আবার দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলবেন মোস্তাফিজুর রহমান।
আবার দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলবেন মোস্তাফিজুর রহমান।

আইপিএলে মোস্তাফিজের সেরা ৫ পারফরম্যান্স

২০১৫ সালে জাতীয় দলে অভিষেকেই চমক। পরের বছরই আইপিএল থেকে ডাক। মোস্তাফিজুর রহমানের আইপিএল অভিষেকও হয়েছিল স্বপ্নের মতো। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে প্রথম মৌসুমেই ১৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট, ইকোনমি মাত্র ৬.৯০! সেবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে টুর্নামেন্ট জেতাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন মোস্তাফিজ।

এরপর দল বদলেছেন কয়েকবার। সাকিব আল হাসানের মতো মোস্তাফিজও হয়ে ওঠেন আইপিএলে বাংলাদেশের মুখ। তবে এবার মনে হচ্ছিল আর বুঝি আইপিএল খেলা হবে না মোস্তাফিজের। কিন্তু শেষদিকে এসে ভারত-পাকিস্তান সংঘাত পরিস্থিতি, অনেক বিদেশি ক্রিকেটারের ভারত ছেড়ে যাওয়া, সব মিলিয়ে হঠাৎ করেই সুযোগ চলে আসে মোস্তাফিজের সামনে। ডাক পান দিল্লি ক্যাপিটালসে।

এরই মধ্যে মোস্তাফিজকে ছাড়পত্রও দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), ১৮ থেকে ২৪ মে পর্যন্ত আইপিএল খেলবেন তিনি। বিসিবি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব-আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শুধু প্রথমটিতেই মোস্তাফিজকে পাওয়া যাবে।

আইপিএলে দিল্লির ম্যাচ বাকি এখনো তিনটি। ১১ ম্যাচে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার ৫ নম্বরে থাকা দিল্লির প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা বেশ ভালোভাবেই আছে। এই তিন ম্যাচে মোস্তাফিজ খেলেন কি না, খেললে কেমন করেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। সেই অপেক্ষায় থাকতে থাকতে ফিরে দেখা যাক, আইপিএলে মোস্তাফিজের স্মরণীয় পাঁচটি ম্যাচ:

৪/২৯: চেন্নাই সুপার কিংস-রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, ২০২৪

১৭তম আইপিএল মৌসুমের প্রথম ম্যাচ, মঞ্চ চেন্নাইয়ের চিপক স্টেডিয়াম। একদিকে চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই, অন্যদিকে ফাফ ডু প্লেসির বেঙ্গালুরু। মোস্তাফিজ বল হাতে পেলেন পঞ্চম ওভারে। প্রথম বলেই কাভারের ওপর দিয়ে মেরে দেন ফাফ, কিন্তু পরের বলেই কাটারে ধরা খেলেন। ধীরে আসা বল বুঝতে না পেরে শট মিস করে ফেলেন—ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ।

পরের উইকেট রজত পাতিদারের—ব্যাটের কানায় বল লেগে যায় ধোনির গ্লাভসে। এরপর ১২তম ওভারে বিরাট কোহলিকে ফেরানোর পরের বলেই ক্যামেরন গ্রিনকে বোল্ড! শেষ দুই ওভারে কিছু রান দিলেও আসল কাজটা করে ফেলেছিলেন আগেই। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে বাঁহাতি পেসারের হাতেই।

বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে ৪ উইকেটের ম্যাচে স্বীকৃতি।

৩/১৮: দিল্লি ক্যাপিটালস-কলকাতা নাইট রাইডার্স, ২০২২

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম, প্রতিপক্ষ নাইট রাইডার্স। টস জিতে বল করতে নামল দিল্লি। কুলদীপ যাদব টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দিলেন, মোস্তাফিজ ধ্বংসযজ্ঞ চালালেন মিডল আর লোয়ার মিডল অর্ডারে। নিতীশ রানা, রিঙ্কু সিং—দুজনকেই ফিরিয়ে দিলেন কাটারে। এরপর শেষ ওভারে তাঁর শিকার টিম সাউদি। মাত্র ১৮ রানে ৩ উইকেট! ম্যাচসেরার পুরস্কার পেলেন কুলদীপ, তবে সমান প্রশংসা পেলেন মোস্তাফিজও।

কলকাতার বিপক্ষে ৩ উইকেট নেওয়া ম্যাচে।

৩/১৬: সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, ২০১৬

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে ১৭৭ রান তোলে হায়দরাবাদ। তাড়া করতে নামা মুম্বাইয়ের টপ অর্ডার ধসিয়ে দেন আশিস নেহরা ও ভুবনেশ্বর কুমার। এরপর মোস্তাফিজুর রহমানের পালা। প্রথমে হার্দিক পান্ডিয়াকে ৭ রানে আউট করে মুম্বাইয়ের জন্য ম্যাচটা কঠিন করে তোলেন। পরে টিম সাউদি ও মিচেল ম্যাকক্লেনাহানকে ফিরিয়ে ৮৫ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় এনে দেন হায়দরাবাদকে।

৩/২০: রাজস্থান রয়্যালস-সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, ২০২১

দুই বছর পর আবার আইপিএলে মোস্তাফিজ। এবার রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে। ২২০ রান তাড়া করতে নেমে হায়দরাবাদ ওপেনার মনীশ পান্ডে ও জনি বেয়ারস্টো ৬ ওভারে ৫৭ রান তুলে ফেলেন। তবে পান্ডেকে ৩১ রানে ফিরিয়ে দিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন মোস্তাফিজ। এরপর মোহাম্মদ নবী ও রশিদ খানের উইকেটও তুলে নিয়ে মোস্তাফিজ ভীষণ চাপে ফেলেন তাঁর পুরোনো দলকে। ৫৫ রানে ম্যাচ হেরে যায় হায়দরাবাদ।

রাজস্থানের জার্সিতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচে।

৩/২৩: দিল্লি ক্যাপিটালস-গুজরাট টাইটানস, ২০২২

প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই ম‍্যাথু ওয়েডকে ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ। এরপর যখন তেওয়াটিয়া রানের গতি বাড়াতে চাইছিলেন, তখন থামিয়ে দিলেন তাঁকেও। শুভমান গিলের ঝলমলে ইনিংস সত্ত্বেও গুজরাটের রান থামল ১৭১-এ। ম্যাচ জিততে পারেনি দিল্লি, হেরে যায় মাত্র ১৪ রানে। কিন্তু মোস্তাফিজ ২৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বুঝিয়ে দেন, তাঁকে কেন বুঝেশুনে খেলতে হবে।