
একটা গোল হবে ভাই—রদ্রিগো চাইলে কিলিয়ান এমবাপ্পের কাছে এই আকুতি জানাতে পারেন। রাজার রত্নভান্ডার থেকে এক টুকরা সোনা দিলে যেমন সম্পদ কমে না, একইভাবে এমবাপ্পে যদি এখন রদ্রিগোকে দু–একটি গোল দিয়েও দেন, তাতে কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি হয়তো হবে না। কিন্তু ফুটবলে এই নিয়ম নেই। তাই চাইলেও এমবাপ্পের পক্ষে রদ্রিগোকে গোল দেওয়া সম্ভব নয়। ব্রাজিলিয়ান এই তারকাকে দুর্দশা মেনে নিয়ে তাই আপাতত গোলের অপেক্ষাতেই থাকতে হচ্ছে।
রদ্রিগোর গোলখরার ৯ মাস পূর্ণ হলো আজ। মার্চের ৪ তারিখ চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় সর্বশেষ আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে গোল করেছিলেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। সেটি ছিল রিয়ালের জার্সিতে তাঁর ৬৮তম গোল।
এর পর থেকে গোলের জন্য প্রহর গুনে চলেছেন তিনি। কিন্তু সোনার হরিণ হয়ে ওঠা গোল যেন ধরাই দিচ্ছে না। সব মিলিয়ে রদ্রিগো গোলহীন আছেন ৩১ ম্যাচ ও ১ হাজার ৩৫১ মিনিট। যেখানে তাঁর ৩১ ম্যাচে গোলহীন থাকার ঘটনা ভুলে যাওয়ার মতো একটি রেকর্ডও বটে, রিয়াল মাদ্রিদের ফরোয়ার্ড হিসেবে টানা সবচেয়ে বেশি ম্যাচে গোলহীন থাকার রেকর্ড।
এর আগে জিরোনার বিপক্ষে গোলশূন্য থেকে রদ্রিগো স্পর্শ করেছিলেন মারিয়ানো দিয়াসের ৩০ ম্যাচে গোলহীন থাকার রেকর্ডকে। গতকাল রাতে বিলবাওয়ের বিপক্ষে সেটি ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
ম্যাচের রেকর্ড হলেও মিনিটের রেকর্ডটা এখনো ভাঙা হয়নি রদ্রিগোর। এ তালিকায় সবার ওপরে আছেন রাফা মারানিয়ন, যিনি রেকর্ড ১ হাজার ৪১৬ মিনিট গোলহীন ছিলেন। দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে বিব্রতকর এই রেকর্ডও রদ্রিগোর দখলে চলে আসবে। এদিকে গোলখরার জেরে রদ্রিগোর রিয়াল ছাড়ার গুঞ্জনও এখন বেশ তীব্র হচ্ছে।
রদ্রিগোর এমন হতশ্রী পারফরম্যান্সের দায়টা প্রথমত তাঁরই। সুযোগ পেলেও ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। কিন্তু এরপর যাঁকে এর দায় দেওয়া যায়, তিনি এমবাপ্পে। রিয়ালে গত কয়েক মাসে গোল করায় রীতিমতো একাধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছেন এই ফরোয়ার্ড। একের পর এক ম্যাচে গোল করেই চলেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। রদ্রিগো গোল না পাওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি আলোচনায়। কিন্তু এমবাপ্পের সঙ্গে তুলনায় অন্যদের অবস্থাও খুব একটা সুবিধার নয়।
এ বছরের মার্চে রদ্রিগোর করা সর্বশেষ গোলের পর রিয়াল সব মিলিয়ে গোল করেছে ৮৬টি। যেখানে কিলিয়ান এমবাপ্পে একাই করেছেন ৪১ গোল। অর্থাৎ এমবাপ্পে রিয়ালের মোট গোলের প্রায় ৪৭.৭ শতাংশ করেছেন। রদ্রিগোর সেই গোলের পর এমবাপ্পে ছাড়াও আরও ১৬ জন ফুটবলার স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু গোলসংখ্যা হিসাবে তাঁরা কেউ ফরাসি তারকার ধারেকাছেও নেই। দ্বিতীয় স্থানে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোল মাত্র ৯টি, যা এমবাপ্পের চেয়ে ৩২ গোল কম।
এরপর তিনে থাকা জুড বেলিংহামের গোল ৮টি, আরদা গুলের করেছেন ৬ গোল। সব মিলিয়ে রিয়ালের জার্সিতে গোল করায় এমবাপ্পে যেন নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে রদ্রিগোর জন্য দৃষ্টিকটু ব্যাপার হচ্ছে এর মধ্যে যে ১৭ জন গোল করেছেন, সেই তালিকায় আন্তোনিও রুডিগার ও এদের মিলিতাও আছেন। অথচ ফরোয়ার্ড হয়েও তিনি গোলের খাতায় নাম লেখাতে পারেননি। এখন দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে পারলেই রদ্রিগোর জন্য মঙ্গল। নয়তো আরও একটি বিব্রতকর রেকর্ড জুটতে পারে তাঁর।