Thank you for trying Sticky AMP!!

শৈশবের দরজা খুলেই কেঁদে ফেললেন নেইমার

ঘরের দরজা খুলছেন নেইমার। জানতেন না কী চমক অপেক্ষা করছে তাঁর জন্য। ছবি: টুইটার
>বড় হওয়ার পর কোথাও নিমন্ত্রণে গিয়ে যদি দেখেন শৈশবে যে বাসায় থাকতেন, অবিকল সেই একই বাসা, একই কামরা আর একই আসবাব! বিস্ময়ে চোয়াল ঝুলে পড়ার কথা। নেইমারও বিস্মিত হয়েছেন, আবেগতাড়িত হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন। ব্রাজিলের এক টিভি অনুষ্ঠান নেইমারকে এই চমকই উপহার দিয়েছে

সান্তোসে যোগ দেওয়ার আগে ১১ বছর বয়সে নেইমার যোগ দিয়েছিলেন পর্তুগিজ সানতিয়েস্তা দলে। ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাঁর পরিবার মোগি দাস ক্রুজেস থেকে বসত গেড়েছিল সাও ভিসেন্তে অঞ্চলে। কবুতরের খোপের মতো কয়েকটি কামরার ছোট্ট একটি ঘর। এই ঘরেই পরিচর্যা পেয়েছে নেইমারের বড় ফুটবলার হয়ে ওঠার স্বপ্ন। আজ সেই স্বপ্ন যখন বাস্তবে মহিরুহসম, তখন শৈশবের সেই ফেলে আসা ঘরের কথা কি বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারটির কখনো মনে পড়ে?

অবিকল শৈশবের সেই কামরা! মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন নেইমার। ছবি: সংগৃহীত

মনে পড়ে বলেই নেইমার কাঁদলেন। এই আবেগতাড়িত কান্না তাঁর ফেলে আসা পথের শুরুটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য। সাও ভিসেন্তে থেকে শুরু হওয়া সেই পথ ধরে নেইমার এখন রাশিয়ায়। ‘হেক্সা’ জয়ের মিশনে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশটিতে পা রেখেছেন সতীর্থদের নিয়ে। তার আগে দেশে থাকতে নেইমারকে সপরিবারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ব্রাজিলের জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠান ‘ক্যালদেইরো দো হাক’। নেইমার তাঁর মা-বাবা ও বোনকে নিয়ে সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে উপহার পেয়েছেন তাঁর ক্যারিয়ারের ‘অন্যতম সেরা নৈবেদ্য’। নেইমার যেন চেপে বসেছিলেন টাইম মেশিনে।

শৈশবের সেই ক্যাসেট প্লেয়ার, সেই টিভি। নিবিড় মমতায় দেখছেন নেইমার। ছবি: সংগৃহীত

তা, কী সেই নৈবেদ্য, যা দেখে নেইমার চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি? আসলে অনুষ্ঠানটির ‘স্ট্যান্ট শো’র অংশ হিসেবে আয়োজকেরা ব্রাজিল ফরোয়ার্ডকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন। বলা বাহুল্য, তাঁরা এই লক্ষ্যে পুরোপুরি সফল। পর্তুগিজ সানতিয়েস্তায় খেলাকালীন সাও ভিসেন্তে অঞ্চলে নেইমারের পরিবার যে বাসায় থাকত অবিকল সে রকম একটি বাসা-ই বানিয়েছিলেন অনুষ্ঠানটির আয়োজকেরা। সেই একই রকম শোয়ার ঘর, একই খাবার ঘর, একই বসার ঘর। এমনকি সেই সময়ে নেইমারের বাবা-মা যেসব আসবাব ব্যবহার করতেন, অবিকল সে রকম আসবাবে সাজিয়েই ফেরানো হয়েছিল নেইমারের শৈশব।

সাও ভিসেন্তের সেই ঘরে নেইমারের নিজের একটি ছোট্ট কামরা ছিল। ১৫ বছর পর সেই ঘরের ‘রেপ্লিকা’তে পা রাখবেন নেইমার কি তা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পেরেছিলেন? পারেননি বলেই টিভি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজের কামরার দরজা খুলতেই তাঁর চক্ষু চড়কগাছ! সবকিছু সেই আগের মতোই সাজানো। একপাশে ছোট্ট একটি ফ্রিজ, একটা আলমারি, টিভি, কয়েকটি ট্রফি, ফুটবল ও খেলার শর্টস-জার্সি। এসব দেখে নেইমার চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।

নেইমার ছোট থাকতে তাঁদের ঘরের বসার কক্ষ ঠিক এমন ছিল। দরজাটাও পরখ করে দেখছেন ব্রাজিল তারকা। ছবি: সংগৃহীত

সাজানো সেই কামরায় কিছুক্ষণ পায়চারি করেছেন। ধরে আসা গলায় কিছু একটা বিড়বিড় করে বলতে গিয়েই নেইমার কেঁদে ফেলেন। এ সময় তাঁর মা নাদিন পাশে ছিলেন। তাঁকে জড়িয়ে ধরে ২৬ বছর বয়সী ছেলের সে কী কান্না! পরে নাদিন বলেছেন, ‘সে আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেছে, কেন মা?...জবাবে ঠিক কি বলা উচিত বুঝতে পারিনি।’

অভূতপূর্ব এই আয়োজনে ভীষণ চমকে যাওয়া নেইমার পরে ইনস্টাগ্রামে টিভি সঞ্চালক লুসিয়ানো হাককে ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি। অনুষ্ঠানের কিছু ছবিসহ ক্যাপশনে নেইমার লেখেন, ‘আমার জন্য অবিশ্বাস্য এবং অন্যতম সেরা কিছু নৈবেদ্যর একটি আজ আপনারা দেখতে পাচ্ছেন। এই মুহূর্তটা উপহার দেওয়ার জন্য লুসিয়ানো হাক এবং তাঁর সহকর্মীদের ধন্যবাদ।’

নেইমারকে নিয়ে সেই অনুষ্ঠানের ভিডিও লিংক: