অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের জন্য ১২ জনের দল ঘোষণা করেছে ইংল্যান্ড। পার্থের এই ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরোনো মহারণ। প্রশ্ন হলো: ২১ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া এই টেস্টে ইংল্যান্ড কি তাদের পরিকল্পনামতো শুধুই পেসারদের নিয়ে আক্রমণ সাজাবে, নাকি শেষ মুহূর্তে যোগ হবে স্পিন?
আপাতত পেসার মার্ক উডের সঙ্গে স্পিনার শোয়েব বশিরকেও স্কোয়াডে রেখেছে ইংল্যান্ড। তবে ইংল্যান্ডের থিঙ্কট্যাংক—অধিনায়ক বেন স্টোকস এবং কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের মাথায় ঘুরছে অন্য চিন্তা। ইএসপিএনক্রিকইনফোর খবর অনুযায়ী, অ্যাশেজের সবচেয়ে দ্রুতগতির উইকেটে এবার পেস দিয়েই প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কৌশল সাজাচ্ছেন তাঁরা।
মার্ক উডকে বেশ ফিট মনে করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে লায়নসের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সামান্য চোট পেলেও তিনি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। বলা যায়, একাদশে উডের জায়গা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু পুরো আক্রমণ শুধুই পেসনির্ভর হবে কি না, সেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় নিতে চায় ইংলিশ টিম ম্যানেজমেন্ট।
পার্থের নেটে মঙ্গলবার প্রায় ৪০ মিনিট বোলিং করেছেন উড। আজ স্থানীয় সময় বিকেলে বোলিং করেছেন মাত্র ২ ওভার। এরপর ফিজিক্যাল কোচ পিট সিমের সঙ্গে আউটফিল্ডে ফিল্ডিং অনুশীলন করেন। উড পিচ নিয়েও সময় কাটিয়েছেন—পার্থের কিউরেটর আইজ্যাক ম্যাকডোনাল্ডের সঙ্গে দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ খুঁটিয়ে দেখেছেন উইকেট।
এবারের একাদশে উডসহ পাঁচজন থাকছেন, যাঁদের অস্ট্রেলিয়ায় খেলার পুরোনো অভিজ্ঞতা আছে। বাকিরা স্টোকস, জ্যাক ক্রলি, জো রুট ও ওলি পোপ। ২০২১-২২ মৌসুমের সফরে উড ছিলেন দারুণ ছন্দে। ২৬.৬৪ গড়ে নিয়েছিলেন ১৭ উইকেট।
সেই সফরে হোবার্টে শেষ টেস্টে ৩৭ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার–সেরা বোলিং করেন উড। গোলাপি বলের দিবারাত্রির সেই টেস্টে কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছাড়াই মাঠে নেমেছিল ইংল্যান্ড। অ্যাডিলেডের দিবারাত্রির টেস্টেও বিশেষজ্ঞ স্পিনার খেলায়নি ইংল্যান্ড। তবে সিদ্ধান্তটি যে ভুল ছিল, সেটা পেসার ওলি রবিনসনকে দিয়ে স্পিন বোলিং করিয়ে বুঝিয়েও দিয়েছিল ইংল্যান্ড।
পার্থ টেস্টে ইংল্যান্ড দল: বেন স্টোকস (অধিনায়ক), জফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, শোয়েব বশির, হ্যারি ব্রুক, ব্রাইডন কার্স, জ্যাক ক্রলি, বেন ডাকেট, ওলি পোপ, জো রুট, জেমি স্মিথ (উইকেটকিপার) ও মার্ক উড।
অস্ট্রেলিয়ায় লাল বলের কোনো ম্যাচে ইংল্যান্ড সর্বশেষ কোনো বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছাড়াই মাঠে নেমেছে ১৯৯৮ সালের বক্সিং ডে টেস্টে। এ বছরের জুলাইয়ে কিয়া ওভালে ভারতের বিপক্ষে টেস্টেও তাদের দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার ছিল না। অফ স্পিনার বশির তখন আঙুলের চোটে দলের বাইরে। তাঁর জায়গায় আরেক স্পিনার লিয়াম ডসনকে নেওয়া হলেও চতুর্থ টেস্টের আগেই বাদ পড়েন।
অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে বশিরের ওপর থেকে আসা ‘রিলিজ পয়েন্ট’ আর ওভারস্পিন বেশ মানানসই। গত বছর ভারত সফরে তাঁকে দলে নেওয়ার সময় এসব দক্ষতার প্রশংসা করেছিলেন স্টোকস ও ম্যাককালাম।
অস্ট্রেলিয়ার স্পিনার নাথান লায়ন পার্থে দারুণ সফল। পাঁচ টেস্টে ২০.৮৬ গড়ে ২৯ উইকেট পেয়েছেন তিনি। অভিজ্ঞতায় বশিরের চেয়ে অনেক এগিয়ে।
বশির এখন পর্যন্ত ১৯ টেস্টে ৩৯.০০ গড়ে ৬৮ উইকেট নিয়েছেন। ২২ বছর বয়সী এই স্পিনার সম্প্রতি লায়নসের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচে ভুগেছেন। ২৪ ওভারে ১৫১ রানে পেয়েছেন মাত্র ২ উইকেট।