রিয়ালের আনচেলত্তি-ভিনিসিয়ুস জুটিকে কি ব্রাজিলেও দেখা যাবে
রিয়ালের আনচেলত্তি-ভিনিসিয়ুস জুটিকে কি ব্রাজিলেও দেখা যাবে

রিয়ালের ভিনি এবার ব্রাজিলেও—কারণ কি আনচেলত্তি

ব্রাজিলের জার্সি পরার পর ভিনিসিয়ুস জুনিয়র কেন পাল্টে যান—এমন প্রশ্ন উঠেছে অনেকবার। রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ক্লাবের জার্সিতে ছন্দে, কিন্তু জাতীয় দলে এলেই কেমন যেন মিইয়ে যেতেন। ক্লাবে টানা ম্যাচের পর ম্যাচ গোল করে গেলেও ব্রাজিলের হয়ে খেলার সময় টানা গোলখরায় ভুগতেন। ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য ভালো খবর হচ্ছে, সেই দিন হয়তো এবার ফুরোতে যাচ্ছে।

জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ তিন ম্যাচে দুটি গোল আর একটি অ্যাসিস্ট করেছেন ভিনিসিয়ুস। আর এই পারফরম্যান্স করেছেন কার্লো আনচেলত্তির অধীন; যার সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদে ধারাবাহিক পারফর্ম করে গেছেন তিনি। ব্রাজিল ফুটবলে তাই নতুন আলোচনা—আনচেলত্তির ছোঁয়াতেই কি ব্রাজিলের জার্সিতে নতুন রূপে দেখা দিতে চলেছেন ভিনি?

মোটের ওপর আনচেলত্তি ও ভিনিসিয়ুস সফল জুটির দুর্দান্ত এক উদাহরণ। আনচেলত্তি ডাগআউটে থাকলেই ভিনিসিয়ুস যেন ভিন্ন এক খেলোয়াড়। এই দুজনের পরিসংখ্যানেই রয়েছে সেই প্রমাণ। শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের ৫-০ ব্যবধানের জয়ে এক গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেছেন ভিনিসিয়ুস। এর ফলে আনচেলত্তির অধীন ভিনিসিয়ুসের গোলে অবদান ২০১ ম্যাচে ১৫২টি; যার মধ্যে গোল ৯২টি, অ্যাসিস্ট ৬০টি।

গড়ে প্রতি ম্যাচে ০.৭৫ গোলে অবদান—এই সংখ্যা নিশ্চিতভাবে ব্রাজিল সমর্থকদের আশাবাদী করে তোলার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যাশা থাকবে, আনচেলত্তির ছোঁয়ায় রিয়ালের পর ভিনিসিয়ুস এবার ব্রাজিলের জার্সিতেও বদলে যাবেন। সেটা যে অসম্ভব কিছু নয়, দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে

ভিনিসিয়ুস ও আনচেলত্তি যখন ব্রাজিলের

গোল ও সহায়তা ছাড়াও ম্যাচজুড়ে অসাধারণ ফুটবল খেলেছেন ভিনি। গতি, পাসিং, ড্রিবলিং কিংবা সতীর্থদের সঙ্গে সমন্বয়—সবকিছুতেই তিনি ছিলেন অবনদ্য। এমনকি মাঝেমধ্যে ভিনির পায়ে দেখা গেছে চিরায়ত ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের ছন্দও। এরপরও এক ম্যাচের পারফরম্যান্স দিয়ে চূড়ান্ত মন্তব্য করা কঠিন। কিন্তু সকালের সূর্যটা যে ঝলমলে দিনের বার্তা দিয়েছে, তা বলাই যায়।

আনচেলত্তির অধীন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র:মোট ম্যাচ: ২০১গোল: ৯২অ্যাসিস্ট: ৬০

এর আগে ভিনিসিয়ুস জুনে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ব্রাজিলের জয়সূচক গোলটি করেছিলেন। ইতালিয়ান কোচের অধীন এখন পর্যন্ত তিনি জাতীয় দলের হয়ে তিন ম্যাচে অবদান ৩ গোলের। অথচ ব্রাজিলের হয়ে এর আগের ৩৯ ম্যাচে ভিনিসিয়ুসের গোল ও অ্যাসিস্ট মাত্র ১২টি (৬টি করে)। আনচেলত্তির গড়া ৪-২-৪ ফরমেশনে ভিনিসিয়ুস এখন গোলের অনেক কাছাকাছি থাকার সুযোগ পাচ্ছেন, যা সরসারি প্রভাবিত করছে ভিনিসিয়ুসের পারফরম্যান্সকেও।

দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়ার পর ভিনিসিয়ুসও নিজের ক্যারিয়ারে আনচেলত্তির গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছেন, ‘তিনি (আনচেলত্তি) সব সময়ই আমার সবচেয়ে প্রিয় কোচ, যিনি আমাকে সবচেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর অধীন আমি সবচেয়ে ভালো খেলেছি। আশা করি, এই ধারা বজায় রেখে দুর্দান্ত এক বিশ্বকাপ খেলতে পারব।’

ভিনিসিয়ুস এখন আনচেলত্তির অধীন সর্বাধিক গোল করা খেলোয়াড়দের তালিকায় ষষ্ঠ। যেখানে তাঁর ওপরে আছেন ফিলিপ্পো ইনজাগি (১৬১), করিম বেনজেমা (১২১), ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো (১১২), আন্দ্রে শেভচেঙ্কো (১০৩) ও কাকা (৯৫)।