গৌতম গম্ভীর গত বছর জুলাইয়ে ভারতের প্রধান কোচের দায়িত্ব পান। এরপর তাঁর অধীন ১৯ টেস্ট খেলে মাত্র ৭ জয় পেয়েছে ভারত। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয় ৩–০ ব্যবধানে, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২–০–তে। শুধু তা–ই নয়, ঘরের মাঠে তাঁর অধীন ভারত এ পর্যন্ত পাঁচ টেস্ট হেরেছে—ভারতের আর কোনো প্রধান কোচ ঘরের মাঠে এতগুলো টেস্ট হারেননি। গম্ভীরই ভারতের একমাত্র প্রধান কোচ ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে দুবার ধবলধোলাই হয়েছেন। এরপর তাঁর চাকরি নিয়ে প্রশ্ন না ওঠাই অস্বাভাবিক।
ভারত ক্রিকেট–পাগল দেশ। সমর্থক থেকে সংবাদমাধ্যমগুলো তাই প্রশ্ন তুলেছে জোরেশোরেই। এমনও গুঞ্জন উঠেছে, গম্ভীরকে সরিয়ে টেস্ট সংস্করণে ভিভিএস লক্ষ্মণকে নাকি কোচ বানানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এ বিষয়ে লক্ষ্মণকে প্রস্তাব দেওয়ার গুঞ্জনও উঠে এসেছিল ভারতের সংবাদমাধ্যমে। নিন্দুকেরাও বলেছেন, লাল বলের কোচিং বুঝতে গম্ভীরের সবার আগে রঞ্জি ট্রফির দলের কোচ হওয়া উচিত।
কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) গম্ভীরকে সরিয়ে টেস্ট সংস্করণে নতুন কোচ নিয়োগের পরিকল্পনা নেই। বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজীব শুক্লা ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘সংবাদমাধ্যমে প্রধান কোচ গম্ভীরকে নিয়ে যে জল্পনাকল্পনা চলছে, সে বিষয়ে আমি একেবারে স্পষ্ট করে বলতে চাই। বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়াও পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, গম্ভীরকে সরানোর কোনো পরিকল্পনা নেই কিংবা ভারতের জন্য নতুন প্রধান কোচ আনার কথাও ভাবা হচ্ছে না।’
এর আগে বিসিসিআই সচিব দেবজিৎ সাইকিয়াও বিষয়টি নিয়ে এএনআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন। ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে বিসিসিআই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানান তিনি, ‘সম্পূর্ণ ভুল খবর। পুরোটাই অনুমানভিত্তিক গুজব। কিছু স্বনামধন্য খবরের এজেন্সিও এটা প্রচার করছে। এর মধ্যে কোনো সত্যতা নেই। বিসিসিআই সরাসরি এই খবর অস্বীকার করছে। মানুষ যা খুশি ভাবতে পারে; কিন্তু বিসিসিআই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এটা (গম্ভীরকে সরিয়ে দেওয়া) কারও কল্পনার ফসল, যেখানে সত্যতা নেই। অল্প কথায় বলতে পারি, এটা ভিত্তিহীন খবর।’
ভারতের প্রধান কোচ হিসেবে ২০২৭ সালের নভেম্বরে শেষ হবে গম্ভীরের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ। চুক্তির এ পুরো সময়ই তিনি কোচ থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের সামনে আপাতত টেস্টের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ভারত এই টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন। আগামী বছর ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ভারত এবং শ্রীলঙ্কায় শুরু হবে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সূর্যকুমার যাদবের অধিনায়কত্বে প্রায় নতুন একটি দল নিয়ে এই টুর্নামেন্টে খেলবে গম্ভীরের ভারত।
আগামী বছর আগস্টে শ্রীলঙ্কায় পরবর্তী টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড সফরে। চলমান বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) চক্রে ভারতের ষষ্ঠ ও শেষ সিরিজটি হবে ২০২৭ সালের প্রথম প্রান্তিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ২০২৭ সালের বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে ৫টি টেস্ট ম্যাচ থাকবে। ২০২৭ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে জায়গা করে নিতে হলে ভারতকে বাকি নয়টি ম্যাচের মধ্যে অন্তত সাতটিতে জিততে হবে।