হৃদয়–লিটনের তৃতীয় উইকেটে ৪৮ বলে উঠেছে ৬৩ রান।
হৃদয়–লিটনের তৃতীয় উইকেটে ৪৮ বলে উঠেছে ৬৩ রান।

২০০ রান তাড়ায় এ কেমন ব্যাটিং বাংলাদেশের

তাওহিদ হৃদয় যখন ব্যাটিংয়ে নামেন, বাংলাদেশের রান ৪ ওভারে ৩৭। এরপর ১৩তম ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের রান ১০২। মাঝের সময়টায় তিনি ২২ বল খেলে রান করেছেন ১৭টি, বাউন্ডারি মাত্র একটি। অথচ ওই একই সময়ের মধ্যে লিটন দাস তুলেছেন ২৮ বলে ৪৬ রান।

শুধু লিটন নয়, গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গতকালের উইকেটে রান তোলা যে কঠিন কোনো কাজ ছিল না, সেটা বোঝা গেছে জাকের আলীর ২০ বলে ৩৬ রানের ইনিংসেও। কিন্তু দিন শেষের বাস্তবতা হচ্ছে—সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের ২০১ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ দল ১৬৪ রানেই অলআউট হয়ে গেছে। ম্যাচ হেরেছে ৩৭ রানের বড় ব্যবধানে।

এমন বড় হারের পর বাংলাদেশ দলের ব্যাটিংকে কাঠগড়ায় তুলেছেন খোদ স্পিন বোলিং কোচ মুশতাক আহমেদই।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান যে মাঠে খেলেছে, সে মাঠে গত রোববার লাহোর কালান্দার্স পিএসএল ফাইনাল জিতেছে ২০১ রান তাড়া করে। এ মাঠে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে আগে ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ছিল ১৯১। সে হিসাবে পাকিস্তান দলের ২০১ রান খুব বেশিও ছিল না। আবার একই মাঠে সর্বশেষ ছয় ম্যাচের চারটিতেই জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। কিন্তু বাংলাদেশ দল এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ।

লিটনের ৩০ বলে ৪৮–ই দলের সর্বোচ্চ।

২০২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে তোলে ২ উইকেটে ৪৫ রান। যে ম্যাচে ওভারপ্রতি ১০ রানের বেশি লাগে, সে ম্যাচে ৭ থেকে ১৬—এই ১০ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ৮১ রান। হারের কারণ যে ব্যাটিং, পরোক্ষে সেটাই বলেছেন মুশতাক, ‘এখনকার টি-টোয়েন্টিতে ইনটেন্ট থাকতে হয়। আপনি যখন ২০০ রান তাড়া করছেন, তখন আস্কিং রানরেট ১৩-এর ওপরে নিয়ে যেতে পারেন না। ওভারপ্রতি ১৩ রান দরকার হয়ে গেলে (ম্যাচ জেতাটা) কঠিন হয়ে যায়। ওই পর্যায়ে একজন আউট হয়ে গেলে নতুন ব্যাটসম্যানের জন্যও রান করা কঠিন। কৌশলগত জায়গায় আমরা আজ কম স্মার্ট ছিলাম।’

কূটনৈতিক ভাষায় মুশতাক যেটিকে ‘কম স্মার্ট ছিলাম’ বলেছেন, সেটা আদতে ব্যর্থতাই। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা দুই শ রান তাড়া করার সামর্থ্য রাখে বলেও মনে করেন বোলিং কোচ। যদিও রান তাড়ায় মাঝের ওভারেই ম্যাচ নাগালের বাইরে চলে গেলেও মানছেন এই সাবেক পাকিস্তান ক্রিকেটার, ‘লিটন যেভাবে শুরু করেছিল, মনে হচ্ছিল ফল আমাদের অনুকূলে আসবে। তবে ওভারপ্রতি ১৩-১৪ রান দরকার হয়ে পড়াটা অনেক বেশি। কোচ হিসেবে এ নিয়ে আমাদের কথা বলা দরকার। আশা করি, তাদের বোঝানো যাবে যে মাঝের ওভারে আরও ভালো ইনটেন্ট দরকার ছিল।’

সিরিজের প্রথম ম্যাচে বড় হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ দল।

বড় রান তাড়ায় ইনটেন্ট না থাকার যে কথা বলেছেন মুশতাক, সেটির জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী হৃদয়। যিনি ২২ বল খেলে ৮০-রও কম স্ট্রাইক রেটের কারণে সঙ্গের ব্যাটসম্যানকেও চাপে ফেলেছেন। মুশতাক অবশ্য হৃদয়ের নাম নিয়ে প্রশ্ন করার পর তাঁর সামর্থ্যের কথাই তুলে ধরেছেন, ‘আমার মনে হয় আজকে সে মোমেন্টাম পায়নি। সে কিন্তু ভালো খেলোয়াড়। ম্যাচ বদলে দিতে পারে। সে যখন বল মারে, ভালোভাবেই মারে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের হয়ে ভালো কয়েকটি ইনিংসও খেলেছে। আশা করি সে এই পিচে কী করতে হবে সেটা ভালো করে জানবে।’

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আগামীকাল, একই মাঠে।