
ইরানি তরুণী মাসা আমিনি নিহত হয়েছিলেন নীতি পুলিশের আঘাতে। মাসার অপরাধ ছিল, তিনি মাথায় হিজাব ঠিকমতো পরেননি। এর পর থেকেই প্রতিবাদ–বিক্ষোভে উত্তাল ইরান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গত কয়েক মাসে নিহত হয়েছেন শত শত বিক্ষোভকারী। আন্দোলন দমনের এই নীতি গোটা দুনিয়াতেই হয়েছে সমালোচিত। ইরানের ভেতরেও এ নিয়ে ক্ষোভ কম নয়। সরকারের দমননীতির প্রতিবাদ জানিয়েছেন দেশটির সেলিব্রিটিরা। এ জন্য মূল্যও দিয়েছেন তাঁরা। অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নিপীড়নেরও শিকার হতে হয়েছে তাঁদের। আলী নাসের আজাদানি নামের ২৬ বছর বয়সী এক ফুটবলারকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে।
ইরানের হয়ে রেকর্ডসংখ্যক আন্তর্জাতিক গোলের মালিক ফুটবল তারকা আলী দাইয়িও এর বাইরে নন। তিনি প্রকাশ্যেই বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি দমন–পীড়নের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সরকারকে বলেছিলেন, সহিংস পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধান করার জন্য। আলী দাইয়িকে এর পরিণামই ভোগ করতে হয়েছে। পরিবার নিয়ে বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। গত সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভের পক্ষে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন।
স্কাই নিউজ জানিয়েছে, ছুটি কাটাতে সপরিবার দুবাই যাওয়ার কথা ছিল দাইয়ি পরিবারের। বিমানে চেপেছিল তারা। কিন্তু পার্সিয়ান গালফ সাগরের কিশ দ্বীপে তাদের বিমান নামিয়ে দেওয়া হয়। আলী দাইয়ির সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও কন্যা ছিলেন। দাইয়ির স্ত্রী–কন্যাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন ইরানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।
ইরানের সরকারঘেঁষা সংবাদ সংস্থা তাসনীম জানিয়েছে, ‘আলী দাইয়ির স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে কিছুদিন আগে সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছিল। তিনি সেই আদেশ অমান্য করে অবৈধভাবে বিদেশ যাচ্ছিলেন, তাই তাঁদের আটক করা হয়েছে।’
ইরানের হয়ে রেকর্ড ১৪৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন আলী দাইয়ি। খেলেছেন ১৯৯৮ ও ২০০৬ বিশ্বকাপ। ১০৯ গোল করে তিনি ইরানের ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। তিনি আন্তর্জাতিক ফুটবলেও সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। ২০২১ সালে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সেই রেকর্ড ভেঙে দেন। ইরানের ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফুটবলার এই আলী দাইয়ি।