চোট নেইমারের জন্য নতুন নয়। ব্যাপারটা এতই বেশি হয়ে গেছে যে তাঁর চোট নিয়ে কেউ কেউ নির্মম রসিকতাও করেন। চোটে থাকা নেইমার নাকি মাঝেমধ্যে খেলতে নামেন। অবশ্য পরিস্থিতি যত দূর গড়িয়েছে, তাতে নিন্দুকদের আর কী দোষ! চোট তো ব্রাজিলিয়ান তারকার নিত্যসঙ্গী। এবার আবারও যেমন নতুন চোটে পড়েছেন নেইমার।
ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো স্পোর্ত’ জানিয়েছে, বাঁ হাঁটুতে মেনিসকাস চোটে পড়েছেন সান্তোস ফরোয়ার্ড। চিকিৎসার কারণে ব্রাজিলের এ বছর আর মাঠে না নামার সম্ভাবনাই বেশি। ব্রাজিলিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সান্তোসের সামনে আছে আরও তিনটি ম্যাচ।
বাংলাদেশ সময় ২০ নভেম্বর সকালে ব্রাজিলিয়ান সিরি আ–তে মিরাসলের বিপক্ষে সান্তোসের ১–১ ড্র ম্যাচে বাঁ হাঁটুতে অস্বস্তি অনুভব করেন নেইমার। এ কারণেই গতকাল ইন্টারন্যাসিওনালের বিপক্ষে ১–১ ড্র ম্যাচে তাঁকে বিশ্রামে রাখা হয়। মঙ্গলবার সাও পাওলোয় পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর তাঁর বাঁ হাঁটুর চোট নিশ্চিত হয়। আরেক মিডিয়া ‘ও গ্লোবো’ বলছে—চলতি মৌসুমে এ নিয়ে চারবার চোট পেলেন নেইমার।
চোট পাওয়ার আগে সান্তোসের হয়ে টানা তিন ম্যাচ খেলেছেন তিনি—পালমেইরাসের বিপক্ষে জয়, ফ্ল্যামেঙ্গোর বিপক্ষে হার আর মিরাসলের বিপক্ষে ড্র। মিরাসলের বিপক্ষে গোলও করেছিলেন। ৪ আগস্টের পর প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে সেটাই ছিল তাঁর প্রথম গোল। তবে গোল করার আনন্দ বেশিক্ষণ টেকেনি। তাঁর ফাউল থেকে দেওয়া পেনাল্টিতেই সান্তোস গোল খেয়ে ফেলে। সমতাও করে মিরাসল।
ব্রাজিলের হয়ে নেইমার সর্বশেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের অক্টোবরে। উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বাঁ হাঁটুর এসিএল ছিঁড়ে যায়। এরপর আর আগের ফর্মে ফেরা হয়নি। এ বছরই তাঁর চারটি চোট ধরা পড়েছে।
মার্চ: সান্তোসের হয়ে খেলতে গিয়ে বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে ব্যথা পান। জায়গাটা ফুলে ওঠে। ফলে পউলিস্তা চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে খেলতে পারেননি।
এপ্রিল: আতলেতিকো মিনেইরোর বিপক্ষে ম্যাচে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন। পরে জানা যায়, বাঁ উরুর সেমিমেমব্রানোসাস পেশিতে চোট।
সেপ্টেম্বর: ডান উরুর রেক্টাস ফেমোরিস পেশিতে গ্রেড–টু পর্যায়ের চোট। পেশি ছিঁড়ে যায়।
নভেম্বর: বাঁ হাঁটুতে মেনিসকাস চোট।
নতুন এই চোট নেইমারের জাতীয় দলে ফেরার পথ আরও কঠিন করে দিল। ২০২৬ বিশ্বকাপে তিনি থাকতে পারবেন কি না, সেটা এখনই বলা কঠিন। আগামী মার্চে ব্রাজিল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে। এর পরই বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করবে তারা।
অর্থাৎ নেইমারের সামনে সময় খুবই কম। সান্তোসের হয়ে আগামী মৌসুমে দারুণ কিছু দেখাতে পারলে তবেই খুলবে জাতীয় দলে ফেরার দরজা। আর যদি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন—তাহলে ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি হয়তো আবারও ভাববেন তাঁকে বিশ্বকাপ পরিকল্পনায় রাখার কথা।