নেইমার ও তাঁর ব্যাটমোবাইল কার
নেইমার ও তাঁর ব্যাটমোবাইল কার

ব্যাটম্যানের গাড়ি কিনলেন নেইমার, দাম ‘মাত্র’ ১৮ কোটি

লিমিটেড এডিশন গাড়িটির আসল দাম ছিল প্রায় ৩০ লাখ ডলার! তবে নেইমার কিনেছেন বেশ সস্তায়, মাত্র ১৫ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৮ কোটি) খরচ করে!

নেইমার মানেই যেন চমক, সেটা ফুটবল মাঠেই হোক বা মাঠের বাইরে! তা এবার নতুন কী করলেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার? গাড়ি কিনেছেন একটা। তা তো কিনতেই পারেন। কিন্তু এটা যেনতেন গাড়ি নয়, নেইমার কিনেছেন ‘ব্যাটম্যান' সিনেমার সেই বিখ্যাত গাড়ি—ব্যাটমোবাইল!

স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কার খবর, গাড়িটি আসলে ওয়ার্নার ব্রাদার্সের বানানো মাত্র ১০টি বিশেষ সংস্করণের ব্যাটমোবাইলের মধ্যে একটি। গাড়িটির ডিজাইন নেওয়া হয়েছে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ডার্ক নাইট’ ট্রিলজি থেকে, যেখানে ক্রিশ্চিয়ান বেল ছিলেন ব্যাটম্যান। ব্যাটম্যান চরিত্রের ৮৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এগুলো তৈরি করা হয়েছিল। লিমিটেড এডিশন গাড়িটির আসল দাম ছিল প্রায় ৩০ লাখ ডলার! তবে নেইমার কিনেছেন বেশ সস্তায়, মাত্র ১৫ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৮ কোটি) খরচ করে!

ব্যাটমোবাইল টাম্বলার গাড়িগুলো লম্বায় ৪.৬৫ মিটার আর চওড়ায় ২.৮ মিটার! স্টিলের মজবুত ফ্রেমে তৈরি এই গাড়ি মোড়ানো কার্বন ফাইবার আর কেভলার দিয়ে। ভেতরে ৬.২ লিটার ভি৮ ইঞ্জিন, যাতে আছে ৫২৫ হর্সপাওয়ারের শক্তি। ব্যাটমোবাইল টাম্বলারকে যা সত্যিই অন্য সবার থেকে আলাদা করে তুলেছে, তা হলো এর অদ্ভুতুড়ে সব ফিচার। সিনেমায় ব্যবহৃত গাড়ির মতোই এটি ‘ধোঁয়া বোমা’ ছুড়তে পারে, সঙ্গে আছে একটি রেপ্লিকা জেট ইঞ্জিন, একটি অকার্যকর মেশিনগান, নিজের মতো নড়াচড়া করতে পারা স্পয়লার এবং ব্যাটম্যান ও রবিনের ককপিটের আদলে তৈরি দুই আসনের বসার জায়গা!

ব্যাটম্যান চরিত্রটা খুবই পছন্দ নেইমারের

নেইমারের ব্যাটম্যান–প্রেম নতুন কিছু নয়। তাঁর পিঠে ব্যাটম্যানের লোগো ট্যাটু করা। ২০২২ সালে `দ্য ব্যাটম্যান' সিনেমার প্রিমিয়ারে গিয়েছিলেন, বসেছিলেন রবার্ট প্যাটিনসনের ব্যাটমোবাইলেও। এবার সেই গাড়িই কিনে ফেললেন। এ যেন ভক্তের উন্মাদনা থেকে এক ধাপ এগিয়ে স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখা!

এত শখ করে এত টাকা খরচ করে গাড়িটা কিনলেও নেইমার এই ব্যাটমোবাইল টাম্বলার নিয়ে রাস্তায় বের হতে পারবেন না! ইউরোপীয় সড়ক বিধিমালা অনুযায়ী, এই গাড়ি রাস্তায় চালানো যাবে না, চালানো নিষেধ ব্রাজিলেও। অর্থাৎ এটি শুধু তার বিলাসবহুল গ্যারেজের শোভা হয়েই থাকবে। যেখানে আগে থেকেই আছে নেইমারের আরও কয়েকটি সুপারকার—অডি আর৮ স্পাইডার ভি১০ প্লাস, ফেরারি পুরোসাঁগে, বেন্টলি কন্টিনেন্টাল জিটি, অ্যাস্টন মার্টিন ডিবিএক্স ও ল্যাম্বরগিনি হুরাকান।

নেইমারের যত গাড়ি

সেলিব্রিটি নেট ওয়ার্থের তথ্যানুযায়ী, নেইমারের মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি ডলার। পিএসজিতে থাকাকালীন প্রতি মৌসুমে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার বেতন পেতেন, সঙ্গে বোনাস-এন্ডোর্সমেন্ট মিলিয়ে আরও ২-৪ কোটি ডলার আয় হতো। সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে সই করেছিলেন বছরে ১৬ কোটি ৩৭ লাখ ডলার বেতনের চুক্তি, যদিও সেই মেয়াদ পুরো হওয়ার আগেই ক্লাব ছেড়েছেন, তবে আল হিলাল ছাড়ার সময় পেয়েছেন ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বেশি।

পিউমা, প্যানাসনিক, রেড বুল ও বিটসের মতো বড় বড় ব্র্যান্ডের সঙ্গে পার্টনারশিপ থেকে নেইমারের অ্যাকাউন্টে ঢোকে আরও ৩-৪ কোটি ডলার। এ ছাড়া দুবাইতে তার ৫ কোটি ডলারের পেন্টহাউস, যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে বিশাল সম্পত্তি আর ব্রাজিলে নিজের একটা ব্যক্তিগত দ্বীপও আছে।

শরীরে ব্যাটম্যানের ট্যাট্টু, গ্যারেজে ব্যাটমোবাইল আর অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি ডলার—নেইমার যেন বাস্তবের সুপারহিরো!