প্রাক্–মৌসুম প্রস্তুতি নিতে পিএসজির জাপান যাত্রার আগের দিন ঘটেছিল এই ঘটনা। প্রেমিকাসহ পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মাকে বেঁধে রেখে হয়েছে ভয়াবহ এক ডাকাতি। শুক্রবার ভোররাতে ইতালিয়ান এই গোলরক্ষকের প্যারিসের বাসায় হানা দেয় ডাকাত দল। সেদিন ডাকাতেরা গয়না, ঘড়ি ও চামড়ার তৈরি বিলাসবহুল পণ্য নিয়ে যায়।
সব মিলিয়ে দোন্নারুম্মা পরিবারের ক্ষতি হয়েছে ৫ লাখ ইউরোর মতো, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬ কোটি ৪ লাখ টাকা। দোন্নারুম্মার বাসায় ডাকাতির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে ফরাসি সংবাদমাধ্যম ‘অ্যাকচু১৭’। এবার সেই ‘রোমহর্ষক’ ঘটনার বর্ণনা দিলেন দোন্নারুম্মা নিজেই।
সেদিন ঘটনার পর ডাকাতদের হাত থেকে ছাড়া পেয়েই পার্শ্ববর্তী এক হোটেলে আশ্রয় নেন দোন্নারুম্মা ও তাঁর প্রেমিকা আলেসিয়া এলিফান্তে। হোটেলকর্মীরা ঘটনা জানার পর অ্যালার্ম বাজান। এরপর দোন্নারুম্মা ও এলিফান্তেকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ইতালিয়ান সংবাদপত্র লিবেরোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দোন্নারুম্মা সেই রোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে, ‘আকস্মিকভাবে রাত তিনটায় আপনার ঘরে যখন কিছু (অপরিচিত) মানুষের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাবেন, এর চেয়ে খারাপ অনুভূতি আর হয় না। আমি নিশ্চল হয়ে ছিলাম এবং আলেসিয়াকে (এলিফান্তেকে) বাধ্য করা হয় মূল্যবান সামগ্রী তাদের হাতে তুলে দিতে। যেহেতু তদন্ত চলছে, আমি এর চেয়ে বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
ভাষাগত সমস্যার কারণে ডাকাতদের সঙ্গে কথা বলতে সমস্যা হচ্ছিল দোন্নারুম্মার। সে সময় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কাও করছিলেন। এলিফান্তে এখনো আতঙ্ক থেকে বের হতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেছেন দোন্নারুম্মা। নিজেদের সেই ভয়াল অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে পিএসজি গোলরক্ষক আরও বলেছেন, ‘আমি শক্তিহীন ছিলাম। আমাকে বেঁধে ফেলা হয়েছিল, কিছুই করতে পারছিলাম না। আর আমি ভালোভাবে ফ্রেঞ্চ বলতে পারি না। তাই তাদেরকে বোঝাতে পারছিলাম না কোথায় কী আছে। আলেসিয়া আরও বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিল। তখন পরিস্থিতি বেশ আতঙ্কজনক ছিল। বিশেষ করে ওর জন্য। এই ভয়টা ছিল যে তারা আলেসিয়াকে আঘাত করতে পারে।’
পিএসজি খেলোয়াড়দের বাড়িতে চুরি ও ডাকাতির ঘটনা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এর আগে নেইমার, আনহেল দি মারিয়া, মার্কিনিওস, থিয়াগো সিলভা, মাউরো ইকার্দি, দানি আলভেস, প্রেসনেল কিম্পেম্বে, এরিক ম্যাক্সিম চুপো-মোটিংরা প্যারিসের বাড়িতে ডাকাতির শিকার হয়েছেন।
ইতালিকে ২০২০ ইউরো জেতাতে বড় অবদান রেখেছিলেন দোন্নারুম্মা। পেয়েছিলেন আসরের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি। এরপরই তাঁকে এসি মিলান থেকে নিয়ে আসে পিএসজি। ক্লাবটির সঙ্গে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত চুক্তি আছে তাঁর। যদিও এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদলেই ২৪ বছর বয়সী গোলরক্ষকের প্যারিস ছাড়ার জোর গুঞ্জন চলছে।