আনচেলত্তির নতুন ঠিকানা ব্রাজিল
আনচেলত্তির নতুন ঠিকানা ব্রাজিল

যে তিন কারণে ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ জেতাতে পারেন আনচেলত্তি

দীর্ঘ অপেক্ষা ও নাটকীয়তা শেষে কার্লো আনচেলত্তিকে প্রধান কোচ হিসেবে পেয়েছে ব্রাজিল। ২৬ মে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করে ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য দল গোছানো শুরু করবেন ইতালির এই কিংবদন্তি কোচ।

তবে কাজটা আনচেলত্তির জন্য মোটেও সহজ হবে না। টানা ব্যর্থতায় সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিলের পারফরম্যান্স রীতিমতো তলানিতে পৌঁছেছে। সেই তলানি থেকেই উঠে এসে সাফল্যে ফিরতেই মূলত আনচেলত্তির শরণাপন্ন হয়েছে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। ব্রাজিলের জন্য সাফল্য বলতে শুধু বিশ্বকাপ জেতাকেই বোঝায়। সব মিলিয়ে আনচেলত্তির জন্য চ্যালেঞ্জটা এখন বিশাল।

ভিনিসিয়ুস–রদ্রিগোদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলা আনচেলত্তি ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের অন্যতম সফল কোচ। সেই সাফল্যের ওপর আস্থা রেখেই মূলত তাঁকে বেছে নিয়েছে সিবিএফ। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সাফল্য কি আনচেলত্তি ব্রাজিলের ডাগআউটে দাঁড়িয়ে এনে দিতে পারবেন? বার্তা সংস্থা এএফপি এমন তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে, যা আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের কোচ হিসেবেও বড় সাফল্য এনে দিতে পারে।

শান্ত স্বভাব

‘কোয়াইট লিডারশিপ’ বইয়ের লেখক আনচেলত্তি শান্ত স্বভাবের মানুষ হিসেবেই পরিচিত। ফুটবল দুনিয়ার পাহাড়সম চাপ ঠান্ডা মাথায় সামলানোর অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তুমুল চাপের মুখেও নিজেকে স্থির রাখতে পারেন। গাম চিবুতে চিবুতে চোখের ইশারায় বদলে দিতে পারেন খেলার গতিপথও। এমন চাপ নিয়েই রিয়াল মাদ্রিদ, চেলসি, বায়ার্ন মিউনিখ, এসি মিলান ও পিএসজির মতো বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর হয়ে সাফল্য পেয়েছেন আনচেলত্তি। ব্রাজিলের ডাগআউটে চাপটা আরও বেশি থাকবে। আনচেলত্তির শান্ত স্বভাব সেই চাপ সামলানোর কাজটা নিশ্চিতভাবেই অনেক সহজ করে দেবে।

রিয়াল মাদ্রিদে আর অল্প কিছুদিন আছেন আনচেলত্তি

দৃঢ় সম্পর্ক

সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিল দল সাফল্য না পেলেও দলটিতে তারকার অভাব নেই। নেইমার, ভিনিসিয়ুস, রদ্রিগো, রাফিনিয়া কিংবা আলিসনরা বিশ্বমানের ফুটবলার। এখন এই খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনা এবং তাঁদেরকে একটা দল হিসেবে খেলতে উদ্বুদ্ধ করতে আনচেলত্তির মতো একজন কোচকেই প্রয়োজন। আনচেলত্তি নিজের ব্যক্তিত্বের মাধ্যমে সহজেই সবাইকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখেন। খেলোয়াড়দের সঙ্গে তাঁর রসায়নও বেশ চমৎকার। পাশাপাশি দলের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক দৃঢ় রাখতেও ভূমিকা রাখতে পারেন, যা ব্রাজিলের তারকাবহুল দলটিকে ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে সহায়তা করবে।

ব্যক্তিগত চ্যালেঞ্জ

আনচেলত্তি ইতিহাসের একমাত্র কোচ, যিনি ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ ঘরোয়া লিগের প্রতিটিতে শিরোপা জিতেছেন। এ ছাড়া খেলোয়াড় হিসেবে ২টি এবং কোচ হিসেবে জিতেছেন সর্বোচ্চ ৫টি চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি। এখন একটি বিশ্বকাপ ট্রফি আনচেলত্তির ট্রফি ক্যাবিনেটকে পরিপূর্ণ করবে। সেই চ্যালেঞ্জ নিতেই আনচেলত্তির ব্রাজিলকে ‘হ্যাঁ’ বলা। আর কঠিন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতা তো তাঁর আছেই। ২০১৯ সালে এভারটনের দায়িত্ব নেওয়ার পর কোচ হিসেবে তাঁর শেষ দেখে ফেলেছিল অনেকে। কিন্তু সেখান থেকে ঘুরিয়ে দাঁড়িয়ে রিয়ালকে সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। এবার ব্রাজিলের হয়েও তেমন কিছু করার চ্যালেঞ্জ আনচেলত্তির।