
ইসরায়েলকে ফুটবল প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ফিফা, উয়েফা এবং জাতীয় ফুটবল সংস্থাগুলোর প্রধানদের কাছে চিঠি দিয়েছেন তুরস্ক ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম হাজিওসমানোউলু। শুক্রবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করে।
ইউরোপিয়ান ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলকে নিজেদের টুর্নামেন্ট থেকে সাময়িক স্থগিত করার বিষয়ে বৈঠক করতে পারে বলে জানিয়েছে একাধিক ইউরোপিয়ান সংবাদমাধ্যম। যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার কোনো প্রচেষ্টা তারা সফল হতে দেবে না। পক্ষে–বিপক্ষে এমন আলোচনার মধ্যেই হাজিওসমানোউলুর এই পদক্ষেপের খবর সামনে এল।
আনাদোলু এজেন্সির বরাত দিয়ে হাজিওসমানোউলুর চিঠি পাঠানোর কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হাজিওসমানোউলু চিঠিতে লিখেছেন, ‘সভ্যতার মূল্যবোধ ও শান্তির রক্ষক দাবি করলেও খেলাধুলার দুনিয়া ও ফুটবল প্রতিষ্ঠানগুলো লম্বা সময় ধরে নীরবতা পালন করছে। এই মূল্যবোধ দ্বারা চালিত হয়ে আমরা বাধ্য হয়েছি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করতে। কারণ, গাজা ও আশপাশে ইসরায়েল রাষ্ট্রের অবৈধ, অমানবিক ও একেবারেই অগ্রহণযোগ্য কার্যক্রম চলছে।’
হাজিওসমানোউলু চিঠিতে আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি অনেক দিন ধরেই ভয়াবহ ছিল, তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হস্তক্ষেপের কারণে বিষয়টি নতুন মাত্রায় জরুরি ও সংকটপূর্ণ হয়ে উঠেছে।’
তবে উয়েফা নিষেধাজ্ঞার আশঙ্কা নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের এক মুখপাত্র। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের সামনে এমন কোনো ইঙ্গিত নেই। জাতীয় দল এখন আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতিতে মনোযোগ দিচ্ছে।’
১৯৭৪ সালে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন থেকে ভোটাভুটির মাধ্যমে ইসরায়েলকে বহিষ্কার করা হয়, কারণ কয়েকটি দেশ তাদের বিপক্ষে খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। ১৯৯১ সালে উয়েফা ইসরায়েল জাতীয় দলকে ইউরোপীয় ফুটবলে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয়। এক বছর পর ইসরায়েলি ক্লাবগুলো উয়েফার প্রতিযোগিতায় নাম লেখায়। ১৯৯৪ সালে দেশটি পূর্ণ সদস্যপদ পায়।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন বলেছিল, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল গণহত্যা চালিয়েছে। এরপরই জাতিসংঘের একদল বিশেষজ্ঞ ও স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে খেলাধুলায় নিষেধাজ্ঞার দাবি তোলেন।
ইসরায়েল অবশ্য নিয়মিতভাবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, গাজায় তাদের অভিযান আত্মরক্ষার অংশ। তারা জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে ‘বিকৃত ও মিথ্যা’ বলে অভিহিত করেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার পর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে গাজায় অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। হতাহত মানুষের সংখ্যা সম্পর্কে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থাও এ তথ্যকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করে