
বয়স ৩৭ ছুঁইছুঁই। স্বাভাবিকভাবেই সেরা সময় পার করে এসেছেন সুনীল নারাইন। এবারের আইপিএলেও বল হাতে খুব একটা ভালো করতে পারছিলেন না। সর্বশেষ দুই ম্যাচে ছিলেন কিছুটা খরুচে, পাননি কোনো উইকেট।
প্রশ্নটা তাই কলকাতা নাইট রাউডার্সের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজগুলোতে বেশি উঠছিল—নারাইন কি ফুরিয়ে গেলেন?
না, নারাইন এখনো ফুরিয়ে যাননি। ‘বুড়ো’ বয়সেও যে তাঁর বোলিং অনেক কাছে রহস্যময় হয়ে আছে, আজ চোখের পলক ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে সেটাই যেন বুঝিয়ে দিলেন! দিল্লি ক্যাপিটালসের মুঠো থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নিয়ে ১৪ রানে জেতালেন কলকাতাকে।
নিজেদের মাঠ অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে কলকাতাকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল দিল্লি। টপ ও মিডল অর্ডারের ছয় ব্যাটসম্যানের অবদানে ৯ উইকেট হারিয়ে ২০৪ রান করেছিল কলকাতা। লক্ষ্য তাড়ায় ৯ উইকেটে ১৯০ রানে থেমেছে দিল্লি। এ জয়ে আইপিএলের প্লে–অফে খেলার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতা।
রান তাড়ায় এক সময় ১৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তুলে ফেলেছিল দিল্লি। ক্রিজে তখন দুই থিতু ব্যাটসম্যান অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল ও ওপেনার ফাফ ডু প্লেসি। এই পরিস্থিতি থেকে চোখের পলকে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন নারাইন। টপাটপ তুলে নেন ৩ উইকেট।
অথচ নিজের প্রথম ১৩ বলে ২৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন নারাইন। এরপর দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ১১ বলে মাত্র ৪ রান দিয়ে ফিরিয়েছেন অক্ষর, ট্রিস্টান স্টাবস ও ডু প্লেসিকে।
শুধু কি তাই? ‘অলস ফিল্ডার’ হিসেবে যে নারাইনের বদনাম আছে, সেই তিনি আজ সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট করেছেন এই মৌসুমে দিল্লির সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক লোকেশ রাহুলকে।
এর আগে ব্যাট হাতেও নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন। ওপেনিংয়ে নেমে পাওয়ারপ্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ২ চার ও ২ ছক্কায় ১৬ বলে ২৭ রান করে কলকাতাকে ঝোড়ো শুরু এনে দিয়েছেন।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—অলরাউন্ড প্যাকেজ হয়ে ওঠা নারাইন আজ ম্যাচসেরার পুরস্কারও জিতেছেন।
কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০ ওভারে ২০৪/৯ (রঘুবংশী ৪৪, রিংকু ৩৬, নারাইন ২৭, গুরবাজ ২৬, রাহানে ২৬, রাসেল ১৭; স্টার্ক ৩/৪৩, অক্ষর ২/২৭, বিপ্রজ ২/৪১, চামিরা ১/৪৬)।
দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৯০/৯ (ডু প্লেসি ৬২, অক্ষর ৪৩, বিপ্রজ ৩৮; নারাইন ৩/২৯, বরুণ ২/৩৯, অরোরা ১/১৯, রাসেল ১/২২, অনুকূল ১/২৭)।
ফল: কলকাতা নাইট রাইডার্স ১৪ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সুনীল নারাইন।