ব্যাটসম্যানের মন খারাপ হবে ভেবে উদ্যাপন করেন না হাসান
হ্যারি টেক্টরের উইকেটের কথাই ধরুন, বাংলাদেশ সেটি পেয়েছে রিভিউ নিয়ে। মাঠের জায়ান্ট স্ক্রিনে বল ট্র্যাকিংয়ে যখন টেক্টরের আউট নিশ্চিত হলো, ‘টিম হাডল’-এর পেছনের দিকে থাকা ইবাদত হোসেন পেছন ঘুরে একটা লাফ দিলেন, হাত ঘুরিয়ে এনে করলেন উদ্যাপন।
অথচ সে উদ্যাপনে মধ্যমণি হওয়ার কথা যে বোলার হাসান মাহমুদের, তিনিই যেন নিরুত্তাপ! আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ উইকেট পেয়েছেন হাসান, কিন্তু একবারও সেভাবে উদ্যাপন করলেন না। যেটুকু করলেন, করতে হয় বলেই যেন করা!
কেন উইকেট পেয়েও উদ্যাপন করেন না, এমন প্রশ্ন সংবাদ সম্মেলনে করা হয়েছিল তরুণ এ পেসারকে। শুরুতে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বললেন, ‘করি না, এটাই আরকি।’
আবার একটু জোরাজুরির পর যে ব্যাখ্যা দিলেন, সেটি একটু অদ্ভুতই, ‘ব্যাটসম্যানকে আউট করার পর উদ্যাপন করলে ওর মন খারাপ হবে আরও, এই ভেবেই করি না।’
উদ্যাপন না করলেও বাংলাদেশের স্মরণীয় এক জয়ের নায়ক ২৩ বছর বয়সী এ পেসারই। শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নয়, স্বীকৃত ক্রিকেটেই প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট পেলেন তিনি। আয়ারল্যান্ডকে আজ হাসান গুঁড়িয়ে দেওয়ার মূল কাজটা করেছেন নতুন বলেই। এ ম্যাচে নতুন বলে এক প্রান্তে বাংলাদেশের দায়িত্ব সামলাবেন, সে বার্তাও পেয়েছিলেন আগেই।
Also Read: ১০ উইকেট ও ২২১ বল বাকি রেখে বাংলাদেশের জয়
হাসান অনুশীলন করেছেন সে অনুযায়ীই, ‘আসলে আগেই বলা হয়েছিল, শেষ ম্যাচে খেলব, নতুন বলে বোলিং করব। সেটিরই প্রস্তুতি নিয়েছি গত ২-৩ দিন ধরে। আসলে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে আলাদা মানসিকতা থাকে। কীভাবে শুরু করছি, এটি গুরুত্বপূর্ণ। চেষ্টা করি দুই সংস্করণেই ভালো একটা ফোকাস রাখার জন্য—নতুন বলে, এরপর মাঝে, এরপর ডেথে। সব মিলিয়ে ভালো হচ্ছে আরকি।’
এ জন্য পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডকেও কৃতিত্ব দিয়েছেন হাসান, ‘নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেন, ধারণা ভাগাভাগি করেন। কীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টিকে থেকেছেন তিনি। কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে। আর স্কিলের ব্যাপারে তো অসাধারণ। ভালো কাজ করেন আমাদের নিয়ে, কঠোর পরিশ্রম করেন।’
Also Read: ডেথ ওভারে বাংলাদেশের ‘নায়ক’ হাসান
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এই প্রথম প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটের সব কটি নিলেন পেসাররা। পেসারদের ধারাবাহিক উন্নতিরই ‘চূড়া’ বলতে হবে সেটিকে।
হাসান তাঁর এমন বোলিং পারফরম্যান্সের পেছনে কৃতিত্ব দিচ্ছেন সতীর্থ পেসারদেরও, ‘একটা কথাই বলি আমরা—সবাই নিজেদের সেরাটা যাতে দিই। তাসকিন (আহমেদ) ভাই আমাদের সবার সিনিয়র, আগলে রাখার চেষ্টা করেন উনি। ভালো দিকগুলো নেওয়া, খারাপ দিকগুলো এড়িয়ে যাওয়া, কী কী দরকার ম্যাচে, কী কী করলে উন্নতি হবে—সেগুলোই কথা হয়।’
এখন পর্যন্ত হাসান খেললেন মাত্র ২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সামনে কোথায় উন্নতি করতে চান, এমন এক প্রশ্নের জবাব অল্প কথায় দিলেন এভাবে, ‘উন্নতি বলতে গেলে ফিটনেসটা আরেকটু উন্নতি করতে হবে। আর বোলিংটা আরেকটু গোছালো করতে হবে।’
Also Read: মার খেলেই বেরিয়ে আসেন ‘আসল’ হাসান