
১০ ইনিংসে ১৮০ রান ও ৬ উইকেট—এবারের সিপিএলে সাকিব আল হাসানের পারফরম্যান্সকে দশে কত দেবেন, তা আপনারাই ঠিক করুন।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) সাকিব আল হাসানের যাত্রা এ বছর শেষ। বাংলাদেশ সময় আজ সকালে এলিমিনেটরে ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সের কাছে ৯ উইকেট হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে তাঁর দল অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা ফ্যালকনস।
দুই মৌসুম বিরতি দিয়ে সিপিএলে ফিরেছিলেন সাকিব। এর আগে বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস, জ্যামাইকা তালাওয়াস ও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলা বাংলাদেশি অলরাউন্ডার প্রথমবার অ্যান্টিগার জার্সিতে কেমন করলেন?
সাকিব অ্যান্টিগার হয়ে সব কটি ম্যাচেই খেলেছেন। লিগ পর্বে ১০টির পর আজ এলিমিনেটরেও একাদশে ছিলেন সাকিব। সব মিলিয়ে ১১ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ব্যাট হাতে ২০ গড়ে ১৮০ রান করেছেন এই বাঁহাতি, ফিফটি একটি।
বল হাতে ৮.৩০ ইকোনমি রেটে নিয়েছেন ৬ উইকেট। তবে পুরো টুর্নামেন্টে সাকিবকে দিয়ে এবার মাত্র ২৩ ওভার বল করানো হয়েছে। বোলিং কোটা পূরণ করেছেন মাত্র দুটি ম্যাচে।
সিপিএলের এবারের মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান শাই হোপের। গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সের এই ব্যাটসম্যানের রান ৪৪৭। টুর্নামেন্টে ৪০০ রান করা একমাত্র ব্যাটসম্যান তিনি। এবারের আসরে সাতজন ব্যাটসম্যান করেছেন তিন শর বেশি রান।
রানের হিসাবে তাই সাকিব বেশ পিছিয়ে। এবার ব্যাটিং অর্ডারের চার, পাঁচ ও ছয়ে নেমেছেন সাকিব। মানে রান করার সুযোগ ছিল তাঁর। পরিসংখ্যান বলছে, সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
এরপরও একটা জায়গায় সাকিব খুশি থাকতে পারেন। সিপিএল ক্যারিয়ারে তাঁর স্ট্রাইক রেট ১১৬.৫১। তবে এবারের আসরে ব্যাটিং করেছেন ১৩৮.৪৬ স্ট্রাইক রেটে।
সাকিব এ বছর পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) তিনটি ও গ্লোবাল সুপার লিগে (জিএসএল) চারটি ম্যাচ খেলেছেন। এ ছাড়া খেলেছেন ম্যাক্স সিক্সটিতে। তবে এই টুর্নামেন্টের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে।
পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সাকিব যে তিন ম্যাচ খেলেছেন, সেখানের দুটিতেই আউট হয়েছেন শূন্য রানে। মানে খুব একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজে যেতে পারেননি।
গায়ানায় অনুষ্ঠিত জিএসএলে দুবাই ক্যাপিটালসের হয়ে প্রথম ম্যাচে অপরাজিত ফিফটি করলেও পরের তিন ম্যাচে ব্যর্থ। গ্রুপ পর্বের শেষ তিন ম্যাচে আউট হয়েছেন ১০ বলে ৭, ৫ বলে ৪ ও ৭ বলে ৩ করা করে।
সিপিএলের শুরুর কয়েকটি ম্যাচেও ব্যাট হাতে পুরোপুরি ব্যর্থ ছিলেন (১৬ বলে ১১, ১৩ বলে ১৩, ১৩ বলে ৭, ৭ বলে ৮) সাকিব।
তবে সেপ্টেম্বরের প্রথম দিনেই (বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী) ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে সেন্ট লুসিয়া কিংসের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি করেন সাকিব, যা তাঁর ক্যারিয়ারে যৌথভাবে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি ছিল। ইনিংসে সাকিবের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৩৪.৬১, যা স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতে ৩০ ছাড়ানো ইনিংসে তাঁর সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া আজ এলিমিনেটরে সাকিব ৯ বলে ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। সুনীল নারাইনের ৫ বলে নেন ১৮। টুর্নামেন্টে ব্যাটিং নিয়ে সাকিবের ইতিবাচ দিক বলতে এটুকুই। ১০ ইনিংস ব্যাট করে সাকিব ২০ বা এর বেশি করতে পেরেছেন মাত্র তিনটিতে। মজার ব্যাপার হলো, সিপিএলের এক মৌসুমে এর চেয়ে বেশি রান সাকিব কখনোই করেননি।
বোলার সাকিব আরও হতাশ করেছেন। উইকেট নিতে পেরেছেন মাত্র ৬টি। যেখানে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ইমরান তাহিরের উইকেট ১৮টি। অ্যান্টিগায় সাকিব অনেকটাই পার্টটাইম বোলারের মতো খেলেছেন। আজও বোলিংয়ে এসেছিলেন ষষ্ঠ বোলার হিসেবে।
সিপিএলে এটি ছিল সাকিবের ষষ্ঠ মৌসুম। ২০১৩ ও ২০১৯ সালে বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে জ্যামাইকা তালাওয়াস, ২০২২ সালে গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্স এবং এবার অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুডা ফ্যালকনসের হয়ে খেলেছেন।