মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধরত সেনাদের স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় উৎসর্গ ইউক্রেনের
মাতৃভূমির জন্য যুদ্ধরত সেনাদের স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয় উৎসর্গ ইউক্রেনের

বিশ্বকাপ বাছাই

রাশিয়া যুদ্ধে ‘শেষ রক্তবিন্দু’ দিয়ে লড়াই করা সেনাদের জয় উৎসর্গ ইউক্রেনের

কাল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউরোপ অঞ্চলের প্লে অফে আবেগময় এক জয় পেয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়ার আগ্রাসনে ছিন্নভিন্ন ইউক্রেন স্কটল্যান্ডকে হারিয়েছে ৩-১ গোলে। আগামী রোববার কার্ডিফে ওয়েলসের বিপক্ষে জয় পেলেই নিজেদের অস্তিত্বের জন্য যুদ্ধরত ইউক্রেন ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। ইউক্রেন কোচ ওলেক্সান্দার পেত্রাকভ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ এ জয়কে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ইউক্রেনের সেনাদের উৎসর্গ করেছেন। পেত্রাকভের মতে, ইউক্রেনের সেনারা মাতৃভূমির সম্ভ্রম রক্ষায় নিজেদের শেষ রক্তবিন্দুও ঢেলে দিচ্ছেন।

আবেগের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই কোচ পেত্রাকভের মধ্যে

গ্লাসগোয় স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবেই আবেগ এখানে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। কোচ পেত্রাকভ সেটিই জানিয়েছেন, ‘আমার আর কোনো আবেগ নেই। ভেতরের সব আবেগ আমি মাঠে দিয়ে এসেছি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টা আমার নয়, আমাদের নয়, এই জয় ওই সেনাদের, যাঁরা মাতৃভূমির জন্য নিজেদের শেষ রক্তবিন্দু ঢেলে দিয়ে যুদ্ধ করছেন। এই জয় আমার মাতৃভূমির। দেশের জন্য এটি বিরাট এক জয়।’

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ে দলগত প্রচেষ্টাই বড় করে দেখছেন পেত্রাকভ, ‘এটা দলগত প্রচেষ্টার ফসল। খেলোয়াড়েরা দেশের মানুষের জন্য জিততে চেয়েছে। তাদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে চেয়েছে। আমাদের এই খেলা দেশের জন্য যুদ্ধরত সেনারা দেখেছেন, যুদ্ধের আতঙ্কে অস্থির হয়ে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য লড়তে থাকা ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ দেখেছে, খেলোয়াড়েরা তাদের জন্যই নিজেদের সবটা দিয়ে লড়েছে।’

জিনচেঙ্কোর দেশপ্রেম মাঠে পরিণত হয়েছিল পারফরম্যান্সে

ম্যাচের ঠিক আগে দিয়ে টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে দেশের পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন ইউক্রেন তারকা ওলেক্সান্দার জিনশেঙ্কো। মাঠে তাঁর পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। দলের জয়ে বড় ভূমিকাই ম্যানচেস্টার সিটির এই তারকা ফুটবলারের। কোচ পেত্রাকভের মতে, জিনশেঙ্কোর মতো দেশপ্রেমিক দলের সম্পদ, ‘জিনশেঙ্কোর মতো দেশপ্রেমিক আমি খুব কমই দেখেছি। সে দেশের প্রতি আবেগপ্রবণ। মাঠে সেই আবেগের প্রতিফলন আমি দেখেছি। ইউক্রেন যখন আক্রমণের শিকার হলো, তখন জিনশেঙ্কোর মনোভাবটা ছিল এমন যেন সে নিজেই ব্যক্তিগতভাবে হামলার শিকার হয়েছে।’

আরতাম দোভবিকের করা ইউক্রেনের তৃতীয় গোলের মুহূর্ত

স্কটল্যান্ডের মানুষের প্রতিও ভালোবাসা জানিয়েছেন পেত্রাকভ, ‘স্কটল্যান্ডে পৌঁছানোর পর সবাই আমাদের এমনভাবে স্বাগত জানিয়েছে যে আমরা আপ্লুত। ম্যাচের আগের দিন আমরা গ্লাসগোর রাস্তায় হেঁটেছি। সবাই আমাদের দিকে হাত নেড়েছে। মানুষ এগিয়ে এসে আমাদের শুভকামনা জানিয়েছে। তাদের মনোভাব এমন ছিল যে মনে হয়েছে আমরা নিজেদের দেশেই খেলছি। একবারের জন্য মনে হয়নি আমরা তাদের বিপক্ষেই মাঠে খেলতে নামব। স্কটল্যান্ডের মানুষ এ কঠিন সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’