লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ঘাস কিনবেন?
‘হোম অব ক্রিকেট’খ্যাত ঐতিহাসিক লর্ডসের ঘাস বিক্রি হচ্ছে। কিনতে পারবেন যে কেউই। ১.২ মিটার বাই ০.৬ মিটার আকৃতির এক টুকরা ঘাসের দাম পড়বে ৫০ পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮ হাজার টাকার বেশি। আগামী মাসেই ঘাস তোলা হবে। কিনতে আগ্রহীরা তখন হাতে পেয়ে যাবেন।
১৮১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত লর্ডস অনেক কারণেই বিখ্যাত। ২০০৫ সালের আগপর্যন্ত এখানেই ছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সদর দপ্তর। একসময় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ছিল এমসিসি (মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব)। সেই এমসিসিরই মাঠ লর্ডস। বর্তমানে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) ও আইসিসি ইউরোপের কার্যালয় এখানে। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরোনো ক্রীড়া জাদুঘরগুলোর অন্যতম এবং ক্রিকেটবিষয়ক প্রকাশনার সবচেয়ে বড় গ্রন্থাগারের অবস্থানও এখানে।
এই লর্ডসের ক্রিকেট মাঠে খেলতে পারাকে সম্মানের চোখে দেখেন অনেক ক্রিকেটার। এখানে ৫ উইকেট ও সেঞ্চুরি করলে নাম ওঠে মর্যাদাকর ‘অনার্স বোর্ডে’। কিছুদিন আগেই লর্ডসে ‘অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার ট্রফি’র ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড–ভারত। বর্তমানে চলছে দ্য হানড্রেডের ম্যাচ।
যুক্তরাজ্যের দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, লর্ডস ক্রিকেট মাঠের আউটফিল্ডের ঘাস নতুন করে লাগানো হবে। আর তুলে ফেলা ঘাসগুলো কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এমসিসি। প্রাথমিকভাবে এমসিসি সদস্যদের কাছে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘এমসিসি ফাউন্ডেশনের জন্য তহবিল সংগ্রহ এবং মাঠের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে সহায়তা করতে আমরা সব সদস্যকে লর্ডসের ঘাসের একটি টুকরার মালিক হওয়ার সুযোগ দিচ্ছি—সেই মঞ্চের একটি অংশ, যেখানে অসংখ্য জাদুকরী মুহূর্তের জন্ম হয়েছে।’
এমসিসির সদস্যসংখ্যা ২৫ হাজার। তবে সাধারণ দর্শকও চাইলে লর্ডসের সবুজ ঘাসের এক টুকরা কিনতে পারবেন। বিক্রীত মোট অর্থের ১০ শতাংশ যাবে এমসিসি ফাউন্ডেশনে, বাকি অর্থ মাঠে ক্রিকেট অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। গতকাল লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের এক্স পেজ থেকেও ঘাস কিনতে আগ্রহীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, ‘এই শরতে যখন আমরা ঐতিহাসিক লর্ডস মাঠের আউটফিল্ড নতুন করে বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি, তখন ভক্তদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে পবিত্র মূল ঘাসের একটি টুকরা নিজেদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার। সংখ্যায় সীমিত, সংগ্রহ করা যাবে লর্ডস থেকে ২৯ বা ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫। মিস কোরো না!’
টেলগ্রাফ জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর আউটফিল্ডের মাঠ খোঁড়া হবে, তবে ২০টি পিচের মধ্যে মূল স্কয়ারটি অক্ষত রাখা হবে। উপরিভাগের ১৫ মিলিমিটার ঘাস কেটে ফেলা হবে, এরপর নতুন বীজ বপন করে পুরোপুরি নতুন একটি ঘাসের স্তর তৈরি করা হবে। মূলত সাম্প্রতিক সময়ে আউটফিল্ডে ফিল্ডারদের ডাইভের সঙ্গে ঘাস ওঠার ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
লর্ডসের আউটফিল্ড সর্বশেষ পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল ২০০২ সালে। তখন লক্ষ্য ছিল পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি করা। সেবারও ঘাস টুকরা টুকরা নিলামে তোলা হয়েছিল। প্রতিটি টুকরা ১০ পাউন্ড করে মোট দাম উঠেছিল ৩৫ হাজার। এর মধ্যে এক ব্যক্তি লর্ডসের ঘাস দিয়ে পুরো লন বানাতে ১ হাজার ২৬০ পাউন্ড খরচ করেছিলেন।