বাপ-বেটার নোয়াখালীতে সমস্যাই বেশি

দরজায় কড়া নাড়ছে বিপিএল। নানা শঙ্কা, আলোচনা আর সমালোচনা পেছনে ফেলে ২৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে মাঠের লড়াই। দলগুলোও কয়েক দিন ধরে অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজেদের মতো করে। দলে যোগ দিয়েছেন–দিচ্ছেন বিদেশি ক্রিকেটাররাও। বিপিএল শুরুর আগে দলগুলোর শক্তি আর দুর্বলতা খোঁজার চেষ্টা এই ধারাবাহিক প্রতিবেদনে।

আজকের দল: নোয়াখালী এক্সপ্রেস

শক্তি: টপ অর্ডারে বারুদ

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাওয়ারপ্লের সুবিধা নিতে ঝোড়ো শুরুর বিকল্প নেই। নোয়াখালীর এই দলে সেই কাজটা করার মতো ব্যাটসম্যান আছেন বেশ কয়েকজন। ওপেনিংয়ে সৌম্য সরকার ও হাবিবুর রহমান সোহান—দুজনই প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে পারেন। হাবিবুর তো রীতিমতো উড়ন্ত ফর্মে। সর্বশেষ এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারসে ৫ ম্যাচে ১৮২ স্ট্রাইক রেটে ২২৮ রান করেছেন।

একই টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন পাকিস্তানের মাজ সাদাকাত। ১৭৭.৯৩ স্ট্রাইক রেটে ২৫৮ রান করা এই ওপেনারও আছেন নোয়াখালী দলে। সঙ্গে যোগ হয়েছেন আফগান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীর ছেলে হাসান ইশাখিল। বাবার মতো তিনিও কিন্তু বড় শট খেলতে অভ্যস্ত, নামেন ওপেনিংয়ে।

পেস বোলিং ইউনিটে নোয়াখালীর শক্তি তুলনামূলক ভালো। হাসান মাহমুদ, মেহেদী হাসান রানা, মুশফিক হাসান ও রেজাউর রহমানের মতো স্থানীয় পেসারদের সঙ্গে যোগ হয়েছেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার ইহসানউল্লাহ খান ও আফগান পেসার বিলাল সামি।

অনুশীলনে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের খেলোয়াড়েরা

দুর্বলতা: স্পিনে টানাপোড়েন আর মিডল অর্ডারের গতি

জাকের আলী, মাহিদুল ইসলাম ও শাহাদত হোসেন—তিনজনই প্রায় একই ধরনের ব্যাটসম্যান। মাঝের ওভারে তাঁরা যদি ইনিংস মেরামতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, তবে রানের চাকা কিন্তু থমকে যেতে পারে। সেই চাকা সচল রাখার মূল দায়িত্বটা থাকবে মোহাম্মদ নবী ও জনসন চার্লসের কাঁধে। তবে সমস্যা হলো, নবীকে পুরো টুর্নামেন্টে পাবে না দল। সেই ঘাটতি মেটাতে পাকিস্তান থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছে হায়দার আলীকে।

স্পিন বিভাগেও প্রশ্নচিহ্ন থাকছে। বাঁহাতি স্পিনার আবু হাশিম জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলেছেন। তবে প্রথমবার বিপিএলে নিজেকে প্রমাণ করা সহজ হবে না। আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম সেরা সময় অনেক আগেই পেছনে ফেলেছেন। দলে আফগান রহস্য স্পিনার জহির খান থাকলেও সামগ্রিকভাবে স্পিন আক্রমণ দুর্বলই দেখাচ্ছে। নবী যোগ দিলেও এই ঘাটতি পুরোপুরি কাটবে কি না, সেটাই প্রশ্ন।

নজর থাকবে যাঁদের দিকে

প্রথমত হাবিবুর রহমান

আগের বিপিএলগুলোতে ১৪ ম্যাচ খেলে তাঁর সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল মাত্র ৪৩*, গড়টাও বলার মতো নয় (১৪.২২)। কিন্তু এবারের গল্পটা আলাদা হতে পারে। ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করে আসা এই তরুণের আত্মবিশ্বাস এখন আকাশচুম্বী।
কৌতূহলী নজর থাকবে নবীর ছেলে হাসান ইশাখিলের দিকেও। একই দলে বাবা-ছেলের রসায়ন দেখা তো আর প্রতিদিনের ঘটনা নয়!

নোয়াখালী এক্সপ্রেস স্কোয়াড

স্থানীয় ক্রিকেটার:

সৌম্য সরকার, হাবিবুর রহমান সোহান, মাজ সাদাকাত, সৈকত আলী, হাসান মাহমুদ, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, জাকের আলী অনিক, মেহেদি হাসান রানা, নাজমুল ইসলাম আপু, শাহাদাত হোসেন দীপু, মুশফিক হাসান, রেজাউর রহমান, রহমতুল্লাহ আলী, আবু হাশিম ও সাব্বির হোসেন।

বিদেশি ক্রিকেটার:

জনসন চার্লস, মোহাম্মদ নবী, হায়দার আলী, ইহসানউল্লাহ খান, জাহির খান, ইবরার আহমেদ, বিলাল সামি, সেদিকউল্লাহ আতাল ও হাসান ইশাখিল।