চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল পর্যন্ত অসাধারণ ফুটবল খেলেছেন লামিনে ইয়ামাল। গোল ও অ্যাসিস্টে বার্সেলোনাকে সহায়তা করার পাশাপাশি সৃষ্টিশীল ফুটবলে আনন্দও দিয়েছেন দর্শককে। ধারণা করা হচ্ছিল, বার্সেলোনা চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতলে বা ফাইনালে খেললে সেরা খেলোয়াড় কিংবা সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার তাঁর হাতেই উঠবে।
কিন্তু সেমিফাইনালে ইন্টার মিলানের কাছে বার্সার হারে কোনোটাই জুটল না ইয়ামালের। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন পিএসজির দেজিরে দুয়ে এবং সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন দুয়ের সতীর্থ উসমান দেম্বেলে। ব্যক্তিগত সেরার এই দুই স্বীকৃতি হাতছাড়া করলেও চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা একাদশে জায়গা হয়েছে ইয়ামালের। শনিবার ২০২৪–২৫ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের পরদিন এই পুরস্কার ও সেরা একাদশ ঘোষণা করেছে উয়েফা।
বার্সার হয়ে অসাধারণ ফুটবল খেলা ইয়ামাল এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে ১৩ ম্যাচে গোল করেছেন ৫টি, সঙ্গে ছিল ৪টি অ্যাসিস্ট। শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে গোল পেয়েছেন ১৭ বছর বয়সী এই উইঙ্গার।
কিন্তু তাঁর এই পারফরম্যান্স বার্সাকে ফাইনালে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট হয়নি। সেমিতে ইন্টারের কাছে দুই লেগ মিলিয়ে ৭–৬ ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয় বার্সা। দল ফাইনালে যেতে না পারাতেই ব্যক্তিগত পর্যায়ে পিছিয়ে পড়েছেন ইয়ামাল।
অন্যদিকে ১৯ বছরস বয়সী দুয়েও ইয়ামালের সমান ৫ গোল ও ৪টি অ্যাসিস্ট করেছেন। ইয়ামালের চেয়ে ম্যাচের হিসাবে ৩ ম্যাচ বেশি খেললেও মিনিটের হিসাবে আবার কম সময় মাঠে ছিলেন। ইয়ামাল মাঠে ছিলেন ১ হাজার ১০৩ মিনিট আর দুয়ে মাঠে ছিলেন ৭৪০ মিনিট।
তবে দুয়ে ইয়ামালকে পেছনে ফেলেছেন ফাইনালের পারফরম্যান্সে। শনিবার রাতের ফাইনালে ৬৬ মিনিট মাঠে থেকে ২ গোল করার পাশাপাশি ১টি অ্যাসিস্টও করেছেন দুয়ে। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্স তাঁর হাতে সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি জায়গা করে দিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগের মৌসুমসেরা একাদশেও।
পিএসজি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর দেম্বেলের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পাওয়া একরকম নিশ্চিতই ছিল। এ ক্ষেত্রে তাঁর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বার্সার রাফিনিয়া। কিন্তু শিরোপা জিতে রাফিনিয়াকে লড়াই থেকে ছিটকে দিয়েছেন দেম্বেলে।
চলতি মৌসুমে ইউরোপ–সেরার মঞ্চে ১৫ ম্যাচে ৮ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট করেছেন এই ফরাসি তারকা। শুধু গোল করা কিংবা গোলে সহায়তায় নয়, পিএসজিকে চ্যাম্পিয়ন করানোর ক্ষেত্রে দলের খেলাতেও দারুণ প্রভাবও রেখেছেন তিনি।
বিপরীতে নিজের ক্যারিয়ার সেরা মৌসুম পার করা রাফিনিয়া ১৪ ম্যাচে ১৩ গোলের সঙ্গে করেছেন ৯টি অ্যাসিস্টও। তবে দল সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় পিছিয়ে পড়েছেন দেম্বেলের চেয়ে।
তবে দুজনেরই জায়গা হয়েছে উয়েফা ঘোষিত সেরা একাদশে। চ্যাম্পিয়ন পিএসজি থেকে জায়গা পেয়েছেন সর্বোচ্চ ৭ জন। রানার্সআপ ইন্টার মিলান ও সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়া আর্সেনাল থেকে আছেন ১ জন করে। আরেক সেমিফাইনালিস্ট বার্সেলোনার আছেন দুজন।
জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা (পিএসজি), আলেসান্দ্রো বাস্তোনি (ইন্টার মিলান), মারকিনিওস (পিএসজি), আশরাফ হাকিমি (পিএসজি), নুনো মেন্দেস (পিএসজি), ডেকলান রাইস (আর্সেনাল), ভিতিনিয়া (পিএসজি), রাফিনিয়া (বার্সেলোনা), লামিনে ইয়ামাল (বার্সেলোনা), দেজিরে দুয়ে (পিএসজি), উসমান দেম্বেলে (পিএসজি)।