
প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় দিনে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ধানমন্ডি ক্লাব ও পারটেক্স স্পোর্টিংকে হারিয়েছে শাইনপুকুর। শরীফুলের দাপটে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে জিতেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। এর মধ্যেই আলোচনায় এসেছে আম্পায়ারিং–বিতর্ক।
প্রিমিয়ার লিগে জয় দিয়ে শুরু করেছে ধানমন্ডি ক্লাব। গত আসরে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব থাকলেও এবার তারা নাম বদলেছে। লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে ধানমন্ডি ক্লাব।
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৬২ রান করে ব্রাদার্স। দলটির হয়ে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই ফিফটি তুলে নেন। ৯৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়তেই অবশ্য ২৪.৪ ওভার খেলে ফেলেন দুই ওপেনার মাহফিজুল ইসলাম ও ইমতিয়াজ হোসেন।
৫ চারে ৭৫ বলে ৫০ রান করা ইমতিয়াজকে ফিরিয়ে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। আরেক ওপেনার মাহফিজুল ১১১ বল খেলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৪ রান করে আউট হন। তিনে নেমে ৭৬ বলে ৭৩ রান করেন মিজানুর রহমান।
বড় রান তাড়ায় নেমে শুরুর দিকে চাপে ছিল ধানমন্ডি ক্লাবও। দুই ওপেনার আশিকুর রহমান (২৩) ও হাবিবুর রহমান (৩২) খুব বড় করতে পারেননি ইনিংস। এরপর ফজলে মাহমুদের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়েন ইয়াসির আলী। ৪৭ বলে ৪১ রান করে ইয়াসির আরাফাতের বলে আউট হন ইয়াসির।
৭৮ বলে ৫৫ রান করে অলক কাপালির বলে ফজলে মাহমুদও আউট হয়ে যান। তবে বাকি দায়িত্বটা কাঁধে নেন অধিনায়ক নুরুল হাসান, ৫৩ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
গত আসরে লিগ পর্বে দ্বিতীয় হয়ে চমকে দিয়েছিল শাইনপুকুর। জয় দিয়ে শুরু করেছে তারাও। পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে ৭৭ রানে হারিয়েছে শাইনপুকুর।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে অনিক সরকারের ৭৮ বলে ৭৭ ও রায়ান রাফসান রহমানের ৮১ বলে ৮৭ রানে ভর করে ৫ উইকেটে ২৯৮ রান করে শাইনপুকুর। শেষ দিকে মিনহাজুল আবেদীন ৩৫ বলে ৩০ ও জুবায়ের হোসেন ১৪ বলে করেন ৩৯ রান।
রান তাড়ায় নেমে সুবিধা করতে পারেনি পারটেক্স। ৪৯.৫ ওভারে ২২১ রানে অলআউট হয় তারা। পারটেক্সের হয়ে ৬৭ বলে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন জাওয়াদ রোয়েন। শাইনপুকুরের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন আল ফাহাদ ও রাফিউজ্জামান রাফি।
বিকেএসপিতে হওয়া অন্য ম্যাচটিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ৯৩ রানে অলআউট হয় গাজী গ্রুপ। রান তাড়ায় নেমে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দুই ওপেনার তানজিদ হাসান ও সাইফ হাসান।
প্রিমিয়ার লিগে লম্বা সময় ধরে আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক ছিল। এবার ম্যাচগুলো টিভিতে সম্প্রচারিত হচ্ছে, রাখা হয়েছে তৃতীয় আম্পায়ারও। কিন্তু এবার বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়াল সেই তৃতীয় আম্পায়ারই। ঘটনাটি ঘটে গতকাল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ও রূপগঞ্জ টাইগার্সের ম্যাচে।
ইরফান শুক্কুরের রানআউটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে তৃতীয় আম্পায়ারকে সিগন্যাল দেন মাঠের আম্পায়ার ইশতিয়াক আহমেদ নাদিম। কিন্তু পরে দেখা যায়, ম্যাচে তৃতীয় আম্পায়ারই নেই! আশ্চর্যের বিষয়, সঙ্গে সঙ্গে আঙুল উঁচু করে আউট দিয়ে দেন মাঠের আম্পায়ার মনিরুজ্জামান।
এ নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক—ম্যাচ রেফারি আখতার আহমেদের সঙ্গে তর্কে জড়ান প্রাইম ব্যাংকের প্রধান কোচ তালহা জুবায়ের, অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর ও ম্যানেজার দেব চৌধুরী। এ ঘটনায় তাঁদের শাস্তিও দেওয়া হয়েছে। বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, আম্পায়ারকেও কয়েক ম্যাচের জন্য ফিল্ড আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব না দিতে টেকনিক্যাল কমিটির কাছে সুপারিশ করেছে সিসিডিএম।
এ ঘটনা নিয়ে জানতে চাইলে সিসিডিএমের সদস্যসচিব সাজ্জাদ হোসেইন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, কারিগরি ত্রুটির কারণে কাল ওই মুহূর্তে তৃতীয় আম্পায়ারকে দেখা যায়নি। তবে আজ থেকে সবকিছু ঠিকঠাক আছে।