Thank you for trying Sticky AMP!!

বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে লেভার পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দেন ওচোয়া

‘হোমওয়ার্ক’ করে লেভার পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন ওচোয়া

বাবরি চুল দেখে তাঁকে জগৎ-সংসারের উদাসীন কোনো কবি বলে মনে করলে ভুল হবে। মেক্সিকান গোলকিপার গিলের্মো ওচোয়া আসলে ‘চীনের প্রাচীর’। ভয়, শঙ্কা, সিদ্ধান্তহীনতা এমন কোনো শব্দ তাঁর অভিধানে নেই। বিশ্বকাপে ওচোয়া যেভাবে মেক্সিকান গোলপোস্টকে আগলে রাখেন, তাতে তাঁকে চীনের প্রাচীর বললে মোটেও অত্যুক্তি হয় না।

ওচোয়া আর পাঁচজন ফুটবলারের মতো নন, যাঁদের নিয়ে সারা বছর আলোচনা হয়। এই গোলকিপার আলোচনায় আসেন প্রতি চার বছর বাদে, বিশ্বকাপে। যেন সেরাটা দেওয়ার জন্য কেবল বিশ্বমঞ্চই পছন্দ তাঁর। গতকাল যেমন পোল্যান্ডের বিপক্ষে সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কির পেনাল্টি রুখে দিলেন। যেভাবে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে লেভানডফস্কির শট ঠেকালেন, তা দেখে মনে হতে পারে, তিনি আগে থেকেই জানতেন, লেভা কোন দিকে শট নেবেন!

পেনাল্টি মিসের হতাশায় মাথায় হাত লেভার

ওচোয়া আগে থেকে হয়তো জানতেন না, তবে পোলিশ স্ট্রাইকারের পেনাল্টি নেওয়া নিয়ে তাঁর ‘হোমওয়ার্ক’ করা ছিল। ম্যাচ শেষে ওচোয়া জানিয়েছেন নিজেই, ‘ভিডিও দেখে লেভানডফস্কির পেনাল্টি ঠেকানো কঠিন। ১৫-২০টি ভিডিও দেখার পরও বোঝা যায় না, সে কোন দিকে শট নিবে। তাই তার পেনাল্টি ঠেকাতে পেরে ভালো লাগছে।’

লেভাকে এভাবেই আটকে রেখেছিলেন মেক্সিকান ডিফেন্ডাররা

১৯৬৬ সালের পর এই প্রথম কোনো মেক্সিকান গোলকিপার বিশ্বকাপে ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেনাল্টি ঠেকালেন।

Also Read: মেক্সিকো–পোল্যান্ড ড্রয়ে আর্জেন্টিনার বিপদ কি বাড়ল

ওচোয়া প্রথমবার আলোচনায় আসেন ২০১৪ বিশ্বকাপে। সে বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে ব্রাজিলকে জিততে দেননি। রাশিয়া বিশ্বকাপে তো জার্মানিকে হারিয়েই দিয়েছিলেন এই গোলকিপার। বড় মঞ্চে জ্বলে ওঠার এই অতীত রেকর্ডের কারণেই পেনাল্টির সময় ওচোয়ার পক্ষেই বাজি ধরেছিলেন ওচোয়ার সতীর্থরা। ‘আমরা জানি, “মেমো” (ডাকনাম) বড় মঞ্চে কেমন করে। সে আগের বিশ্বকাপগুলোয় দেখিয়েছে। আবারও করে দেখাল’—ম্যাচ শেষে বলেছেন মেক্সিকো ফরোয়ার্ড হেনরি মার্তিন।

২০০৬ ও ২০১০ বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন ওচোয়া। প্রথম দুই বিশ্বকাপে একাদশে জায়গা না পাওয়া ফুটবলার থেকে মেক্সিকোর বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা পারফরমার হওয়া সম্ভব হয়েছে শুধুই ওচোয়ার ত্যাগ আর পরিশ্রমের কারণে।

এমনটা বলছেন ওচোয়ার আরেক সতীর্থ অ্যালেক্সিস ভেগা। পোল্যান্ডের বিপক্ষে কাল গোলশূন্য ড্রয়ের পর ভেগা বলেছেন, ‘খুব সহজেই বলা যায়, ওচোয়া পাঁচটি বিশ্বকাপ দলে ছিল। এর পেছনে আছে কঠোর পরিশ্রম। এর প্রমাণ অবশ্য বড় মুহূর্তগুলোয় দেখা যায়। এই ম্যাচে পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিল! সে এমন একজন গোলকিপার, যে পুরো দলকে আত্মবিশ্বাস দেয়।’

ম্যাচ শেষে লেভার সঙ্গে আলিঙ্গন করছেন ওচোয়া

সতীর্থদের কাছ থেকে এত প্রশংসা পেয়ে ওচোয়া নিজেও হয়তো কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। তাই টুইটে স্মরণ করেছেন নিজের কঠিন সময়কে, ‘যে মানুষগুলো সব সময় আমার পাশে ছিল, আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছে, তাদেরকে ধন্যবাদ সব সময় পাশে থাকার জন্য। এমন একটা দিনের জন্য সবকিছুই ত্যাগ করা যায়।’