ক্যারিয়ারের ৪৭তম শিরোপা জিতে মেসি, ‘এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম’

এ কারণেই লিওনেল মেসি এমএলএসে গিয়েছিলেন।
সব জাঁকজমক, হইহুল্লোড়, মার্কেটিং আর বিশাল টাকার হাতছানি—সব এক পাশে সরিয়ে রাখুন। আসল লক্ষ্য তো ছিল এমএলএস কাপ জেতা। ট্রফি মাথার ওপর তোলা। আতশবাজির ঝলকানি আর কনফেত্তি বৃষ্টির মধ্যে মঞ্চে উঠে রুপালি ট্রফিটা মাথার ওপর তুলে ধরার জন্যই তো এত কিছু!

সেই স্বপ্নও পূরণ হলো মেসির, ইন্টার মায়ামির। চেজ স্টেডিয়ামে আজ আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির মাথায় উঠল নতুন মুকুট। এমএলএস কাপের ফাইনালে ইন্টার মায়ামি ৩–১ গোলে হারিয়েছে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসকে। মেসি হয়েছেন ম্যাচসেরা—দুটি অ্যাসিস্ট আর প্রথম গোলের নেপথ্য কারিগর!

২০২৩ সালের জুলাইয়ে এমএলএসে যোগ দেন মেসি। প্রথম মৌসুমে লিগস কাপ জিতলেও প্লে-অফে পৌঁছাতে পারেননি। ২০২৪ সালে রেকর্ড ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে সাপোর্টার্স শিল্ড জিতলেও শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে যায়। অবশেষে এবার সব আক্ষেপ ঘুচল। মায়ামি হলো লিগ চ্যাম্পিয়ন, আর মেসির ঝুলিতে যোগ হলো ক্লাব ও দেশের হয়ে বিশ্ব রেকর্ড ৪৭তম ট্রফি।

স্ত্রী ও পুত্রদের সঙ্গে নিয়ে মেসির আরেকটি শিরোপা উদযাপন

ম্যাচ শেষে অ্যাপল টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসির কণ্ঠে তৃপ্তি, ‘তিন বছর আগে আমি এমএলএসে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজ আমরা চ্যাম্পিয়ন। গত বছর লিগ থেকে দ্রুত ছিটকে গিয়েছিলাম। তাই এবার এমএলএস জেতাটাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। দলটা অসাধারণ পরিশ্রম করেছে। দীর্ঘ মৌসুমে অনেক ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু আমরা প্রস্তুত ছিলাম। এই মুহূর্তটার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।’

৩৮ বছর বয়সেও দুর্দান্ত খেলেছেন মেসি। মৌসুমে ২৯ গোল ও ১৯ অ্যাসিস্ট, প্লে-অফে মোট ১৫ গোলে অবদান—এমএলএস ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ। মায়ামি কোচ ও হাভিয়ের মাচেরানো খুব স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত তাঁর বন্ধুকে নিয়ে, ‘পুরো মৌসুমেই সে ছিল অসাধারণ। শুধু সংখ্যায় নয়, দলের প্রতি দায়বদ্ধতায়ও। শেষ দুই, তিন বা চার ম্যাচে ও যেভাবে প্রেসিং ফুটবল খেলেছে, তা অবিশ্বাস্য। এটা প্রমাণ করে, এ জয়টা ওর কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’

ট্রফি জিতেই অবসর নিলেন মেসির দীর্ঘদিনের দুই বন্ধু ও মায়ামি সতীর্থ জর্দি আলবা ও সের্হিও বুসকেতস। সঙ্গে ইন্টার মায়ামির মালিক ডেভিড বেকহাম।

এ ম্যাচ দিয়েই অবসর নিলেন মেসির দীর্ঘদিনের দুই বন্ধু ও মায়ামি সতীর্থ জর্দি আলবা ও সের্হিও বুসকেতস। তাঁদের নিয়েও আবেগাপ্লুত মেসি, ‘তারা দুজনই নিজ নিজ পজিশনে ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়দের মধ্যে থাকবে। অসংখ্য শিরোপা জিতেছে। এমএলএস কাপ জিতে বিদায় নেওয়া তাদের জন্য দারুণ।’

আগামী মৌসুমে মায়ামি বদলে যাবে। খেলবে নতুন মাঠ ‘মায়ামি ফ্রিডম পার্ক’–এ। আলবা ও বুসকেতস থাকবেন দর্শকসারিতে। আক্রমণভাগের কয়েকজন খেলোয়াড়ও হয়তো থাকবেন না। তবে মেসি থাকবেন, নতুন ট্রফির খোঁজে। মাসচেরানোও বললেন, ‘এখন বিশ্রাম দরকার। নতুন করে গুছিয়ে সামনে এগোতে হবে। প্রথম লিগ শিরোপা জেতাই শেষ কথা নয়; বরং এটাই নতুন শুরু। আরও অনেক কিছু জিততে হবে।’
মেসিও নিশ্চয়ই সেটাই চান। আরও অনেক ট্রফি। এ কারণেই তো তিনি এমএলএসে গিয়েছিলেন!