Thank you for trying Sticky AMP!!

নিজের দ্বিতীয় গোলটি করার পর বসুন্ধরার খেলোয়াড় দরিয়েলতনের জার্সি খুলে উদ্‌যাপন

পিছিয়ে পড়েও ওডিশাকে হারাল বসুন্ধরা কিংস

ম্যাচের ১৯ মিনিটেই কিংস অ্যারেনাকে নিস্তব্ধ করে এগিয়ে গিয়েছিল ওডিশা এফসি। কিন্তু গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ভারতের ওডিশার বিপক্ষে আজ ৩–২ গোলে জিতেছে বসুন্ধরা কিংস। মালদ্বীপের মাজিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩–১ গোলে হেরেছিল কিংস। তারপর আজ ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের মাঠে এবারের এএফসি কাপে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়নরা।

Also Read: সেই ভিয়েতনামের কাছে হেরে শুরু বাংলাদেশের

তবে ম্যাচের ধারার বিরুদ্ধেই প্রথম গোলটা করেছিলেন ওডিশার ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দিয়েগো মরিসিও দি ব্রিতো। মাওয়ামিং থাঙ্গার থ্রু থেকে বল ধরে গোলটি করেছিলেন। ম্যাচে তখন বসুন্ধরা কিংসের আধিপত্য। খেলা শুরুর পর থেকেই বলের দখল ছিল কিংসের খেলোয়াড়দের পায়েই। ওডিশার গোলটির পরই জেগে উঠেছিল কিংস। এর পর থেকে ম্যাচের পুরোটাই স্বাগতিকদের।

গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়েছে কিংস। কিন্তু গোলটাই আসছিল না। ২৪ মিনিটে উজবেকিস্তানের ববুরবেক ইউলদাশোভের থ্রু থেকে বল পেয়ে ব্রাজিলিয়ান দরিয়েলতন যে মিসটি করলেন, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন! ২৭ মিনিটে মাঠের মাঝামাঝি জায়গা থেকে রবসন দা সিলভার থ্রু ধরতেই পারলেন না রাকিব হোসেন। সামনে ছিলেন শুধু ওডিশার গোলকিপার আমরিন্দার সিং।

মিগেইলের গোলে সমতায় ফেরার পর বসুন্ধরার খেলোয়াড়দের উদ্‌যাপন

৩১ মিনিটে ওডিশার বক্সের মধ্যে ঢুকে দরিয়েলতনের কাটব্যাক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন রবসন। কিংস অ্যারেনায় তখন রাজ্যের হতাশা। সেই হতাশা আরও বাড়িয়ে দেন দরিয়েলতন নিজেই। মিগেইলের ক্রস থেকে দরিয়েলতন বলই ধরতে পারেননি। বলটা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার পেয়ে গেলে গোল না করতে পারাটাই কঠিন হতো। মিস আরও হয়েছে। কিংসের আরেক উজবেক ফুটবলার আশরোর গফুরভ–রবসনের যুগল আক্রমণ থেকে বল পেয়েছিলেন দরিয়েলতন। কিন্তু তিনিও কিছুই করতে পারেননি।

কিংস অ্যারেনায় উপস্থিত হাজার সাতেক দর্শকের অপেক্ষার অবসান ঘটে ৩৮ মিনিটে। ডান দিক দিয়ে রবসন দারুণভাবে বল নিয়ে ঢুকে গোলমুখে যে ক্রস ফেলেন, সেটি ওডিশার গোলকিপার ফিস্ট করলেও এসে পড়ে মিগেইলের মাথায়। এই ব্রাজিলিয়ান অবশ্য এবার আর ভুল করেননি। হেডে গোল করেন।

Also Read: মাজিয়ার কাছে বড় হার কিংসের

৪৫ মিনিটে কিংস অ্যারেনাকে উল্লাসে ভাসিয়ে বসুন্ধরা কিংসকে ২–১ গোলে এগিয়ে নেন দরিয়েলতন। বিশ্বনাথের থ্রু থেকে বাঁ প্রান্তে বল পেয়ে রাকিব সুন্দর একটা ক্রস ফেলেছিলেন ওডিশার বক্সে। তা থেকে দারুণ হেডে গোল করে দরিয়েলতন নিজের গোলের খরা কাটান। দরিয়েলতন এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে শারজা এফসির বিপক্ষে ওয়ান টু ওয়ান জায়গা থেকে গোল মিস করেছিলেন। এএফসি কাপেও মালেতে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে দরিয়েলতন কয়েকটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছিলেন।

এগিয়ে গিয়েও বসুন্ধরা ওডিশাকে চাপে রেখেছিল। ৫৪ মিনিটে ৩–১ গোলে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা। নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন দরিয়েলতন, এই গোলটিও আসে রবসনের থ্রু থেকে। ফিনিশিংটি ছিল দারুণ ঠান্ডা মাথায়। দরিয়েলতন আজ হ্যাটট্রিকও পেতে পারতেন। ৭৫ মিনিটে রবসনের কাটব্যাক থেকে গোলকিপারের গায়ে মেরেছেন। দ্বিতীয়ার্ধে ওডিশা তাদের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ফিজির রয় কৃষ্ণাকে মাঠে নামায়। এই রয় কৃষ্ণা ২০২১ সালে বসুন্ধরা কিংসকে এএফসি কাপে যথেষ্ট বেগ দিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য তখন খেলতেন মোহনবাগানে।

নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে জার্সি খুলে শক্তির জানান দেন দরিয়েলতন

৫৭ মিনিটে জাপানি ফুটবলার সাকামতোর ক্রস থেকে মাওয়ামিং থাঙ্গার হেড বারে লেগে ফিরে এলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় বসুন্ধরা। ৫৭ মিনিটে অবশ্য আর ওডিশার গোল ঠেকাতে পারেননি আনিসুর রহমান জিকোর জায়গায় কিংসের গোলপোস্ট সামলানো মেহেদী হাসান। সাকামতোর ক্রস থেকে গোল করেন জেরি লালরিনজুয়ালা। দ্বিতীয়ার্ধে বসুন্ধরা কিংসও গোল পেতে পারত। ৭৫ মিনিটে দরিয়েলতনের মিসটি তো ছিলই, এর কিছুক্ষণ পরই রবসনের ক্রস থেকে ইউলদাশোভের হেড ক্রসবারে লেগে প্রতিহত হয়।

Also Read: সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা দিতে চায় বাংলাদেশ

খেলার শেষ দিকে ওডিশা গোলের জন্য ছিল মরিয়া। মূলত রয় কৃষ্ণা বারবারই বসুন্ধরার রক্ষণে আতঙ্ক ছড়িয়েছেন। এ সময় কিংস কিছুটা রক্ষণাত্মকও হয়ে পড়ে। প্রতি–আক্রমণ থেকে মিগেল, জিন চার্লস, সাদ উদ্দিন, রাকিব, রবসনরা ওডিশাকে চাপে ফেলছিলেন বটে, কিন্তু গোল করার মতো সুযোগ সেভাবে তৈরি করতে পারেননি। ৮১ মিনিটে রবসন একটা গোল পেলেও পেতে পারতেন।

আজ বসুন্ধরা কিংস তপু বর্মণ, গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো আর শেখ মোরছালিনকে ছাড়াই মাঠে নেমেছিল। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তাঁদের নিষিদ্ধ করেছে কিংস কর্তৃপক্ষ। তবে নিয়মিত খেলোয়াড়দের ছাড়াও বসুন্ধরা আজ দুর্দান্তই খেলেছে।