকায় আম্পায়ার দুজনকেই নটআউট ঘোষণা করেন।
এমসিসি আইনের ৩৮.৪ অনুসারে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আউট হবেন ওই ব্যাটসম্যান, যার প্রান্তের উইকেট ভাঙা হয়েছে। উইকেট ভাঙা বলতে রানআউট বোঝাচ্ছে।
অর্থাৎ যদি দুই প্রান্তের ব্যাটসম্যানই স্টাম্প ভাঙার সময় ক্রিজের বাইরে থাকেন, তাহলে যার স্টাম্প আগে ভাঙা হয়েছে, তিনি আউট হবেন। যদি প্রথমজন নিরাপদ থাকেন, তাহলে দ্বিতীয়জন আউট হবেন। কারণ, বল একবার স্টাম্প ভাঙার পরও খেলার মধ্যে ছিল।